কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ বাবার হাঁসের খামার শিশুপুত্র রাব্বি (১২) দেখাশোনা করতো। শুক্রবার সকালে খামারের হাঁস নিয়ে বাড়ির অদূরে একটি বিলে গিয়েছিল বাবা-ছেলে। সঙ্গে কাপড়ে মোড়ানো পাত্রে দুপুরের খাবার। ছেলেকে হাঁস দেখাশোনার জন্য রেখে বাবা চলে যান অন্য কাজে। কিছুক্ষণ পরেই বিলের পাশের একটি ছোট ইউক্যালিপটাস গাছে খাবারের পাত্র মোড়ানোয় ব্যবহৃত কাপড়েই মেলে শিশু রাব্বির ঝুলন্ত মরদেহ। গাছে অনেকটা এলোমেলোভাবে লেখা 'আমার নাম রাব্বি, তোমাকে ভালোবাসি।'
শুক্রবার (৭ মে) দুপুরে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার চাকিরপাশা ইউনিয়নের পাউংলার দোলার একটি খালের পাশে ইউক্যালিপটাস গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় রাব্বির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। রাজারহাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাজু সরকার শিশু রাব্বির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শিশু রাব্বির বাবার নাম হারেছ আলী। তাদের বাড়ি ঘটনাস্থল থেকে প্রায় এক থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে চাকিরপাশা ইউনিয়নের অচিনগাছ এলাকার ছুটু গ্রামে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, প্রতিদিনের মতো রাব্বি তার বাবাসহ খামারের হাঁস নিয়ে বাড়ির অদূরে পাউংলার দোলার একটি খালের পাশে যায়। সেখানে রাব্বিকে হাঁস দেখার দায়িত্ব দিয়ে তার বাবা অন্যত্র চলে যান। কিছুক্ষণ পর স্থানীয়রা গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় রাব্বির মরদেহ দেখতে পায়। খবর পেয়ে তার বাবা ছুটে গিয়ে প্রিয় সন্তানের মরদেহ ঝুলতে দেখে জড়িয়ে ধরে রাব্বি রাব্বি বলে চিৎকার করতে থাকেন। প্রিয় সন্তানকে আদর করে গালে চুমু দিয়েই শোকে সঙ্গা হারান হারেছ আলী। পরে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে।
ওসি রাজু সরকার জানান, 'নিজের সঙ্গে নিয়ে যাওয়া খাবারের পাত্র মোড়ানোর কাজে ব্যবহৃত কাপড়ের টুকরোতে ঝুলন্ত অবস্থায় শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। যে গাছে শিশুটি ঝুলে ছিল সেই গাছে অগোছালো অক্ষরে লেখা 'আমার নাম রাব্বি, তোমাকে ভালোবাসি।' প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে শিশুটি কাউকে পছন্দ করার আবেগ থেকে আত্মহত্যা করে থাকতে পারে। তবে ময়না তদন্তের আগে কোনও কিছুই নিশ্চিত করে বলা সম্ভব হচ্ছে না।' এ ঘটনায় রাজারহাট থানায় একটি অপমৃত্যু (ইউডি) মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান ওসি।