সিরাজগঞ্জ পৌরসভার রাণীগ্রাম ও কোবদাসপাড়ায় বালু বাহিত পানি দ্বারা জলাবদ্ধতা, জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা


মাসুদ রানা বাচ্চু সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃসিরাজগঞ্জ পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের রানীগ্রাম ভাটা ও কোবদাসপাড়ায় বালু বাহিত পানি দ্বারা জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা পেতে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) এলাকাবাসীর পক্ষে সিরাজগঞ্জ পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হোসেন আলী লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের রানীগ্রাম ও কোবদাসপাড়া এলাকায়  যমুনা নদী থেকে প্রতিবছর বালু উত্তোলন করে  স্তুপ করে রাখা হয়। উত্তোলিত বালু ড্রেজারের পাইপের মাধ্যমে স্তুপ করার কারণে বালু বাহিত পানি দ্বারা রাণীগ্রামের ভাটা এলাকা ও কোবদাসপাড়ায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।

 সারাবছর বালু বাহিত পানি আসায় শুস্ক মৌসুমেও জলাবদ্ধতা হয়ে বন্যার আকার ধারণ করে। রাণীগ্রাম ভাটা এলাকায় জনসাধারণ সারা বছরই জলাবদ্ধতার কারণে পানি নিচে নিমজ্জিত হয়ে বসবাস করে। পাানি নিচে নিমজ্জিত হওয়ার কারণে রাণীগ্রাম ও কোবদাসপাড়া জনসাধারণ সুনাগরিক হিসেবে নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এছাড়াও বালু পরিবহনের পাইপ বিভিন্ন জায়গায় থাকার কারণে রাস্তার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও জনসাধারণ চলাচল  ও যানবাহনের চলাচল প্রতিনিয়ত বিঘ্ন ঘটছে। সারাদিন বালু পরিবহনের কারণে ট্রাকের ধুলায় জনসাধারণ প্রতিনিয়ত চোখে ধুলাবালি লাগছে। ধুলাবালির কারণে শাসকষ্ট, চোখের সমস্যা, এ্যাজমা  রোগ সহ প্রতিদিন নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে ৭নং ওয়ার্ডবাসী। এমতাবস্থায় সারাবছরই রাণীগ্রাম ও কোবদাসপাড়ায় যমুনা বালু স্তুপ করা ও বালু পরিবহনের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছে পৌরসভা ৭নং ওয়ার্ডবাসী।

 অভিযোগ সুত্রে আরও জানা যায়,  ৭নং ওয়ার্ডের রাণীগ্রাম লেবুর মোড় থেকে রাণীগ্রাম ক্লোজার পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ রয়েছে। এই শহর রক্ষা বাঁধটি প্রশস্ত প্রায় ৫ মিটার এবং খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু বর্তমানে বালু খেকো বদরুল আলম বালু স্তুপ করে রাখার জন্য শহর রক্ষা বাঁধের উপর দিয়ে পাইপের মাধ্যমে বালু পরিবহনের জন্য ৫টি জায়গায় শহররক্ষা বাঁধের সাথে ৫টি ড্রেজার স্থাপন ও বাঁধের উপর দিয়ে পাইপ স্থাপন করছে। বালু ব্যবসায়ীরা এভাবে পাইপ বসানোর ফলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে বাঁধটি। আসন্ন মৌসুমে নদীর পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যে কোনো মুহূর্তে বাঁধটি ভেঙ্গে রাণীগ্রাম-কোবদাসপাড়ার মধ্যে দিয়ে সিরাজগঞ্জ শহর সহ সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন বন্যায় প্লাবিত হবে। রাণীগ্রাম ও কোবদাসপাড়ার মধ্যে দিয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করলে  ওয়ার্ডের জানমাল সহ জনসাধারণের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হবে। এছাড়া রাস্তা (বাঁধ) কেটে বালুর পাইপ স্থাপন করছে প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ীরা। এতে করে সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ দিয়ে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। বৃষ্ট হলে কাদা পানিতে চরম দূর্ভোগে পড়বে গ্রামবাসী। আবার কারও কারও ঘরের মধ্য দিয়ে জোর করে বালু পাইপ নেওয়া হচ্ছে কিন্তু তারা ভয়ে তারা কিছু বলতে পারছে না।এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রণজিৎ কুমার সরকার জানান,অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। শহর রক্ষা বাঁধের উপর দিয়ে বালুর পাইপ নেওয়া হচ্ছে। পাইপ গুলো অপসারন করার জন্য বালু ব্যবসায়ীদের সাবধান করে দিয়েছি। দ্রুত পাইপ অপসারণ না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, এ সংক্রান্ত কোন অভিযোগ এসেছে কিনা খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা নেওয়া হবে। 


সংবাদটি শেয়ার করুন
পূর্ববর্তী সংবাদ
পরবর্তী সংবাদ