মামুনুর রশিদ, দিনাজপুর প্রতিনিধি বরের বয়স শতবর্ষ ও কনের বয়স শতবর্ষ ছুঁই ছুঁই। এরপরও বিয়ের আয়োজনের ছিলো না কোন কমতি। বিয়ের নিমন্ত্রণ কার্ড থেকে শুরু করে সহ¯্রাধিক মানুষের তিন দিন ধরে ভোজনের আয়োজন। বিবাহ বাসরে ব্রাক্ষ্মন দিয়ে বিয়ে পড়ানো হয়েছে সনাতনী বেদমন্ত্র দিয়েই। নাচ-গান, বাদ্য-বাজনা আর সনাতন রীতিতে ধুমধামের সাথে বিয়ে। এরকমই এক বিরল বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে দিনাজপুরের বিরল উপজেলার পল্লীতে।
দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ভারত সীমান্ত সংলগ্ন গ্রাম দক্ষিন মেড়াগাঁও-এ প্রায় মাস খানেক ধরেই আয়োজন চলে শতবর্ষী এই বর কনের বিয়ের। এই আয়োজনের পর রোববার রাত ৮টায় বর আসেন গাড়ীতে চরে। যথারীতি পুজাপার্বনের মাধ্যমে বরকে নিয়ে বসানো হয় বিবাহ বাসরে এবং সাজিয়ে-গুজিয়ে তার পাশেই বসানো হয় কনেকে। এরপর ব্রাক্ষ্মন নিয়ে উচ্চারন করা হয় সনাতনী বেদমন্ত্র "যদিদং হৃদয়ং মম-তদিদং হৃদয়ং তব"। এভাবেই সনাতনী রীতিতে মালাবদলসহ সবরকম আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয় বিয়ে।
বর বৈদ্যনাথ দেবশর্মা। আর কনে তারই ৯০ বছর আগে বিয়ে করা স্ত্রী পঞ্চবালা দেবশর্মা। বিয়ের নিমন্ত্রণকার্ডে তিনি উল্লেখ করেন, ৯০ বছর আগে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয় এবং বিয়ের পঞ্চম পীড়ি অর্থ্যাৎ পঞ্চম প্রজন্ম পার হয়েছে। এ জন্যই ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী আবার এই বিয়ে। বংশধরদের মঙ্গলের জন্য এই বিয়ের আয়োজন বলে জানালেন বর নিজেই।
আর বয়সের ভারে ন্যুয়ে পড়া কনে জানালেন, ছোটবেলা বিয়ে সম্পন্ন হওয়ায় বিয়ে কি- তা তিনি বুঝেননি। কিন্তু এবার এই বিয়েতে বেশ আনন্দ পাচ্ছেন তিনি।
ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী যিনি বেদমন্ত্র দিয়ে বিয়ে পড়িয়েছেন, সেই ব্রাক্ষ্মনও জানান, এমন বিয়ে তিনি কখনই দেননি এবং দেখেননি। বিবাহ রেজিষ্ট্রারও জানান একই কথা।
ধর্মীয় রীতির পাশাপাশি ধুমধামের কোন কমতি ছিলো না বিয়েতে। ছিলো বাদ্য-বাজনা, নাচগান, সহ¯্রাধিক মানুষের প্রীতিভোজসহ সব আয়োজনের। পরিবারের সদস্যরাও এতে বেশ আনন্দিত।
আর প্রতিবেশী এবং দুরান্ত থেকে আসা আত্মীয় স্বজনরাও যথারীতি বেশ উপভোগ করেছেন এই বিয়ে অনুষ্ঠান।
এলাকার জনপ্রতিনিধিরা ধুমধামের সাথে ব্যাতিক্রমী এই বিয়ে অনুষ্ঠানের কথা উল্লেখ করে জানালেন, এরকম বিয়ে তারা কখনও দেখেননি। এমন বিয়ের অনুষ্ঠানে আসতে পেরে খুশী তারা।