বগুড়ায় বছরের প্রথম দিন থেকেই নতুন বই পাবে শিক্ষার্থীরা

মোঃ সবুজ মিয়া বগুড়া প্রতিনিধিঃবছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যের বই বিতরণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে নতুন বছরের প্রথম দিন হতেই শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়া হবে। অন্যান্য বছরগুলোতে নতুন বইয়ের ঘ্রানে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর বছর শুরু হলেও বৈশ্বিক মহামারী রোগ করোনা এবার এর কিছুটা ব্যাঘাত ঘটাবে। এবার প্রতিটি স্তরের জন্য ভিন্ন ভিন্ন নিয়ম অনুসরণ করে বই বিতরণ করা হবে। মাধ্যমিকের শ্রেণীর বই এবার ১ জানুয়ারি থেকে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত বই বিতরণ করা হবে। অপরদিকে প্রাক প্রাথমিক ও প্রাথমিক শ্রেণীর বই শিক্ষার্থীর সংখ্যার উপর ভিত্তি করে প্রত্যেক বিদ্যালয় বই বিতরণ করবে। 

বগুড়ার শিক্ষা বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী প্রাক প্রাথমিক হতে মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা স্তর পর্যন্ত জেলায় ১০ লাখ ৪১ হাজার ৬০৬জন শিক্ষার্থীর জন্য বইয়ের চাহিদা রয়েছে ৭৩ লাখ ৫৫ হাজার ১১০ কপি। এরমধ্যে প্রাক প্রাথমিকের ১ লাখ ৫০ হাজার ২৭০ জন শিক্ষার্থীর চাহিদা অনুযায়ী শতভাগ বই এসেছে বলে দাবি করেছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ। ওই বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী প্রথম হতে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত ৪ লাখ ৩৪ হাজার ৪০জন শিক্ষার্থীর জন্য বইয়ের চাহিদা রয়েছে ২০ লাখ ৬০ হাজার ৮৬৫ কপি বই। এরমধ্যে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত বই পাওয়া গেছে ১২ লাখ ২২ হাজার ৫০৩ কপি বই। অর্থাৎ চাহিদার বিপরীতে বই এসেছে ৫৯ ভাগ। অপরদিকে মাধ্যমিক (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন), ইবতেদায়ী, দাখিল, কারিগরীসহ মোট ৫ লাখ ৫৭ হাজার ২৯৬জন শিক্ষার্থীর জন্য বইয়ের চাহিদা রয়েছে ৫৪ লাখ ১১ হাজার ৬৪০ কপি। এর বিপরীতে ৪০ ভাগ বই এসেছে বলে জানিয়েছে জেলা শিক্ষা বিভাগ।

গত ২৮ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে ২০২১ শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিনই প্রাক প্রাথমিক, প্রাথমিক এবং নৃ-গোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের মাঝে শতভাগ বই তুলে দেওয়ার কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। কোভিড-১৯ এর কারণে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে বই বিতরণ করা হবে। শিক্ষার্থীদের উপর ভিত্তি করে প্রত্যেক বিদ্যালয় বই বিতরণ কর্ম-পরিকল্পনা তৈরি করবে। প্রতিটি বিদ্যালয় প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি এবং ১ম হতে ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে বই বিতরণ করা হবে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংখ্যার উপর নির্ভর করে স্থানীয়ভাবে স্কুলভিত্তিক পরিকল্পনা করে বই বিতরণ করতে হবে, যেন কোন জটলা সৃষ্টি না হয়। এ সময় সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখাসহ সকল স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে। কোভিড-১৯ মোকাবেলা সংক্রান্ত সরকারিভাবে জারিকৃত নির্দেশনা ও অনুশাসনসমূহ মেনে চলতে হবে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সকলকেই মাস্ক পরিহিত অবস্থায় স্কুলে যেতে হবে। বিদ্যালয় প্রবেশের মুখে হাত জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা রাখতে হবে। শ্রেণিভিত্তিক প্রত্যেক শিক্ষার্থীর বইয়ের সেট পৃথকভাবে বেঁধে প্রস্তুত রাখতে হবে। যেন বই বিতরণের সময় কোন শিক্ষার্থী বা অভিভাবককে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে না হয়। সকল শিক্ষককে বই বিতরণের দায়িত্ব ভাগ করে দিতে হবে। বই বিতরণের ক্ষেত্রে শ্রেণিভিত্তিক একাধিক বুথ তৈরি করতে হবে। প্রতিটি বুথে একজন শিক্ষককে দায়িত্ব পালন করতে হবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক শিক্ষার্থী/অভিভাবকের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে বই বিতরণ নিশ্চিত করবে। ওই প্রজ্ঞাপনের ১০ ও ১১ নম্বর শর্তে বলা হয়েছে বই বিতরণের আনুষ্ঠানিকতার নামে জন সমাগম করা যাবে না এবং শিক্ষার্থী/অভিভাবকদের নিকট হতে বই বিতরণের জন্য কোন প্রকার অর্থ আদায় করা যাবে না।

অপরদিকে মাধ্যমিকে এবার ১ জানুয়ারি থেকে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত বই বিতরণ করা হবে। ষষ্ঠ হতে নবম পর্যন্ত ৪টি শ্রেণি প্রতিটি শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ৩দিন করে বই বিতরণ করা হবে। এক্ষেত্রেও অবশ্যই যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনেই বই বিতরণ করা হবে। প্রাথমিকের মত মাধ্যমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্যও বই বিতরণের আনুষ্ঠানিকতার নামে জন সমাগম করা যাবে না এবং শিক্ষার্থী/অভিভাবকদের নিকট হতে বই বিতরণের জন্য কোন প্রকার অর্থ আদায় করা যাবে না।


সংবাদটি শেয়ার করুন
পূর্ববর্তী সংবাদ
পরবর্তী সংবাদ