নিজস্ব প্রতিবেদক :: মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার হরিরামপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে ঐতিহ্যবাহী খেলার মাঠ জবরদখল নিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে সংবাদ প্রচার এবং মাঠ বাঁচাতে জুড়ীর সাবেক ও বর্তমান খেলেয়ারদের পালিত মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়েছে। এসকল সংবাদ ও মানবন্ধন কর্মসূচীতে ভূমিখেকোদের হাত থেকে মাঠটি রক্ষা করতে স্থানীয় রাজনীতিবিদ ও সর্বস্তরের ক্রীড়াপ্রেমীদের নানা বক্তব্য সামাজিক মাধ্যমে উঠে এসেছে। গত ৩রা ডিসেম্বর থেকে এ বিষয়টি স্থানীয় মহলে গুরুত্বের সাথে আলোচনা হচ্ছে। মাঠের জায়গা ও মালিকানা নিয়ে অনেক বিষয় ইতিমধ্যে পরিষ্কার হওয়া গেলেও কিছু বিষয় এখনও আমাদের কাছে জটিল মনে হয়েছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে জুড়ী হরিরামপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি, পশ্চিম জুড়ী ইউপি অাওয়ামীলীগ এর সাধারণ সম্পাদক জুবের হাসান জেবলু-কে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে তিনি স্কুলের ইতিহাস ঐতিহ্য ও বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে অনেক কথা তুলে ধরেন। তারই চুম্বক অংশ নীচে তুলে ধরা হলো-
বক্তব্যের শুরুতে জুবের হাসান জেবলু বলেন, 'মাঠ কেটে স্কুলের জায়গায় মাটি ভরাটের সাথে অামি জড়িত নই। কতিপয় বক্তা মানববন্ধনে বলেছেন স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতির নেতৃত্বে মাঠের মাটি কেটে স্কুলের জায়গা ভরাট হচ্ছে তাদের এই বক্তব্যকে অামি অস্বীকার করছি ও অামার বিরুদ্ধে মিথ্যা দোষারোপের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আপনারা জানেন জুড়ীর অন্যতম প্রাচীন একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় যেটি ১৯৩৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে শ্রদ্ধেয় নেতৃবৃন্দের হাত ধরে মাটির ঘর থেকে অাজকের পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। মানববন্ধনে স্কুলের মাঠ বাঁচাতে পশ্চিম জুড়ীর সাবেক চেয়ারম্যান শ্রদ্ধেয় মইন উদ্দিন মইজন সাহেব ও উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ মোঈদ ফারুক সাহেবের প্রতিবাদকে অামি সম্মান করি এবং তাদের প্রতিবাদ ও দাবীর সাথে অামার কোনো দ্বিমত নেই। কিন্তু মাঠটি যদি এতদিনে সরকারী স্কুলের নামে নামজারি হয়ে যেত তাহলে অার কথা ছিলনা। এখনো কেন এতদিনে মাঠটি স্কুলের নামে রেজিস্ট্রি হলো না সেটা অামার জানা নেই। অামার এখতিয়ার শুধু স্কুলের ওপর, অার স্কুলের নামে জায়গা মাত্র ৩৫ শতক। যার কিছু অংশ মাঠের দিকে পড়েছে। নীচু জমির কারণে প্রতিবছর বর্ষায় কয়েক মাস মাঠসহ স্কুলের অাঙ্গিনা প্রায় পুরোটা বন্যায় প্লাবিত হয়, যার কারণে স্কুলের বাচ্চারা পিটি করতে পারে না। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সারা বাংলাদেশের প্রতিটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্দিকে সরকারী দেয়াল থাকলেও মাঠের কারণে অামাদের স্কুলে শুধু একদিকে দেয়াল করা হয়েছে। মাঠের একপাশ দিয়ে রয়েছে রেলব্রীজ ও পানি নিষ্কাশন খাল। অামিও চাই মাঠের ভূমি নিয়ে জটিলতা শেষ হোক। স্কুলটি অারো সুন্দর হয়ে উঠুক। শহরের নিকটস্থ একাধিক কেজি স্কুল থাকার কারণে সামর্থ্যবান পরিবারের বাচ্চারা প্রাইমারিতে ভর্তি হয় না, অামার স্কুলের বাচ্চারা বেশীরভাগ দরিদ্র পরিবার থেকে অাসে।'
এছাড়া তিনি উল্লেখ করেন, যখনই স্কুলের কোনো উন্নয়ন কাজে হাত দেয়া হয় তখনই একটি মহল এসব কাজে বাঁধা দিয়ে উন্নয়ন ব্যাহত করে। তাই তিনি প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগীতায় বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তির মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী এ স্কুলটিকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবার অাহবান করেন।
উল্লেখ্য, জুবের হাসান জেবলু জুড়ী বড়লেখা অাসনের সাবেক এমপি, ৭২ এর জাতীয় সংবিধানে সাক্ষরকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম তৈমুছ অালীর জেষ্ঠ পুত্র।
(খেলার মাঠ দখল নিয়ে চলমান বিবাদে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতির প্রতিক্রিয়া)