![]() |
প্রতীকী চিত্র, উৎসঃ ইন্টারনেট |
মাগো তোমার একটি ছেলে মাদ্রাসাতে দিও,
দুনিয়ার জীবনে তুমি জান্নাত কিনে নিও।"
গানটা শুনলে প্রাণটা জুড়িয়ে যায়। আসলে মাদ্রাসাতে ছেলে মেয়ে দিলেই জান্নাত পাবার প্রতিশ্রুতি আমাকে আবেগে উদ্বেলিত করে, আপ্লুত করে, আমি কতটা ক্ষতিগ্রস্থ তা পরিমাপ করতে সহায়তা করে।
আমার চার ছেলে মেয়ে। দুঃভাগ্য জনকভাবে কোন একটি সন্তানকেও মাদ্রাসাতে দিতে পারিনি। ছোট ছোট শিশুরা যখন পাগড়ী পরে নুরানী চেহারা নিয়ে রাস্তা দিয়ে যায় তখন ঐ গানটি মনে হয়।
ভুলটা অনেক বড়। কি করবো এখন?
আমি অন্য দিকে দৃষ্টি দেব এখন! আমাদের দেশে মাদ্রাসা শিক্ষার বেশ কয়েক টি ধারা প্রচলিত।
১) আলিয়া নেসাব,
২) কওমী নেছাব,
৩) হিফয।
আলিয়া পদ্ধতিতে,
শিশু শ্রণি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ শ্রেণি পর্যন্ত তাদের পড়ালেখার সুযোগ আছে। যদিও অনেক বিশ্ববিদ্যালয় তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। তাদের নিজেদের কামিল শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করা যায়, যা মাস্টার্স সমতুল।
আলিয়া পদ্ধতিতে এই গান গাইতে শুনিনি। কওমী পদ্ধতিতে দাউরা হলো শেষ ধাপ। এই পদ্ধতিতে দাওরা মাস্টার্স সমমান। বর্তমান সরকারের দয়া ও দাক্ষিন্যে প্রাপ্ত। কওমী পদ্ধতি আগে জনগনের দয়া ও দাক্ষিন্যে চলতো। সরকারের এমপিও পদ্ধতির কথা জানিনে।
হিফজ হল কুরআন মুখস্থ করা। শিশুরা সুন্দর সুর করে কুরআন মুখস্থ করে। খুব ভাল লাগে।
যে মাদ্রাসাতে সন্তান দিলেই পিতামাতা জান্নাত পাবে, তাদের শিক্ষাজীবনের শুরুতেই অন্যের দ্বারে দ্বারে পাঠানো কি ঠিক! আমরা আমাদের সব সন্তানকে কেন কুরআন মুখস্থ করার ব্যবস্থা করব না?
দেশের প্রচলিত পদ্ধতিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক না থাকায় অনেক ক্ষেত্রে হিন্দু বা অন্য ধর্মের শিক্ষক দিয়ে মুসলিম শিশুদের ইসলামী শিক্ষা দেওয়া হয়।
মুল কথা হল ধর্মীয় শিক্ষক নিযোগের মাধ্যমে ইসলামী শিক্ষার ব্যবস্থা করা দরকার। যা বলছিলাম, যে শিশুর জীবন শুরু ভিক্ষার মত আয়ের পথে। তাকে দিয়ে কোন বড় কাজ হবে জীবনে।
আল্লাহ দাতার হাত পছন্দ করেন। গ্রহিতার হাত নয়। আমরা মুসলিম শিশুদের পরিকল্পিত ভাবে ভিক্ষান্ন গ্রহনের সুবিধা থেকে সরিয়ে আনতে পারি কিনা?
গোলাম মোস্তফা, প্রধান শিক্ষক (অবঃ)