কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃলালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের বুড়িমারী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ভেতরের কুরআন অবমাননা ও হাদিস শরীফ রাভার সেলফ তছনছ করার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার পর গায়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা।
বৃহস্পতিবার মাগরিবের নামাজের আগে বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদ চত্ত্বরে ঘটে এ ঘটনা।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের ১নম্বর ওয়ার্ড সদস্য হাফিজুল ইসলাম।
ইউপি সদস্য হাফিজুল ইসলাম বর্ণনা করে বলেন, ‘আসরের নামাজ শেষে বুড়িমারী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দুইজন বহিরাগত পরিচয়ধারী ব্যক্তি যায়। মসজিদের খাদেম জুবেদ আলীকে সাথে নিয়ে একজন মসজিদের ভেতরে প্রবেশ করে কোরআন শরীফ ও হাদিসের বই রাখার তাকে অস্ত্রো আছে বলে তল্লাশি শুরু করে। এক পর্যায়ে মসজিদের সামনে থাকা ৫/৬জন মুসল্লি প্রবেশ করে ওই ব্যক্তিকে এবং বারান্দায় থাকা অপর ব্যক্তিকে সিঁড়িতে বসিয়ে মারধর করছিল। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই দুই ব্যক্তিকে নিয়ে এসে পাশে বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষের ভেতরে ঢুকে তালা লাগিয়ে রাখি। আমাদের পেছনে শতাধিক লোকজন ছিলো। মুহুর্তে শত শত লোকজন জড়ো হতে থাকে। আমি ও স্থানীয় রফিকুল ইসলাম প্রধান নামে একজন ব্যক্তি পাটগ্রাম থানার ওসি সুমন কুমার মোহন্ত, ইউএনও কামরুন নাহার, উপজেলা চেয়ারম্যান রুহুল আমীন বাবুল ও বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম নেওয়াজ নিশাতকে ফোনে কল দিলে তারাও আসেন। এরই মধ্যে হাজার হাজার উত্তেজিত জনতা কারো কথাই না শুনে পরিষদের দরজা-জানালা ভেঙে একজন ব্যক্তি বাইরে বেড় করে ইউনিয়ন পরিষদ চত্তরেই সবার সামনে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে লাশ টেনে হিচড়ে নিয়ে গিয়ে লালমনিরহাট-বুড়িমারী জাতীয় মহাসড়কের বুড়িমারী প্রথম বাঁশকল এলাকায় কাঠখড়ি ও পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পুড়ে ছাই করে দেয়। সেখানে ৫/৬ হাজার উত্তেজিত মানুষ কারো কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না।’
তিনি মোবাইলে বলেন, ‘আমরা লোক দুইজনের সাথে কথা বলার সময় পাইনি। তাই পরিচয় নেওয়া সম্ভব হয়নি। এমন কি তাদের ধর্ম সম্পর্কেও জানা সম্ভব হয়নি।’
বুড়িমারী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন আফিজ উদ্দিন বলেন, ‘আমি আসরের নামাজ শেষ করে বাইরে বেড় হয়ে যাওয়ার সময় দেখতে পাই খাদেম জুবেদ আলীকে দুইজন অপরিচিত ব্যক্তি সালাম দিয়ে হ্যান্ডশেক করে কথা বলছিল। এরপর তারা মসজিদের ভেতরে ঢুকে যায়। আমিও চলে যাই। পরে ঘটনার কথা এসে শুনেছি। কিন্তু বিস্তারিত কিছু জানি না।’
জানতে চাইলে ওই মসজিদের খাদেম জুবেদ আলী বলেন, ‘আমাকে ওই ব্যক্তি র্যাব ও আর্মির পরিচয় দিয়ে বলে যে, কোরআন শরীফ ও হাদীস রাখার তাকে না কি অস্ত্র আছে খুজতে শুরু করে। এক পর্যায়ে সবকিছু তছনছ করে। মসজিদের বারান্দায় থাকা অপর জনকে সহ অপরিচিত দুই ব্যক্তিকে মসজিদের বারান্দার সিড়িতে মারধর করে। প্রশাসক আবু জাফর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সেখান সার্বিক পরিস্থিতি এখনই বলার মতো নয়। শুনেছি ইউনিয়ন পরিষদে সহ বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে। একজনকে মেরে আগুনে পুড়ে ফেলা হয়েছে। অতিরিক্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যও সেখানে পাঠানো হয়েছে।
