আজহারুল ইসলাম মোহনগঞ্জ (নেত্রকোনা) প্রতিনিধিঃনেত্রকোনার মোহনগঞ্জে নিখোঁজের দুদিন পর রেজাউল করিম রাজিব (২২) নামে এক যুবকের হাত ও মুখ বাঁধা লাশ হাওর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে উপজেলার সুইয়ার ইউনিয়নের ভাটিয়া হাওরে শ্যামলী বাংলা নামে একটি ফিশারি থেকে রাজিবের লাশ উদ্ধার করে মোহনগঞ্জ মোটরসাইকেল স্ট্যান্ডের সভাপতিসহ অন্য সহকর্মীরা। পরে পুলিশে খবর দিলে সাড়ে আটটার দিকে ঘটনাস্থলে পৌছে লাশ বুঝে নেয়।
এর আগে বুধবার রাত এগারোটার পর থেকে রাজির খোঁজ পাচ্ছিলেন না বলে জানায় তার পরিবারের লোকজন।নিহত রাজিব মোহনগঞ্জের দেওথান গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে। ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন রাজিব। তার চার বছর বয়সি একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটকরা হলো- উপজেলার হাটনাইয়া গ্রামের রেজাউল করিম মোহন (৪০) , ভাটিয়া গ্রামের ৯নং ইউঃপিঃসদস্য আবুল কালাম (৪৫) ও আলীপুর গ্রামের শরীফ মিয়া (২৫)।
খবর শুনে নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) একেএম মনিরুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। মোহনগঞ্জ পৌরশহরে বিএনপি অফিস মোড়ে অবস্থিত মোটরসাইকেল স্ট্যান্ড সমিতির অন্তর্ভুক্ত হয়ে ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাতো রাজিব।
এই স্ট্যান্ডের সভাপতি মো. খোকন মিয়া জানান, 'গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে ভাটিয়া গ্রাম থেকে এক ব্যক্তি ফোনে জানায় ওখানে দোকানের কাছে একটি মোটরসাইকেল পড়ে আছে, সেটা আমাদের স্ট্যান্ডের কারো কিনা।
কিন্তু রাত ১১টার দিকে রাজিবের চাচাতো ভাই হিরা ফোন করে জানাল মোটরসাইকেল সহ রাজিবকে পাওয়া যাচ্ছে না। ওই সময়ই স্ট্যান্ড থেকে ১০/১২টা মোটরসাইকেল নিয়ে ভাটিয়া গ্রামে যাই । গ্রামের লোকজন জানায় গত রাতে ওই হাওরে অনেক চিৎকার চেঁচামেছি শোনা গেছে। একথা শুনে রাজিবের পরিবারের কয়েকজনসহ আমরা প্রায় ৩০-৩৫ জন মিলে হাওরে গিয়ে খুঁজতে লাগলাম।
এক পর্যায়ে তার জুতা পাওয়া গেল। কিছু সময় পর রক্তমাখা একটা ফুলহাতা গেঞ্জি পাওয়া যায়। কিন্তু লাশ পাওয়া যাচ্ছিল না। এক পর্যায়ে ওখানেই শুয়ে পড়ি সবাই। ভোরে আবার খোঁজাখুঁজি শুরু করি। সাড়ে ছয়টার দিকে একটি ফিশারিতে রাজিবের লাশ মিলে। এ সময় ভারী একটি সিমেন্ট ব্লক তার পিঠে, হাত মুখ বাঁধা অবস্থায় ছিল। খবর দেয়ার পর আদর্শনগর তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ অনেক অনেক ঢিলেঢালা ভাব নিয়ে সাড়ে আটটার দিকে পৌছায়। এ বিষয়ে মোহনগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ আবদুল আহাদ খান বলেন, লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হবে। এ ঘটনায় মামলা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে। সব দিক বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।