ডা. মো. আব্দুস সালাম (শিপলু) :বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা স্বীকৃত বিশ্বব্যাপি নিজ যোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যত্য এবং রোগী আরোগ্যে বিপুল সফলতায় এগিয়ে যাচ্ছে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা বিজ্ঞানের আবিস্কারক ডা. স্যামুয়েল হ্যানিম্যান এর সদৃশ বিধান ভিত্তিক চিকিৎসা পদ্ধতি হোমিওপ্যাথি।
দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত ও পাকিস্থান হোমিওপ্যাথিতে সকল দিক দিয়ে অনেক এগিয়ে আছে।
বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ড এবং পরিচালক (হোমিও ও দেশজ চিকিৎসা) কর্তৃক বিধি-বিধান মোতাবেক নিবন্ধিত হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকগণ তাদের নামের পূর্বে ডা. (ডাক্তার) শব্দটি উপাধি হিসেবে ব্যবহার/লিখবার অধিকার সংরক্ষণ করেন। "দি বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক প্র্যাকটিশনার্স অর্ডিন্যান্স ১৯৮৩" এর ২৫, ২৬, ২৭, ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬ এবং ৩৭ নং ধারা মোতাবেক ডিএইচএমএস পাসকৃত সনদপত্র প্রাপ্তরা বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ড হতে নিবন্ধিত (চিকিৎসক পেশার রেজিষ্ট্রেশন সনদপত্র) ও বিএইচএমএস পাসকৃত এবং স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট নীতিমালা/সিদ্ধান্তের আলোকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর (হোমিও ও দেশজ) এএমসি কর্তৃক নিবন্ধিত (চিকিৎসক পেশার রেজিষ্ট্রেশন সনদপত্র) হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকগণ তাদের নামের পূর্বে, প্রেসক্রিপশন প্যাডে, ভিজিটিং কার্ডে এবং সাইন বোর্ডে ডা. (ডাক্তার) শব্দটি উপাধি হিসাবে ব্যবহার করতে/লিখতে পারবেন এবং হোমিওপ্যাথির নিয়মনীতি অনুযায়ী সর্বসাধারণের জন্য চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন। সামরিক সরকারের সময় জারি করা সকল আইন নতুন করে প্রণয়ন করে প্রয়োজনে সংযোজন করে সম্পূর্ণ বাংলায় করে পাস করে কার্যকর করার জন্য এ বিষয়ক বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা ও আদেশ এবং রায় আছে।
বাংলাদেশে আজ যদি ভারত ও পাকিস্তানের মত হোমিওপ্যাথি মেডিকেল কাউন্সিল থাকতো তাহলে মাঠ পর্যায়ে হোমিওপ্যাথি ডাক্তারগণ হয়রানির শিকার হতো না। পাশাপাশি সামাজিক মর্যাদা, চিকিৎসা শিক্ষার মান উন্নয়ন, সকলের উচ্চশিক্ষা, সরকারি ও বেসরকারিভাবে হোমিওপ্যাথি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, গবেষণা, সরকারি কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা দরকার। কিন্তু কারো কারো পদ, ক্ষমতা, দাপট কমে যাবে ও অবৈধ প্যারামেডিকেল/সর্ট কোর্স সার্টিফিকেট সিন্ডিকেট ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে বলে ২০১৩খ্রি. হতে বার বার সংশোধনের নামে নতুন পূর্ণাঙ্গ "বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শিক্ষা আইন (প্রস্তাবিত)" পাস হতে দিচ্ছেনা। ফলে নে আইনে লেখা "বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কাউন্সিল (বিএইচএমসি)" হচ্ছেনা। তার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় ব্যক্তিগত স্বার্থের নিকট বৃহত্তম সমষ্টিগত স্বার্থ পরাজিত।
