বসুন্দিয়ায় (সদর,যশোর) মামলা দিয়ে হয়রানি ও খুনের হুমকির প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগীরদের সংবাদ সম্মেলন


মো: মুরাদ  হোসেন,বসুন্দিয়া, (সদর, যশোর) প্রতিনিধি:যশোর সদরের প্রেসক্লাব বসুন্দিয়া'য় মামলায় হয়রানি ও খুনের হুমকির প্রেক্ষিতে উবাইদুল ইসলাম মুন্না ও কয়েকজন ভুক্তভোগী নিরাপত্তা চেয়ে রবিবার (০২ নভেম্বর) দুপুর ১২টায়  সংবাদ সম্মেলন করে।সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্য বাট করে শোনান গাইদগাছি গ্রামের শরিফুল ইসলামের ছেলে উবাইদুল ইসলাম মুন্না । একাধিক মামলা ও প্রতিনিয়ত হত্যার হুমকি নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্য দিয়ে সাতজন ভুক্তভোগী সংবাদ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। 

সম্প্রতি রাজন শেখ, পিতা- রাজা শেখ, মিজানুর রহমান দুলু শেখ ও রাজার স্ত্রী পারুল বেগমের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। লিখিত বক্তব্যে উবাইদুল ইসলাম মুন্না বলেন আমি একজন মাছ ব্যবসায়ী, বসুন্দিয়া মোড়ে আমার একটি মাছের আড়ৎ রয়েছে । অভিযুক্তরা সকলেই গাইদগাছি গ্রামের। তারা আমাকে এবং আমার পরিবারকে একাধিক মামলা দিয়ে হয়রানি করছে এবং প্রকাশ্যে খুন-গুমের হুমকি দিচ্ছে । বর্তমানে আমি ও আমার পরিবার পরিজন অত্যন্ত ঝুঁকিতে দিন যাপন করছি। বিষয়টি গাইদগাছি গ্রামের এবং আমার প্রতিবেশীরা সকলেই অবগত আছেন। বিগত দিনে শাহিন চাকলাদারের বাহিনী প্রকাশ্যে আমাদেরকে হুমকি দিয়েছে বর্তমানেও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দিয়ে আমাদেরকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে আমি নিজের এবং পরিবার-পরিজনের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন । আমি আমার দাদা চাচাদের ৭৫ শতাংশ পরিমাণ জলাকারে বাৎসরিক নির্ধারিত টাকায় বর্গা নিয়ে মাছ চাষ করে আসছি লাম। যা ছিল আমার বাবা ও চাচা লালু শেখ এবং দুলু শেখের সম্পত্তির উপর। এই বর্গা এর মেয়াদ ছিল বাংলা চৈত্র মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত। গত ২৪ সালের চৈত্র মাসে মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নতুন চুক্তিপত্রের জন্য ৪০ হাজার টাকা চাচা লালু শেখের হাতে দিয়েছিলাম সকলকে দেওয়ার জন্য। সকলের প্রাপ্য টাকা নিলেও দুলু শেখ টাকা গ্রহণ না করে চুক্তি ভঙ্গ করে আমাকে মাছ চাষে বাধা দেন এবং তিনি আমাকে আর চাষ করতে দেবেন না বলে সাফ-সাফ জানিয়ে দেন। বিষয়টি নিয়ে কথা কাটাকাটি। ব্যাপারটি জটিল হয়ে গেলে বসুন্দিয়া ক্যাম্পের এএসআই আব্দুল আলিম এর উপস্থিতিতে একটি পারিবারিক সালিশি বৈঠক হয়। সেখানে দুলু শেখ পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল আলীমের সামনেই বড় ভাই লালু শেখ কে মারপিট করে।

