কেশবপুর (যশোর)সংবাদদাতা : কেশবপুর উপজেলার বিস্তৃত ফসলের মাঠ জুড়ে হলুদের সমারোহ। শীতের সকালে কুয়াশার চাঁদরে মোড়ানো সোনালী রোদের উষ্ণতায় মৌমাছিরা মধু আহরণে গুঞ্জন তুলছে সরিষা খেতে। সরিষা ফুলের গন্ধে বিভোর সারামাঠ। সয়াবিন ছেড়ে এ উপজেলার মানুষ সরিষার তেলের দিকে ঝুঁকে পড়ায় জনপ্রিয়তা বেড়েছে সরিষার তেলের। সরিষার বাজার দর ও ফলন ভালো হওয়ার আশায় প্রহার গুনছে কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি বছর সরকারিভাবে এ উপজেলায় ২ হাজার ১ শত জন কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে সরিষার বীজ ও সার বিতরণ করা হয়। সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১ হাজার ৫৭০ হেক্টর জমি। কিন্তু এ উপজেলার মানুষ সয়াবিন ছেড়ে সরিষার তেলে ঝুঁকে পড়ায় সরিষার দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষকও ভালো দামের আশায় বিনা চাষে সরষিা আবাদের পাশাপাশি চাষ দিয়েও সরিষার আবাদ করেছেন। যে কারণে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ২ হাজার ৭৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ৫০৫ হেক্টর জমি বেশি। কৃষকরা জানায়, চলতি আমান মওসুমে মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে আগাম ভারী বৃষ্টিপাত হয়। যে কারণে অধিকাংশ নিন্মাঞ্চলের বিলে এবার আমন ধান আবাদ হয়নি। কিন্তু মৌসুমী বায়ুর শেষদিকে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় বিলগুলো পানি শূন্য হয়ে পড়ে। বোরো আবাদের আগেই এসব জমিতে কৃষকরা বিনাচাষে সরিষার আবাদ করেন। আবার উঁচু জমির কৃষকরা চাষ দিয়ে সরিষার আবাদ করেন। যে কারণে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যায়।
সরিষার বিভিন্ন জাতের মধ্যে এবার মাঠে বারি সরিষা- ৯, বারি সরিষা-১৪, বারি সরিষা-১৭, বারি সরিষা-১৮, বীনা সরিষা-৯ ও টরি -৭ জাতের সরিষার আবাদ হয়েছে সবচেয়ে বেশি। উপজেলার বারুইহাটি গ্রামের কৃষক আব্দুল জলিল, আমিনুর রহমান জানান, তারা প্রতিবছর সরিষার চাষ করে থাকেন। আবাহাওয় ভালো থাকায় এবছর সরিষার ভালো ফলন আশা করা হচ্ছে। প্রতি বিঘায় ১৫থেকে ২০ হাজার টাকার সরিষা বিক্রি করা যাবে বলে তারা আশাবাদী। সরিষার বাজার দামও বেশি এজন্য তারা খুশি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন বলেন, সরিষার আবাদ বাড়াতে এবছর সরকারিভাবে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সরিষার বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে কৃষকরা ভালো ফলন পাবেন। সরিষার বাজার দরও ভালো।