শার্শা উপজেলার নাভারনে ফ্রি খাবার বাড়ির প্রকৃত মালিক কে?

আব্দুল জব্বার, স্টাফ রিপোর্টার।।যশোরের শার্শা উপজেলার নাভারনে উদ্ভাবক মিজানুর রহমান মিজান সম্পর্কে আপনারা জেনেছেন নানা তথ্য। মিজানের মানব সেবার সব থেকে বড় অস্ত্র হলো ফ্রী খাবার বাড়ি। যার স্লোগান ক্ষুধা লাগলে খেয়ে যান, আজ এই খাবার বাড়ির সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য থাকছে এবারের প্রতিবেদনে।

মোঃ বাদল হোসেন বাদল নার্সারির স্নাতাধিকারী
এবং তিনি ১৯৯৪ সালের জানুয়ারী ১ তারিখ থেকে বুরুজবাগান পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের নৈশ‍্য প্রহরীর চাকরি করেন। তখন থেকেই তিনি স্কুলের পাশে ছোট একটা চালা করে, গরিব-দুঃখী মানুষদের খাবার খাইয়ে আসছেন আজ অবদি।

তবে গত এক বছর যাবত মিজান তার এই খাবার বাড়ির সাথে যুক্ত হয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে দাবি করেন। গত শুক্রবার তদন্তের স্বার্থে নাভারন ফ্রি খাবার বাড়ি গেলে দেখা যায়, বাদল হোসেন খাবার খেতে আসা মানুষদের খাওয়াচ্ছেন। তার কাছে আমরা জিজ্ঞেস করি, আজ কত জনের রান্না হল তিনি বলেন, ৮কেজি চাল রান্না করেছি ৮০-৯০ জন লোক খাবে। খিচুড়ি রান্না হয়েছে যতক্ষণ থাকবে ততক্ষণ খাবে। এর কিছু সময় পর সেখানে হাজির হন মিজানুর রহমান, তার কাছে খাবার বাড়ির সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি খাবার বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা এবং বাদল ভাই পরিচালক।

আজ কতটুকু খাবার রান্না হইছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আজ ২০০ শতজন লোকের খাবার রান্না হয়েছে, অলরেডি প্রায় ১০০ শতজন লোকের খাওয়া হয়ে গেছে। তাতে বুঝা গেল লোক বাড়িয়ে মানুষের মাঝে প্রকাশ করা তার একটা ব্যবসা। 

এই বিষয়ে বাদল হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ২৭ বছর যাবৎ নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী ৪-৫ জন আবার মাঝেমাঝে ১০-২০ জন মানুষকে আমি প্রতিনিয়ত খাবার খাইয়ে আসছি। কখনো কারোর কাছে প্রকাশ করিনি কারণ দান করা নিয়ম হচ্ছে এক হাতে দান করলে অন্য হাত যেন না জানে। আমার এই ফ্রি খাবার দেওয়া দেখে মিজান ভাই বলে আমিও তো খাবার খাওয়াই মানুষকে তা চলো আমরা একসাথে কাজ করি। তারপর সে নিজে ব্যানার ট‍্যানার বানিয়ে বহু সাংবাদিক এনে এলাহি কান্ড শুরু করে দেছে, যা আমার মোটেও পছন্দ না। তার কথা-কাজে কোনো মিল পায়নি। তাকে বহুবার বলেছি খাবার বাড়ির একটা কমিটি তৈরি করতে কিন্তু তিনি কারোর কথার দাম দেননা, বলেন আমার কারোর হিসাব দেওয়ার সময় নেই। ফ্রি খাবার বাড়ির জন্য নানান জায়গা থেকে টাকা আসে কিন্তু তিনি আমাকে কিছুই বলেন না বরং ফোনে কারো সাথে টাকার কথা হলে তিনি অন্যদিকে চলে যান। সপ্তাহে এই খাবার বাড়ির জন্য তিনি আমাকে ১৪০০ শত টাকা করে দেন আর চাউল তো বহু মানুষ দেয়, চাউল এর কোন অভাব নেই। এই খাবার বাড়ির নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা আসে, কিন্তু এই বাটপার তা কি কাজে ব্যবহার করে তা কিছুই আমাকে বলে না। সে একবার মানুষকে খায়য়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি সাড়ে তিন বার। যেটা আমার মোটেও পছন্দ না। তবে আমি চাই আমার ২৭ বছরের সাধনার ফ্রি খাবার বাড়ি যেন বন্ধ না হয়। পারলে আপনারা সবাই মিলে একটা কমিটি করে দিয়ে এটা চলার ব্যবস্থা করে দিয়েন।

মিজান সম্পর্কে শার্শা উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সিরাজুল হক মঞ্জুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমিও তার সম্পর্কে নানা অভিযোগ পাচ্ছি। সঞ্চিতার চিটারি বাটপারির কথা। তবে আমি আর কি পদক্ষেপ নেব প্রশাসন আছে তারাই ব্যবস্থা নেবে অভিযোগ পেলে।
খাবার বাড়ি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য থাকছে আগামী পর্বে।

সংবাদটি শেয়ার করুন
পূর্ববর্তী সংবাদ
পরবর্তী সংবাদ