লিটন পাঠান, হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি'
হবিগঞ্জের মাধবপুরে র্বষার শুরুতেই উপজেলার বিভিন্ন খাল-বিল ও নদ-নদীতে
মাছ শিকারের ধুম পড়েছে। কেউ বসসি দিয়ে, কেউ জাল টেনে, কেউ দাঁড়কি দিয়ে,
কেউবা কারেন্ট জাল পেতে মাছ শিকারে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। র্বষার নতুন পানিতে
মাছ ধরতে উ সবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে বিভিন্ন গ্রামের খাল-বিল ও
নদ-নদীতে। জানা গেছে, উজান থেকে নেমে আসা বর্ষার পানি মাধবপুর
উপজেলার সোনাই ও বোয়ালিয়া নদী সহ বিভিন্ন নদ-নদী ও খাল-বিলে পানি
বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই সাথে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের দেখাও মিলছে ওই সকল নদ-
নদী ও খাল বিলে। তাই উ সবমুখর পরিবেশে মাছ শিকারে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে
এলাকার তরুন-তরুনী, যুবক-যুবতী সহ পেশাজীবি মৎসজীবীরা। অনেকে সারাদিন
মাছ শিকার করে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা র্নিবাহ করছে। আবার অনেকে
সখের বসেও নদীতে মাছ শিকারে নেমেছে। র্বষার নতুন পানিতে মাছ শিকারের ধুম
পড়ায় হরিশ্যামা, মুরাদপুর, গোপালপুর সহ সংলগ্ন নদী এলাকার গ্রামগুলোতে
জাল তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন অনেকে। তবে মাছ ধরার প্রাচীন
উপকরনের মধ্যে রয়েছে দাঁড়কী। তাই র্বষায় দাঁড়কীর কদরও বেড়ে গেছে। দাঁড়কী
তৈরীর কারিগর হরিশ্যামার সুদীন ও শংকর দাস বলেন, দাড়কী তৈরী এবং বিক্রি
আমাদের পৈত্রিক পেশা। আগের দিনে প্রায় ভরবছর খাল বিলে পানি থাকতো।
তাই দাড়কীও পুরোবছর বিক্রি হতো। কিন্তু র্বতমানে বছরের ৮/১০ মাসই খাল-
বিলে পানি থাকে না। শুধু র্বষা মৌসুমেই খাল-বিলে নতুন পানি হলে দাড়কীর চাহিদা
বাড়ে। দাঁড়কীর ক্রেতা মুরাদপুর গ্রামের ওয়াহাব মিয়া জানান, দেশী জাতের
ছোট মাছ আগের দিনে কেহ কিনতেই চাইতো না। কিন্তু র্বতমানে পুকুরে চাঁষ করা
রুই-কাতলা, সিলভারর্কাপ ও পাঙ্গাশের চেয়ে দেশী জাতের টেংরা, পুটি, শিং,
মাগুর, কৈ, মোয়া, চাঁন্দা, বেলে ও টাকি মাছের দাম অনেক বেশী। যাহা আমাদের
পক্ষে কেনা সম্ভব হয় না। তাই আমরা বাজার থেকে দাড়কী কিনে নিয়ে খালের
পানিতে মাছ ধরি এবং পরিমানে বেশী হলে মাছ বাজারে বিক্রি করি। এছাড়া দাড়কী
দিয়ে মাছ ধরা অনেক সহজ। শুধু পানিতে পেতে রাখা হয় এবং কয়েক মিনিট
পরপর তোলা হয়। এতে সময় ও পরিশ্রম দুটোই কম লাগে এবং মাছও পাওয়া যায়
অনেক। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কারেন্ট জাল দিয়ে সাধারণ মানুষ
পানিতে জাল পেতে জিয়ল মাছ যেমন কই, শিং, পুটি, টাকি সহ মাছ ধরে
থাকে। কারেন্ট জাল ব্যবহার সরকার বাহাদুরের নিষেধ থাকলেও তারা উপেক্ষা করে
কারেন্ট জাল ব্যবহার করছে। গোপালপুর, হালুয়াপাড়া, হরিশ্যামা, মুরাদপুর,
বাড়াচান্দুরা, জোয়ালভাঙ্গা, বুল-া সহ এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে এ জাল ব্যবহার
করছে। এ জাল ব্যবহারের কারণে মা মাছ ও বংশবৃদ্ধির মাছ সহ দেশীয় প্রজাতির মাছ ধরা সহ বাজারে বিক্রি করছে। সরকার যদি এ জাল ধ্বংস না
করে তাহলে ক্রমানুসারে এ মাছ বিলুপ্তির পথে ধাবিত হবে।