কানাডা-প্রবাসী পারুল বেগম চিকিৎসা সহায়তায় অর্থ প্রদাণ করেন


মোঃ রবিউল হোসাইন সবুজঃইসলাম সব সময় ভ্রাতৃত্বের শিক্ষা দেয়। অসহায় অসচ্ছল মানুষের সেবায় এগিয়ে আসা ইসলামে অন্যতম ইবাদত। আল্লাহ যাকে অর্থ-সম্পদ দিয়েছেন তিনি সে সম্পদ থেকে অভাবী মানুষকে সাহায্য করলে তাতে আল্লাহতায়ালা খুশি হোন।

বৃহস্পতিবার বিকালে লাকসাম বেসরকারি  হসপিটালে কানাডা প্রবাসী পারুল বেগম এর একজন ছোটভাই গিয়ে এ চিকিৎসা সহায়তার টাকা তুলে দেন। 

পারুল বেগমের জন্মস্থান লাকসাম উপজেলা ৬নং ওয়ার্ড বাতাখালি গ্রামে। স্বামীর বাড়ি কুমিল্লায়। তিনি এখন বর্তমানে কানাডায় বসবাসরত আছেন। 

অজ্ঞাত ওই  মনোহরগঞ্জের অসহায় নারীকে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা,কুমিল্লা  চিকিৎসা দেন কিন্তু কোন সুফল ফেলেন না।  এরপর আবারো শরীলের অবস্থা অবনতি হলে তাকে লাকসাম বেসরকারি  মেডিকেলে ভর্তি করানো হয়। তখন আবারো বড় ধরনের অর্থ  জটিলতা দেখা দেয়। সেই প্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে একটি অসহায় বোনের পাথর অপারেশন এরজন্য  সাহায্যে চেয়ে একটি পোস্ট করা হয় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে। তখনই কানাডাপ্রবাসী পারুল বেগমের চোখে পড়লে! তাৎক্ষণিক  তিনি সরাসরি যোগাযোগ করে অর্থসহায়তা প্রদান করেন। 
এ সময় হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক কর্মকর্তাসহ অসহায় নারীর পরিবারের সবাই উপস্থিত ছিলেন।


স্থানীয় সূত্র জানায়, কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের অসুস্থ ওই নারীর মত এককভাবে অসংখ্য অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সহায়তা করেছেন কানাডা-প্রবাসী পারুল বেগম।

১.তিনি ১০ জন পিতা-মাতা হারা অসহায়, এতিম ছেলেকে সম্পূর্ণভাবে কোরআনে হাফেজ হিসেবে গড়ে তুলতে অর্থ দিয়ে পাশে থাকেন। 
২. এছাড়াও আরো ২৫ জন এতিম মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন নিজস্ব অর্থায়নে। 
৩. একজন অসুস্থ বিধবা নারীকে হাসপাতালে রেখে সম্পূর্ণভাবে সুস্থ করার জন্য যা যা করা দরকার করে ওই নারীকে সুস্থ করে বাড়িতে পাঠিয়েছেন। এবং পরবর্তী ভালো থাকার জন্য নানা সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। 
৪. প্রতিবছর মাহে রমজানের গরীব দুস্থ মানুষের মাঝে ইফতারি বিতরণ করে থাকেন। 
৫. কুমিল্লা ও লাকসাম অনেক জায়গায় এতিমখানা,মসজিদ মাদ্রাসাসহ অসংখ্য স্থানে গোপনে দান করে যাচ্ছেন এ কানাডা-প্রবাসী পারুল বেগম।

এ ধরনের মানবিক কর্তব্য পালন রাত জেগে অবিরাম নফল নামাজ আদায় ও অবিরত নফল রোজার সমতুল্য।মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। সমাজে সেই মানুষেরই একটা অংশ গরীব-দুস্থ। তারা আমাদের সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ। গরীব-দুস্থসহ সমাজের আশ্রয়হীন, দুর্বল ও অসহায় মানুষকে সাহায্য-সহযোগিতা করা ইসলামে অন্যতম ইবাদত। 
মহানবী (সা.) আরও বলেন, 'যে ব্যক্তি দুনিয়ায় অপরের একটি প্রয়োজন মিটিয়ে দেবে, পরকালে আল্লাহ তার ১০০ প্রয়োজন পূরণ করে দেবেন এবং বান্দার দুঃখ-দুর্দশায় কেউ সহযোগিতার হাত বাড়ালে আল্লাহ তার প্রতি করুণার দৃষ্টি দেন।

দান যেমন সমৃদ্ধি আনে তেমনি মর্যাদাও বৃদ্ধি করে। নিঃস্বার্থ ও নীরব দানের মাধ্যমে মানুষ তার মর্যাদার সর্বোচ্চ শিখরে যত তাড়াতাড়ি পৌঁছাতে পারে তা অন্য কোন পন্থায় সম্ভব হয় না। এর মর্যাদা এতই যে দানকারি কিয়ামতের দিন আল্লাহর আরশের ছায়ায় স্থান পাবেন।

দান করার জন্য কাউকে ধনী হবার প্রয়োজন নেই। সামর্থ্য অনুযায়ী একটি খেজুর দান করলেও আল্লাহ তা বৃদ্ধি করে পাহাড় পরিমাণ করে দিতে পারেন। যে দানে আন্তরিকতা যত বেশি আল্লাহর কাছে তার ওজন তত বেশি।দান পরকালের কঠিন সময়ে দোযখের আগুন থেকে রক্ষা করে, ইহকালে প্রাচুর্যময় ও দুশ্চিন্তাহীন মর্যাদাপূর্ণ জীবন উপহার দেয়।

কানাডা-প্রবাসী পারুল বেগম বলেনঃ  আমি গরীব,অসহায় মানুষের বন্ধু আমি যতদিন বাঁচবো ততোদিন নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী সবসময় মানুষের পাশে থাকবো ইনশাআল্লাহ। 

আল্লাহ আমাদের সবাইকে বিপদগ্রস্ত ও অভাবী মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়ার এবং তাদের অভাবের দিনে হাত বাড়ানোর তওফিক দান করুন। আমীন।

সংবাদটি শেয়ার করুন
পূর্ববর্তী সংবাদ
পরবর্তী সংবাদ