
সম্রাট হোসেন, শৈলকুপা (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধিঃবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের পর আওয়ামীলীগ, যুবলীগ,ছাত্রলীগ, সেচ্ছসেবকলীগ, কৃষকলীগ, বাংলাদেশের অন্যান্য জায়গার মত শৈলকূপাতেও ঐক্যবদ্ধ ভাবে অসহযোগ আন্দোলন ও সরাসরি যুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ করে। এই অসহযোগ আন্দোলন যুদ্ধে প্রস্তুতি হিসাবে আওয়ামীলীগ নেতা কাজী খাদেমুল ইসলাম(এমপি) এবং মোঃ কামরুজ্জামান (এম,এন,এ) এর নেতৃত্বে এবং মোঃ লুৎফর রহমান আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী এবং মোঃ আঃ হাই ঝিনাইদহ মহকুমা ছাত্রলীগের সভাপতি, মোঃ মকবুল হোসেন সাধারণ সম্পাদক, ঝিনাইদহ মহকুমা ও মোঃ গোলাম মোস্তফা, আনসার ইন্সট্রাক্টর, ঝিনাইদহ। মোঃ নায়েব আলী সর্দ্দার, সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মোঃ রহমত আলী মন্টু, মোঃ মনোয়ার হোসেন মালিথা, সভাপতি, ছাত্রলীগ, শৈলকূপা থানা, কাজী নাসিরুল ইসলাম, ছাত্র নেতা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ডাঃ হেলাল উদ্দিন, সভাপতি, গ্রামঃ মনোহরপুর, মীর মন্টু সাহেব, সহ সভাপতি, শৈলকূপা, মোঃ রোকনুজ্জামান রবার্ট, আওয়ামীলীগ সংগঠক, মোঃ সিরাজুল ইসলাম, আওয়ামীলীগ সংগঠক সবাই ঐক্যবদ্ধ ভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যে, গাড়াগঞ্জ/ বড়দাহ ব্রীজে পাকিস্তানি সৈন্যদের প্রতিরোধ করতে হবে। সেই প্রেক্ষিতে গাড়াগঞ্জ/ বড়দাহ ব্রীজে এস.ডি.পি ও মাহবুব উদ্দিন আহমেদের নির্দেশে ব্রীজের দক্ষিণ পার্শ্বে বাধা সৃষ্টির লক্ষ্যে রাস্তা কেটে দেওয়া হয়। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল ১লা এপ্রিল ১৯৭১ তারিখে বিষয়খালী যুদ্ধে প্রতিরোধ করার পর ৫ই এপ্রিল গাড়াগঞ্জ/বড়দাহ ব্রীজে প্রতিরোধ সৃষ্টি করা হবে সেই লক্ষ্যে আনসার ইন্সট্রাক্টর মোঃ গোলাম মোস্তফা সাহেবের নেতৃত্বে ৫০/৬০ জনের অধিক আনসার, ইপিআর, পুলিশ ও সেনাবাহিনী সদস্যদের সমন্বয়ে প্রতিরোধ সৃষ্টির লক্ষ্যে এম্বুস অবস্থায় অবস্থান করে। এই ৫০/৬০ জন বিভিন্ন বাহিনীর মধ্যে উল্লেখ যোগ্য নেতৃত্ব ছিলেন মোঃ গোলাম মোস্তফা, মোঃ আশরাফুল আলম, মোঃ গোলাম মোস্তফা সাবেক এমপি, আহাদ আলী, আঃ গফুর, হানেফ আলী, তোরাফ আলী মন্ডল, মোবারেক আলী, খয়বার আলী (আনসার) ও শৈলকূপা থানার ওসি মোঃ কাশের আলী সাহেব ও দুইজন পুলিশ কনস্টেবল আমাদের সঙ্গে ছিলেন। এছাড়া ও আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, সেচ্ছাসেবকলীগ ও হাজার হাজার কর্মী বাহিনী প্রতিরোধ সৃষ্টির লক্ষ্যে ব্রীজের উভয় পার্শ্বে অবস্থান নেওয়া হয়। ৫ই এপ্রিল অনুমান রাত ৯ঃ০০ টার সময় কুষ্টিয়া থেকে ফেরত ৭/৮ গাড়ি পাকিস্তানি সৈন্য ঝিনাইদহের অভিমুখে অগ্রসর হয়। পথিমধ্যে গাড়াগঞ্জ/ বড়দাহ ব্রীজে আমাদের কাটা গর্তে ১ম গাড়িটি পতিত হয়। সাথে সাথে উভয়পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। পাকিস্তানীদের পক্ষ থেকে বৃষ্টির মতো গুলি বর্ষন করলে ও প্রতিরোধ এম্বুসে থাকা আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা পাল্টা গুলি বর্ষন শুরু করে। এমতাবস্থায় স্থানীয় জনতার প্রতিরোধের মুখে এবং আনসার, ইপিআর, এর সহযোগিতায় বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে পাকিস্তানি সৈন্য দের হত্যা করা হয়। ইপিআর, আনসার,পুলিশ বাহিনী ও স্থানীয় জনতার প্রতিরোধে ৫০ জনের অধিক পাকিস্তানি সৈন্য হত্যা করা হয়।