মেইড ইন বাংলাদেশ শেখ মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান

একদা আব্দুর রহমান
 প্রাণ খোলা মোসলমান। 
নামাজ কালাম পড়ে, 
নিজ ক্ষেতে চাষ করে,
বিধবা মা, বিবি, পাঁচ সন্তান। 
কোনো মতে পাড় করে দিন ক্ষান।
মুখ ভরা দাড়ি, লম্বা চুলের ফেরি,
সময় ও পয়সা দুটোয় বাঁচায় বেচারি। 
দেখে দেখে সখ জাগে, হুজুর হতে পাগড়ি লাগে, 
আমি ও একটু বাধি না? 
সবুজ গামছা কিনে, বেধে ফেলে দীনহীনে,
ভালোই লাগে বুঝি মাওলানা? 
উকি ঝুঁকি চৌকি মারা, 
সাদা পোষাক গোয়েন্দারা, 
এ-ই মৌলানারেই তো চাই?
হঠাৎ একদিন সন্ধ্যায়, 
আব্দুর রহমান আর নাই,
গুম হইল কি কারণে বুঝিল সবাই। 
ভাত বেড়ে মা কাঁদে, মেয়ে কাঁদে বিছানায়।
বৌ কাঁদে মাঠে ঘাটে, 
উঠানে বুক ছাপড়ায়। 
মাস যায় বছর যায়, এক সময় নিরুপায়, 
পরিবার হতাশায় অসহায়। 
পাথুরে বুক বেধে, জীবনের বাধ সিধে, 
কাজআর খাবারের নিশানায়।
বছর দুয়েক পরে,
দেখাইতেছে সম্প্রচারে, 
আশকোনার একঘরে, 
জঙ্গি আস্তানা গেড়ে, 
আছে সেথা জন তিন চারে।
কতক পুরুষ জনা, 
আছে মহিলা গুনা,
আছে সাথে বাচ্চা কাচ্চা দুনা। 
ভয়ানক অস্ত্রবোমায় সজ্জিত। 
সুইসাইড বোম্বার, আইএস এর মেম্বার, 
কয়েক মণ বারুদ সেথা গচ্ছিত। 
ভেতরে রহমান, 
কহে আল্লাহ মেহেরবান,
ভাই আপনারা কাঁহারা ? 
আনছিল ধরে যারা, রেখে গেল এই খানে তারা,
বলেন তো আপনি কে বা উনারা। 
আমার ঐ একই অবস্থা, 
পালানোর নেই ব্যাবস্হা,
বহু দিন পরিবার ছাড়া। 
চেয়ে দেখে টিভিতে, 
জনগন ভীতিতে, 
খুব সাবধানে চলিতেছে অভিযান। 
তার পর ধীরিম ধারাম, 
কেঁপে ওঠে  গাঁ গ্রাম, 
সব জংগী হ'য়ে গেছে শেষ। 
জংগীরা বুঝে গেল, মহাপ্রলয় হয়ে গেল, 
জিবরাইল সিংগা বাজাইল শেষ মেশ।
পদকের ছড়াছড়ি, গভার্মেন্টের বাহাদুরি, 
বাহিনীর শেষ নেই বাহবা। 
শুধু গেল নিঃপ্রাণ, কতগুলো রহমান, 
চিনিল না, ওরা কারা কেহবা।।

সংবাদটি শেয়ার করুন
পূর্ববর্তী সংবাদ
পরবর্তী সংবাদ