কিশোরগঞ্জে শীতের ডালের বড়া তৈরীতে ব্যস্ত গ্রামীন নারীরা



মোঃ লাতিফুল আজম,নীলফামারী প্রতিনিধিঃনীলফামারী কিশোরগঞ্জের চাঁদখানা ইউনিয়নের বগুলাগাড়ী সাতনালা নিভৃত পল্লী বধূরা বাপ দাদার শেখানো পেশার ঐতিহ্য স্মৃতির আকঁড়ে ধরে রাখার মাঝে স্বামীর সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে শীতের আগমনে ডালের বড়া তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

 ওই গ্রামের অধিকাংশ পরিবারের সুখ-দুঃখ হাসি কান্না, ভালোবাসা, স্বপ্ন ও জীবন-জীবিকা জড়িয়ে আছে ডালের বড়ার সাথে। ডালের বড়ার আয়ের উৎস দিয়ে চলে  ওদের জীবন সংসার। নারীরা দিনের গৃহস্থালি কাজ সাঙ্গ করার পাশাপাশি কাক ডাকা ভোর হতে মাসকলাই শীলপাটায় পিষে মিহি আটায় পরিনত করে কালোজিরার সংমিশ্রণে প্রস্তÍতকরণ দিয়ে সকাল হতেই রোদে পাটি কিংবা মাদুর পাতিয়ে মুন্ড হাতের মুষ্টিতে বিশেষ কায়দায় চেপে চেপে শৈল্পিক ছোঁয়ায় গুটি গুটি করে তৈরি করেন ডালের বড়া। এই ডালের বড়া খুব সুস্বাদু এবং চাহিদাও খুব বেশি। এই ডালের বড়া বিক্রি করে তাদের সংসারে সচ্ছলতা ফিরছে। ওই গ্রামীন নারীরা লোকায়েত পদ্ধতিতে নিরবে নিভ্থতে পরিবার গুলো জনপ্রিয় সুস্বাদু খাদ্য হিসেবে ডালের বড়া তৈরি ও সংরক্ষণ করে চলছেন। সময়ের পরিক্রমায় নিজেদের পরিবারের খাওয়ার জন্যই নয়, সংসারের বাড়তি আয়ও বাজারে চাহিদা থাকায় ব্যবসা হিসেবে বড়ি তৈরি করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন সংগ্রামে এখন তারা ব্যস্ত।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গ্রামীণ পল্লী বধু কনে, স্বামী-স্ত্রী, কিশোর-কিশোরী ও শিশু শিক্ষার্থীরা সব বয়সের মানুষেরা মনের মাধুরী মিশিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে শৈল্পিক হাতে ছোঁয়ায় তৈরী করছেন ডালের বড়া । ডালের বড়া বিক্রির অর্থ দিয়ে পরিবারগুলো অভাব জয় করে নতুন করে সংসার সাজিয়ে তুলতে বিভোর। ওই গ্রামের রাধা রাণী, লিপি রাণী জানান, ডালের বড়া তৈরী খুব খাটুনির কাজ, ডালের ছাল ছড়ানোর পর যান্ত্রিকতায় নয় তপ্ত হাতের শিল পাটায় মিহি আটায় বড়া তৈরীর করে রোদে শুকিয়ে ঝনঝনা করতে সময় লাগে চার দিন।এর পর বাজারে খুচরা, পাইকারদের কাছে বিক্রি করা হয় । সিদ্ধেশ্বরী জানান, প্রতিটি পরিবার দিনে ৭/৮কেজি পর্যন্ত এই বড়া তৈরি করতে পারেন। প্রতি কেজি ডালের বড়া তৈরি করতে খরচ পড়ে থেকে ১৭৫টাকা, বিক্রি করেন ৩শত টাকা কেজি দরে। তিনি আরও জানান, বড়ির পুষ্টি গুণ অনেক বেশি, পেটের জন্য বেশ উপকারী , বিভিন্ন শাক সবজিসহ মাছের রান্না তরকারী একটি বাঙ্গালীর মুখরোচক খাবার। আমাদের বড়ি তৈরির এই লোকায়েত জ্ঞানকে সম্মান ও শ্রদ্ধা জানাতে হবে। তবে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ পেশা দিন দিন প্রসার ঘটবে এবং গ্রামীন নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন
পূর্ববর্তী সংবাদ
পরবর্তী সংবাদ