২০১৯ সালের শেষের দিকে সূদুর চীন দেশ থেকে বিষাক্ত এক ভাইরাসের উৎপত্তি হয়।বর্তমানে যেটা কোভিড/১৯ বা করোনা ভাইরাস নামে গোটা বিশ্বজুড়ে বিচরণ করে বেড়াচ্ছে।এই ভাইরাস টি ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে প্রবেশ করে এবং মার্চ/এপ্রিল মাস থেকে ভয়াবহ রুপ ধারণ করে।ফলে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়ে।গোটা দেশ জুড়ে আতংক ছড়িয়ে পড়ে।চারদিকে মৃত্যুর মিছিল কখনও আপন জনদের নিষ্ঠুরতা।কখনও হাসপাতালে ঠাই না পাওয়া রোগীর স্বজনদের আর্তনাদ! জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হাসপাতালের ডাক্তার নার্সদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও সেবাদান।সেচ্ছাসেবী সংগঠন গুলোর সম্মিলিত প্রচেষ্টা। এদিকে জনগণের অসচেতনতা, স্বাস্থ্য বিধি না মেনে সরকারি নিয়মের/বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করে অবাধ বিচরণ। সবমিলিয়ে গোটা বাংলাদেশ যখন চরম সংকটের মধ্যে হাবুডুবু খাচ্ছে, তখন দেশকে এই চরম সংকটের হাত থেকে বাঁচাতে সরকার বাধ্য হয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। একের পর এক লক ডাউন ঘোষণা করেছে। স্কুল কলেজ মাদ্রাসা সহ সকল প্রকার সরকারি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে। যানবাহন, দোকান পাট সহ সকল প্রকার ব্যবসা বানিজ্য বন্ধ ঘোষণা করেছে। এর ফলে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে এসেছে। ব্যাপক হারে অর্থ এবং খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। ক্রমে ক্রমে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা অন্যান্য সকল প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হলেও দীর্ঘ এক বছরেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার অনুমতি মেলেনি।
২০২০ সালের শেষের দিকে দেশে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় সরকার যখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার চিন্তা ভাবনা করছে ঠিক সেই মুহূর্তে আফ্রিকা থেকে উৎপত্তি হয়ে আগের ভাইরাসের থেকে আরও দশগুণ বেশি ক্ষমতা সম্পন্ন অন্য আর একটি ভাইরাসের আবির্ভাব ঘটেছে! ফলে সরকার আবার একের পর এক লক ডাউন ঘোষণা করছে।
আর স্কুল কলেজ কবে নাগাদ খুলে দেওয়া হবে এমন কোন নিশ্চয়তা নেই।
ফলে বিপাকে পড়েছে ননএমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক কর্মচারী বৃন্দ। কারণ তাদের কোন সরকারি সাহায্য বা অন্য কোন প্রকার আয়ের ব্যবস্থা না থাকলেও টিউশনি করে বা শিক্ষার্থীদের থেকে সামান্য বেতন পেয়ে কোনো রকমে জীবন ধারণ করত।দীর্ঘ একবছর যাবৎ তাদের সেই নূন্যতম আয়ের উৎস টুকুও বন্ধ হয়ে গেছে।ফলে পরিবার পরিজন নিয়ে তারা চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়ে গেছে।
কারণ পকেটে টাকা না থাকলেও, পেটে খাবার না থাকলেও তাদের আত্মসম্মান বোধটুকু আছে।তারা কারো কাছে হাত পেতে সাহায্য চাইতে পারে না।
এমতোবস্থায় তাদের দিকে ফিরে তাকানোর কেউ নেই।
ফলে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে চরম দূর্দশা এবং হতাশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।এই চরম সংকট কবে নাগাদ শেষ হবে এই আশায় দিন গুনছে।
তারা আশা নিয়ে বসে আছে, আর কেউ না দেখুক
এমন দুর্দিনে সরকার তাদের পাশে দাঁড়িয়ে এই সমস্ত ননএমপিও শিক্ষক কর্মচারী বৃন্দকে এমপিও ভুক্তির আওতায় এনে পরিবার পরিজন নিয়ে স্বাভাবিক ভাবে বেঁচে থাকার নূন্যতম সূযোগ টুকু করে দিবেন!
ফাতিমা পারভীন
সহঃ শিক্ষক
ধোপাখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
সদর,যশোর।