এএসআই আব্দুল আলীমের সম্মুখে বসুন্দিয়া মোড় কদমতলা রনির দোকানের সামনে দুলু শেখ ও তার ছেলে রাজা শেখ আনোয়ার শেখ ও তার ছেলে আরফিনকে মারপিট করে। এই ঘটনায় আরিফিন জখম হয় এবং লালু শেখ কবির শেখ আনোয়ার শেখ আরেফিন শেখ এর নামে মামলা করে রাজার স্ত্রী পারুল বেগম। এ মামলায় সে আমাকেও আসামি করে, কিন্তু সেখানে আমি উপস্থিত ছিলাম না। দুলু শেখের বাড়ির পাশে আমাদের জমিতে চাষাবাদ এর কাজে আমরা যেতে পারিনা, আমার স্ত্রী কে কয়েকবার ধারালো দা নিয়ে তাড়া করা হয়েছে সে দৌড়ে প্রাণের বেঁচে এসেছে। দুলু শেখের ২টি হাঁস হারিয়ে যাওয়ার কথা বলে প্রতিবেশী সোহেল শেখ মুন্না শেখ সহ আরো কয়েকজনের প্রায় ৩০ থেকে ৩৫টি হাঁস বাড়িতে নিয়ে আটকে রাখে। বিষয়টি নিয়ে বেশ জটিলতার সৃষ্টি হয়। হাঁস নিতে আসা প্রতিবেশী মহিলাদের সাথে পারুল বেগম ও তার শাশুড়ি জাহানারা বেগম মারামারিতে লিপ্ত হয়। আমি সেখানে মারামারি থামানোর জন্য চেষ্টা করি। এই ঘটনায় পারুল বেগম আমার বিরুদ্ধে ২৯ অক্টোবর কোতোয়ালি থানায়  অভিযোগ করে। এই ঘটনায় বসুন্দিয়া পুলিশ ক্যাম্পের এএসআই স্বপন বিশ্বাসের উপর তদন্তভার আসে। ১৮ অক্টোবর এই বিষয়ে লোকজন সহ পুলিশ ক্যাম্পে দুপক্ষের উপস্থিতিতে সালিশি বৈঠক হয়। বৈঠকে সত্য বিষয় তুলে ধরতে গেলে বড় ভাই লালু শেখকে পুলিশ অফিসারদের উপস্থিতিতেই পরপর তিনবার জুতা নিয়ে মারার জন্য তেড়ে যায় অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করে। সে কারণেই আমাদের সকলকেই ক্যাম্প থেকে বের করে দেন।

গত ১৬ ই অক্টোবর কবির শেখের বাড়ির সামনে পিচের রাস্তার উপরে বাবু শেখ শাহাপুর হাটে গরু কিনতে যাওয়ার সময় দুলু শেখ ভ্যান যোগে যাওয়ার পথে আকস্মিক আক্রমণ করে তাকে মেরে রক্তাক্ত করে  তার মুখের উপরের দুইটি দাঁত এবং নিচের একটি দাঁত ফেলে দেয়। টানা হেচড়া করে বড় ভাইয়ের মুখের এক গোছা পাকা দাড়ি ছিঁড়ে ফেলে। রক্তাক্ত আহত অবস্থায় দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ ঘটনায় তার ছেলে রিয়াজুল বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় দুলু শেখ, রাজন শেখ এবং পারুল বেগম সহ কয়েকজনের নামে একটি মামলা করে। পুলিশ দুলু শেখকে গ্রেফতার করে নিলেও রাজন এবং পারুল বেগম বহিরাগত সন্ত্রাস এনে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করার চেষ্টা চালাচ্ছে, আমাকে, রিয়াজুল ইসলামকে সহ আমার পরিবারের সকলকে খুন-গুম ও জীবননাশের হুমকি দিচ্ছে। সার্বিক পরিস্থিতি ও নিরাপত্তার কথা ভেবে রাজন শেখ, পারুল বেগম ও মিজানুর রহমান দুলু শেখ এর নামে গতকাল ০১নভেম্বর রিয়াজুল ইসলাম কোতোয়ালি থানায় একটি অসাধারণ ডায়েরি করেছে। যার নম্বর- ৩১, তাং ০১/১১/২০২৫। আমরা এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। ব্যবস্থায় আমরা প্রশাসনের সহযোগিতা প্রার্থনা করছি। সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন আব্দুল্লাহ সিদ্দিক লালু শেখ, বাবু শেখ, আরফিন শেখ, আনোয়ার শেখ, রমজান আলী, রিয়াজুল শেখ, আব্দুর রশিদ, তুহিনুর রহমান।


সংবাদটি শেয়ার করুন
পূর্ববর্তী সংবাদ
পরবর্তী সংবাদ