চেহারাটা দেখে মনে হলো না, উনি রাস্তার মানুষ। যেন কোনো সময় শিক্ষিত, স্বচ্ছল পরিবারের ছিলেন। একসময় যে ঘরে সবাই তার অপেক্ষায় থাকত, সেই ঘরটাই আজ তাকে আর চেনে না।তার নাম মো: সিদ্দিক। কথার ভেতর কখনো বললেন যশোর, কখনো বললেন কোটচাঁদপুরের চন্ডিপুর গ্রামের নাম।তারপর যা বললেন, শুনে বুকের ভেতরটা কেঁপে উঠলো“দুই কোটি টাকার সম্পত্তি ছিল আমার… ছেলে-মেয়েরা মেরে-ধরে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে। এখন এক বছর ধরে রাস্তায়... সব কিছু ভুলে গেছি ভাই… শুধু আত্মীয়দের বাড়ি খুঁজি... হয়তো কেউ চিনবে, একটু জায়গা দেবে…”এই বলে হঠাৎ ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলেন।আমি উনাকে চিনিনা... কিন্তু কেন জানি আমার নিজের চোখ দিয়ে পানি চলে এলো।চলন্ত ট্রেন আপন গতিতে এগিয়ে চলছিলো কিন্তু আমি থমকে গিয়েছিলাম।
একজন বাবা, যার হাত ধরে কোনোদিন তার সন্তানরা হাঁটা শিখেছিল, সেই বাবাকে তারা আজ ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে রাস্তার ধুলোয়।তারা হয়তো আজ সমাজে মাথা উঁচু করে ঘুরে বেড়ায়, দামি জামা পরে, গাড়িতে চড়ে… কিন্তু তাদের বাবার জায়গা এখন ট্রেনের এক কোণায় অজানা কোনো শহরের দিকে ভেসে চলা।
বি.দ্র. কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস পেজ থেকে নেওয়া হয়েছে।