যুবলীগ নেতা হত্যা মামলায় পুলিশের খাতায় পলাতক থাকলেও প্রকাশে ঘুরে বেড়ান ইউনিয়ন চেয়ারম্যান

খোন্দকার আব্দুল্লাহ বাশার,খুলনা ব্যুরো প্রধান:২০১১ সাল থেকে তিনি পলাতক। হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে একের পর এক গ্রেফতারি পরোয়ান জারি হলেও তিনি পলাতক থাকায় আজ পর্যন্ত পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি। অথচ পলাতক থেকে তিনি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছে। করছেন মাদক, সন্ত্রাস বিরোধী সমাবেশ। ভাস্কর্য ভাংচুরের প্রতিবাদে করছেন প্রতিবাদ সমাবেশ। যেখানে অংশ নিচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। জেলা পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা। আইনের চোঁখে বছরের পর বছর পলাতক থাকলেও বীরদর্পে ঘুরছেন এলাকায়। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে নির্বাচন করে জয়ী হয়ে চালাচ্ছেন পরিষদ। এত সবের পরও তিনি পেয়েছেন কমিউনিটি পুলিশিংয়ের জেলার শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যানের পুরস্কার। জানা জানি হওয়ার পর যা হতবাক করেছে জেলার সর্বস্তরের মানুষকে। তিনি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন মালিতা।
অথচ দীর্ঘ ১০ বছর পেরিয়ে গেলে হত্যার বিচার না পাওয়ায় হতাশা বিরাজ করছে নিহত যুবলীগ নেতার পরিবারে।
জানা যায়, ২০১০ সালে ৭ জুলাই সন্ধ্যায় ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না বাজার থেকে কাশিমনগর বাড়ি ফেরার পথে খালের ব্রীজের উপরে বোমা হামলায় মারাত্বক আহত হন গান্নার তৎকালিন ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক জাকির হোসেন মন্ডল শান্তি। এর ৩দিন পর ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এ ঘটনায় ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি বিস্ফোরক ও আরেকটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের শশুর সিরাজুল ইসলাম মালিতা। ঘটনার সাথে জড়িত ৮ আসামীকে পুলিশ গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্য থেকে ৪ আসামী নাসির মালিথার অর্থায়নে যুবলীগ নেতাকে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। মামলার ৯নং আসামি হয়ে যান নাসির মালিতা। এরপর ২০১১ সালের ২৪ অক্টোবর মামলার চার্জসীট জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। তাতেও চেয়ারম্যান নাসির মালিতাসহ ১১জনকে অভিযুক্ত করা হয়। আদালতে চার্জসীট জমা হলে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করে বিচারক। সেই থেকে চেয়ারম্যান নাসির মালিতাসহ ৪ আসামী পলাতক। এ ব্যাপারে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। কিন্তু এর মধ্যে নাসির মালিথা কুটকৌশল অবলম্বন করে ভুয়া রিকল থানায় জমা দিয়ে পার পেয়ে যান। বিষয়টি বর্তমানে ঝিনাইদহ অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের নজরে আসলে নতুন করে দুটি মামলায় পলাতক আসামীদের বিরুদ্ধে পুণরায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।
দীর্ঘ ১০ বছরে হত্যা মামলা বিচার না পেয়ে হতাশা বিরাজ করছে ভুক্তভোগি পরিবারের মাঝে। মামলার বাদি সিরাজুল ইসলাম মালিতা বলেন, এত বছর হয়ে গেল। আজও হত্যার বিচার হলো না। চেয়ারম্যান নাসির পলাতক দেখিয়েছে। কিন্তু সে নির্বাচন করলো। নির্বাচনে জিতল। এলাকায় এখনও ঘুরে বেরাচ্ছে। আমি দ্রুত এ হত্যার বিচার দাবী করছি।
এ ব্যাপারে মামলার পলাতক আসামী চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন মালিথার বলেন, হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে বাদী পক্ষের সাথে ওই সময় মামলাটি আপোস মিমাংসা করি। আমি পলাতক নয় এবং এটি আমার বিরুদ্ধে নতুন করে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে সদর থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমার জানা নেই। তবে খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি

সংবাদটি শেয়ার করুন
পূর্ববর্তী সংবাদ
পরবর্তী সংবাদ