বাঘারপাড়ার রায়পুর স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ এর বিরুদ্ধে অভিযোগ
নিউজ ডেস্ক : বাঘারপাড়ার রায়পুর স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুজ্জামান জামাত কলেজ পরিচালনা পরিষদের কোন সিদ্ধান্ত মানছেন না। কলেজের সাধারণ তহবিলের টাকা তসরুপের অভিযোগে কারণ দর্শাতে বলা হলেও তিনি কোনো জবাব দেননি। এরপর সুনিদিষ্ট ১১ টি অনিয়মের অভিযোগ এনে পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ১৬ জুন আরও একটি কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছেন অধ্যক্ষকে। ১১ জুন দেয়া নোটিশের জবাব কেন দিলেন না অধ্যক্ষকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তার উপযুক্ত জবাব দিতে বলা হয়েছে। গত ২০ জুন পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি বিল্লাল হোসেন স্বাক্ষরিত তাকে এ নোটিশ দেয়া হয়েছে।
অভিযোগে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২৭ ও ২৮ আগস্ট এবং ২০২০ সালে দুইদিন নৈমিত্তিক ছুটি নিয়ে অধ্যক্ষ ব্যক্তিগত কাজে ঢাকায় যান। তিনি ঢাকায় যাওয়ার যাতায়াত খরচ বাবদ ৩ হাজার ২শ’ এবং ৩ হাজার টাকা সাধারণ তহবিল থেকে উত্তোলন করেন। এসব খরচের ভাউচারে সভাপতির স্বাক্ষর করে নেন। পরে বিষয়টি জানতে পেরে অধ্যক্ষকে ৩ কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়। অধ্যক্ষ এ নোটিশের কোনো জবাব দেননি পরিচালনা পর্ষদকে। এর জবাব না দেয়ায় আবারও তিন কার্য দিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে অধ্যক্ষকে।
সুনিদিষ্ট ১১ অভিযোগে বলা হয়েছে, পরিচালনা পর্ষদ দুই দফা প্রজেক্ট কমিটি করলেও কেন ভবনের সংষ্কার করা হয়নি। ২০২০ সালের ১০ মার্চ বারান্দার গেট নির্মাণের জন্য ৯০ হাজার টাকা সাধারণ তহবিল থেকে উত্তোলন তিন মাসের মধ্যে কেন তার নির্মাণ করা হয়নি। অদ্যাবধি তা করা হয়নি। আব্দুল আলীম, ওবাইদুর রহমান ও শাহীনের কাছে পজিশন বিক্রি করে কেন তা বুঝে দেয়া হয়নি। জাফরের কাছ থেকে নেয়া ৯০ হাজার টাকা নিয়ে নতুন ভবনের কাজ শেষে কেন হিসাব দেয়া হয়নি। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে ২০১৯ সালের এপ্রিল ৭ম, ৮ম ও ১০ শ্রেণির সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১শ’৫০, ২শ’৫০ ও ৩শ’ টাকা করে ৬২ হাজার ৭শ’ ৫০ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এ টাকা আদায়ের কোনো রশিদ শিক্ষার্থীদের দেয়া হয়নি। এমন কি সে টাকা প্রতিষ্ঠানের সাধারণ তহবিলেও জমা দেয়া হয়নি কেন জানতে চাওয়া হয়েছে। বই চুরি অভিযোগে বহিস্কৃত পিয়নকে কেন কলেজে যোগদান করানো হয়েছে। ২০১৮ সালে ৪ নভেম্বর ৫ লাখ ৫৮ হাজার টাকার ফ্যান, ল্যাপটপ, মনিটরসহ বিভিন্ন প্রকার মালামাল কেনা হয়। যা রেজুলেশনের বাইরে ও ক্রয় কমিটি বাদেও নিয়ম বহির্ভূত ভাবে করা হয়েছে তার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। ২০১৮ সালের স্কুল শাখা ও কলেজ শাখার ৯ শ’৮৯ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ২০০ টাকা করে আদায় করে সিসি ক্যামেরা কিনে বসানো হয়েছে। যার কোনো রশিদ, বিল ভাউচার নেই এমনকি ক্রয় কমিটির মাধ্যমেও খরিদ হয়নি। ২০১৭ ও ২০১৮ সালের অর্থ বছর ও ২০১৯-২০২০ অর্থ বছর দুই লাখ ৩৭ হাজার ৮শ’ টাকা খরচ করা হয় প্রজেক্ট কমিটি ছাড়া। এ ছাড়া যাতায়াতের রাস্তা ব্যয় ১৬ হাজার ২শ’ টাকা, বাথরুমের ব্যয় ১ লাখ ৫৩ হাজার ৪শ’৮৪ টাকা, সিড়ি নির্মাণ ব্যয় ৫ লাখ ২৪ হাজার ৬শ’৫৭ টাকা ব্যয়ের প্রকল্পের রেজুলেশন নেই, প্রজেক্ট কমিটি ছাড়া ব্যয় হয়েছে। এছাড়া বার্ষিক ব্যয়ের হিসেবে ২ লাখ ২ হাজার ৯৭ টাকার গরমিলসহ বিভিন্ন বিষয়ে জবাব চেয়ে গত ১৬ জুন অধ্যক্ষকে নোটিশ দেয়া হয়েছে। নোটিশে ৭ দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ কামরুজ্জামান জামাত নোটিশের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলন করবেন, সেখান তিনি সবকিছু জানাবেন বলে জানিয়েছেন।
রায়পুর স্কুল এন্ড কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি বিল্লাল হোসেন বলেন, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। প্রথমে একটি নোটিশ দেয়া হলে তিনি জবাব দেননি। দ্বিতীয় দফায় শোকজ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ রক্ষার্থে যা যা করার তিনি তা করবেন বলে জানিয়েছেন