প্রশাসনের অবহেলা- বদলগাছীতে রাতের আঁধারে নদীতে বিষ প্রয়োগে মাছ শিকার

রহমতউল্লাহ, নওগাঁ প্রতিনিধিঃ  নওগাঁর বদলগাছীতে ছোট যমুনা নদীতে বিষ প্রয়োগ করে মাছ শিকারের অভিযোগ উঠেছে। এবিষয়ে মৎস্য কর্মকর্তা ও পুলিশ প্রশাসনকে অভিযোগ করেও কোনো লাভ হয়নি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। 

ঘটনাটি ঘটেছে ছোট যমুনা নদীর মথুরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনের জাবারীপুর অংশের নদীর দহে। স্থানীয় জেলে হারুন আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন, নদীর মাছ বিক্রি করে আমাদের সংসার চলে। কিন্তু বিষ দিয়ে সব মাছ মেরে ফেলায় আমার পক্ষে সংসার চালানো এখন কঠিন হয়ে পড়বে। 

এলাকাবাসী মথুরাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হাদি চৌধুরী টিপুকে অভিযোগ করলে তিনি জানান, আমি এ বিষয়ে মাথা দিব না। ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হাদি চৌধুরী টিপু সাংবাদিকদের জানান, বিকালে বসে বিষয়টি মিমাংসা করে আপনাদের জানাবো। 

বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানা যায়, রাত আনুমানিক সাড়ে ১২ টার দিকে দুর্বৃত্তরা ছোট যমুনা নদীর জাবারীপুর দহে বিষ প্রয়োগ করে ১০ থেকে ১২ জন লোক মাছ শিকার করছিল। স্থানীয় গ্রাম পুলিশ আব্দুল আলিম তাদের ধরতে গেলে অধিকাংশই পালিয়ে যায়। কিন্তু সুমন নামে একজন তার হাতে ধরা পরে। 

গ্রাম পুলিশ আব্দুল আলিম বলেন, দুর্বৃত্তরা মাঝে মাঝেই আমাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে বিষ প্রয়োগ করে মাছ শিকার করে। আমরা নিয়মিত পাহাড়া দিয়েও ধরতে পারিনি। কিন্তু আজ রাতে তাদের ধরে ফেলি। ১০ থেকে ১২ জন ছিল। অধিকাংশই পালিয়ে গেলেও জাহিদুলের ছেলে সুমনকে ধরে ফেলি। সুমন স্বীকার করে তার সাথে মোজাম্মেল, ছালাম, বাদেশ, মিলন, ইদ্রিস ও সানোয়ার ছিল। সুমন জানায়, মোজাম্মেলের নেতৃত্বেই তারা বিষ প্রয়োগ করে। 

গ্রাম পুলিশ আরো জানায়, থানায় জানানো হয়েছে, মৎস অফিসেও জানিয়েছি। কিন্তু কেউ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বাধ্য হয়ে সাংবাদিকদের ফোন দিই। একারণে স্থানীয় মুনির উদ্দিনের ছেলে মোজাম্মেল ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যানের সামনে দাঁড়িয়ে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। 

বদলগাছী থানার এস আই মনোয়ার হোসেন বলেন, একজন গ্রাম পুলিশ আমাকে ফোন করেছিল। কিন্তু পরবর্তীতে তারাই আবার ফোন করে জানায় যে তারা নিজেরা মিমাংসা করে নিবে। তাই আমি আর অগ্রসর হইনি। 

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম বলেন, বিষ প্রয়োগ করে মাছ শিকার করা গুরুতর অন্যায়। এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। কিন্তু স্থানীয় চেয়ারম্যান আগেই মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়ায় আমার আর কিছু করার নেই। তবে একটি সাধারণ মামলা করা যেতে পারে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসা.আলপনা ইয়াসমিন বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে আমি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

সংবাদটি শেয়ার করুন
পূর্ববর্তী সংবাদ
পরবর্তী সংবাদ