স্থায়ী সমাধান ও হোমিওপ্যাথির উন্নয়নে করণীয় :
দ্রুত "বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শিক্ষা আইন (প্রস্তাবিত)" পাস করা ও সে আইন অনুযায়ী "বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কাউন্সিল" গঠন করা।
পাশাপাশি "স্বাস্থ্য সেবা ও সুরক্ষা আইন (প্রস্তাবিত)" পাস করা। তাহলে এধরনের কোন সমস্যা ভবিষ্যতে থাকবেনা। হোমিওপ্যাথির সার্বিক উন্নয়ন হবে।
বাংলাদেশের হোমিওপ্যাথরা মনে করে বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শিক্ষা আইন দ্রুত পাস করা ও সে হোমিওপ্যাথিক আইন অনুযায়ী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কাউন্সিল গঠন করতে পারলে অবৈধ প্যারামেডিকেল কোর্স ও সর্ট কোর্সের নামে হোমিওপ্যাথিক সার্টিফিকেট ব্যবসা এবং এসব সার্টিফিকেটধারী হোমিওপ্যাথিক নামধারী ডাক্তার খানা বন্ধ হবে। সে সঙ্গে হোমিওপ্যাথিক নতুন আইন পাস হলে বাংলাদেশ সরকার স্বীকৃত আন্তর্জাতিক পর্যাযের শুধুমাত্র ২টি বৈধ কোর্স আছে যা ডিএইচএমএস ও বিএইচএমএস কোর্স এবং এ কোর্সে পাস করে রেজিষ্ট্রেশন সনদপত্রধারী হোমিওপ্যাথ ডাক্তারদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে।
তাছাড়া ভারত, পাকিস্থান সহ অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশে হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা হলে বাংলাদেশ সরকার স্বীকৃত আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ডিএইচএমএস ও বিএইচএমএস কোর্সে পাসকৃত হয়ে রেজিষ্ট্রেশন সনদপত্র প্রাপ্তদের নিজ নিজ ডাক্তারের ছবি, নাম, পিতার নাম, ঠিকানা, পাসকৃত ডিগ্রির নাম, রেজিষ্ট্রেশন সনদপত্র নম্বর সকলের সুবিধার্থে হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কাউন্সিলের ওয়েবসাইডে থাকবে। তখন যে কেউ নিজ ব্যবহারকৃত মোবাইল দিয়ে ওয়েবসাইডে প্রবেশ করে তথ্য জানতে পারবে যদি সরকার স্বীকৃত ডিএইচএমএস ও বিএইচএমএস ডিগ্রি মধ্যে কে পাসকৃত হয়ে রেজিষ্ট্রেশন সনদপত্র প্রাপ্ত ডাক্তার ও কে কে ভুয়া ডাক্তার এবং পাস না করে বা রেজিষ্ট্রেশন সনদপত্র না নিয়ে মিথ্যা পরিচয় বা ডিগ্রি লিখে ডাক্তারী করে প্রতারিত করছে।
ডা. মো. আব্দুস সালাম (শিপলু) সহ তার পরিবার বিশ্ববিদ্যালয় হতে জেনারেল শিক্ষায় উচ্চ ডিগ্রিধারী। পাশাপাশি পরিবারের সকলে সরকার স্বীকৃত হোমিওপ্যাথি ডিগ্রিধারী ও বংশ পরস্পরায় হোমিওপ্যাথ এবং পরিবারে রক্তে মিশে আছে হোমিওপ্যাথি। হোমিওপ্যাথির প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ও দরদ এবং ভালবাসা।
এগিয়ে যাক বাংলাদেশ ও সঠিকভাবে এগিয়ে যাক হোমিওপ্যাথি।
(তথ্যসূত্র ও মতামত)
==================================
লেখক পরিচিতি :
ডা. মো. আব্দুস সালাম (শিপলু)।
ডিএইচএমএস (রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল)
এমএসএস (এশিয়ান ইউনিভার্সিটি)
গভ. রেজিষ্টার্ড হোমিওপ্যাথ
সভাপতি/প্রধান সমন্বয়ক,
বাংলাদেশ ডিএইচএমএস (হোমিওপ্যাথি) চিকিৎসক, শিক্ষক, শিক্ষার্থী অধিকার পরিষদ। কেন্দ্রীয় কমিটি, বাংলাদেশ।
(চিকিৎসক, শিক্ষক, হোমিওপ্যাথি নেতা, শিক্ষক নেতা, কলামিস্ট ও প্রাক্তন সাংবাদিক