কানাইঘাটে শতাধিক গাছের চারা কাটার অভিযোগে মামলা, বিপাকে বাদী

কানাইঘাট প্রতিনিধি :কানাইঘাট উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপির বড়বন্দ ২য় খন্ড গ্রামে সৌদিআরব প্রবাসী মঈনুল হকের স্ত্রী সালমা বেগমের কাছে ১ লক্ষ টাকা চাঁদা চেয়ে না পেয়ে প্রবাসীর বাড়ীতে রোপনকৃত বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় শতাধিক গাছের চারা কেটে ফেলেছে স্থানীয় দূর্বৃত্তরা। এনিয়ে প্রবাসীর স্ত্রী সালমা বেগম কানাইঘাট থানায় ও আদালতে মামলা করে পড়েছেন বিপাকে। মামলা দায়েরের পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও মামলার অগ্রগতি কিংবা আদালতে রিপোর্ট প্রদান না করায় মামলার বাদী ২ সন্তানের জননী সালমা বেগম এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন।

অভিযোগে জানাযায়, বড়বন্দ ২য় খন্ড গ্রামের মঈনুল হক প্রবাসে থাকায় তার স্ত্রী সালমা বেগম দুটি সন্তান নিয়ে স্বামীর বাড়ীতে বসবাস করছেন। এতে একই গ্রামের হরমুজ আলীর পুত্র এনামুল হক ও ইয়ানিছ আলীর পুত্র নাছির উদ্দিন সালমা বেগমের কাছে গত ৮ অক্টোবর ১ লক্ষ টাকার চাঁদা চায়। এতে চাঁদা না পাওয়ায় তারা সালমা বেগমের বসত বাড়ীতে রোপনকৃত বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় শতাধিক গাছের চারা কেটে দেয়। এতে সালমা বেগম গ্রামবাসীর কাছে বিচার প্রার্থী হলে তারা ঐদিন রাত অনুমান ৯টায় সালমা বেগমের বাড়ীতে গিয়ে বসত ঘরের দরজায় লাতালাথি শুরু করে। এতে সালমা বেগম ঘরের দরজা খুলে দিলে তারা তাকে টেনে হেচড়ে ঘরের উঠানে নিয়ে এসে শ্লিলতাহানীর চেষ্টা করে। এসময় সালমা বেগম সুর-চিৎকার দিলে তারা জোরপুর্বক তার গলার দেড় তুলা ওজনের স্বর্নের চেইনটি ছিড়ে নিয়ে যায়।

এঘটনায় সালমা বেগম কানাইঘাট থানায় অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এতে সালমা বেগম একই বাড়ীতে একা হওয়ায় এবং প্রতিপক্ষের লোকজন জনে বলে বলবান হওয়ায় গ্রামবাসী বিষয়টি সালিশে নিষ্পত্তি করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু পরবর্তিতে গ্রামবাসী বিষয়টি সালিশে নিষ্পত্তি করে দিতে না পারায় সালমা বেগম অসহায় হয়ে গত ১৩ অক্টোবর সিলেটের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-২১৭/২০২০ইং।

সরেজমিনে গেলে সালমা বেগম বলেন, আমার স্বামী সৌদিআরবে করোনা মহামারির সময়ে খুবই কষ্টে দিন যাপন করছেন। এদিকে আমি আমার দু’জন সন্তান নিয়ে অভাবী সংসারে কোন ভাবে দিনাতিপাত করছি। আমার পিতার বাড়ী পাশর্^বর্তী বিয়ানীবাজার উপজেলায়। তিনি বলেন, দুর্বৃত্তরা পাশর্^বর্তী বাড়ির সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোকজন হওয়ায় আমার জান-মালের নিরাপত্তা এবং বাড়ীর গাছপালা কাটা ও স্বর্নের চেইনটি ফেরৎ পাওয়া সহ ন্যায় বিচারের জন্য গ্রামের মুরব্বীদের ধারে ধারে ঘোরে ব্যর্থ হয়ে আদালতের স্বরনাপন্ন হয়েছি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম বলেন, গাছের চারা কাটার বিষয়ে সালমা বেগম আমাদের কাছে বিচার প্রার্থী হয়েছিল। কিন্তু প্রতিপক্ষ স্থানীয় সালিশ বিচার না মানায় আমরা বিষয়টি নিষ্পত্তি করে দিতে পারিনি। তিনি বলেন, সালমা বেগমের এখানে কোন আত্মীয় স্বজন না থাকায় তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন বলে যে অভিযোগ করেছেন তা একেবারেই সত্য।

এবিষয়ে আলাপকালে কানাইঘাট থানার এসআই মাঈনুল ইসলাম বলেন, সালমা বেগম আদালতে যে মামলা দায়ের করেছিলো সেই অভিযোগটি আমি সরেজমিনে তদন্ত করেছি। তিনি বলেন, মামলার তদন্ত প্রতিবেদন যথাসময়ে আদালতে প্রদান করবো। এছাড়া মামলায় অভিযুক্তরা যদি বাদীনীকে নতুন করে কোন ভয়ভীতি প্রদর্শন করে সেই বিষয়টিও আমরা তদন্ত করে দেখবো। 

এদিকে সালমা বেগমের অভিযোগটি আমলে নিয়ে ন্যায় বিচার প্রদানের জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবী জানিয়েছেন এলাকার সচেতন মহল।


সংবাদটি শেয়ার করুন
পূর্ববর্তী সংবাদ
পরবর্তী সংবাদ