নিজস্ব প্রতিবেদক : গতকাল ২৯ মে জুম্মার নামাজের পর রাধানগর খাজার বাজারে প্রায় ৭/৮ শত মানুষের সমাগম ঘটানোর অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দীন মোল্লার নামে।
এ বিষয়ে দোহার থানার ইউএনও আফরোজা আক্তার রিবা বলেন মানুষের সমাগম করে তারা সালিশ করতে চেয়েছিল। কিন্তু আমরা তা করতে দেই নাই। যদি কোন কিছু হয় তাহলে আমি দুই পক্ষের দুই জন কে ডেকে নিয়ে সমাধান করার চেষ্টা করব। কি হয়েছে তা আমি নিজের কানে শুনব মানুষের মুখের কথায় আমি বিশ্বাস করব না। আসলে ঘটনাটি সত্যি না মিথ্যা এই সম্পর্কে আমি ক্লিয়ার না। আর এভাবে তারা তারা সালিশ করবে আমরা সেখানে যাবো এটাতো হতে পারে না। প্রয়োজনে আমার অফিসে দুই পক্ষের দুই জন কে ডেকে সমাধান করার চেষ্টা করব।
এ বিষয়ে দোহার থানার অফিসার ইনচার্জ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, রাধানগর খাজার বাজারে কিছু লোক জমায়েত হয়েছিল আমরা তাৎক্ষণিক ভাবে সরিয়ে দিয়েছি এবং আইন গত ব্যাবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে আলাউদ্দিন মোল্লা বলেন, আজকে ইউএনও এই সামাজিক সালিশে উপস্থিতিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আজ সকালে ইউএনও এসিল্যান্ডের মাধ্যমে আমাকে জানান তিনি উপস্তিতিত থাকতে পারবেন না। তিনি আরও বলেন আমি আজকে এই সমাবেশে উপস্থিত ছিলাম না।
এ বিষয়ে বাদশা মোল্লা বলেন চেয়ারম্যান আলাউদ্দীন মোল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদারদের ও তার ভাতিজা আকবর মোল্লা কে দিয়ে ইউনিয়নের সকল মসজিদে বিচার হওয়ার কথা বলে মানুষ জনকে দাওয়াত দিয়েছেন। ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য এই ঘটনা ঘটিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে বিলাসপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রাশেদ চোকদার বলেন
ইউএনও এবং থানার ওসি সাহেবের কথা বলে গতকাল খাজার বাজারে বিলাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলাউদ্দীন মোল্লা লক ডাউন উপেক্ষা করে কোন ধরনের সামাজিক দুরত্ব বা স্বাস্থ্য বিধি না মেনে প্রায় ৭/৮ শত মানুষের জনসমাগম ঘটিয়েছেন। খাজার বাজার মসজিদের জমি দাতা সদস্য আক্কাস শিকদার ও মসজিদের মুয়াজ্জিন নুর হোসেনের নামে বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয় সমাবেশ থেকে ।
এ বিষয়ে সমাবেশে বক্তব্য প্রদানকারী মুফতী জিল্লুর রহমান জানান বিলাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদার গতকাল সন্ধ্যায় আমাদের মসজিদে গিয়ে জানান, আজকে খাজার বাজারে সামাজিক সালিশ হবে। এই সালিশে ইউএনও স্থানীয় মুসল্লীদের উপস্থিত থাকতে বলেছেন। তাই আজকে জুম্মার নামাজের পর আমরা খাজার বাজারে উপস্থিত হই। কিন্তু ইউএনও, এসিল্যান্ড, ওসি কেউই উপস্থিত হন নাই। তখন উপস্থিত লোকজনকে আমি শান্তিপূর্ণভাবে চলে যেতে বলি।
এই বিষয়ে আরেক মুফতি মাসুদ তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন, " বন্ধুরা! অনেকে মনে করতে পারেন যে, লকডাউনের সময় সমাবেশ হল কেন? বিষয় এমন নয়। বরং জনগন জানতে পেরেছ যে,আজ শুক্রবার খাজার বাজারে বিচার হবে। এবং সেখানে থানার ওসি সাহেব, টিউনু সাহেব ও এলাকার গন্ন মান্ন লোক থাকবে, তাই জুমার পর থেকে তৌহিদি জনতা জমায়াত হতে থাকে, কিন্তু পরে জানাগেল বিচার হবেনা, ওই সময় তৌহিদি জনতা উত্তেজিত ছিল। তাই আমরা জনতাকে সামনে নিয়ে প্রসাশনের নিকট সুস্থ বিচার কামনা করে মোনাজাতের মাধ্যমে সকলকে চলে যেতে বলি, এবং আইন নিজের হাতে তুলে না নিতে অনুরোধ করি"
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, রমজান মাসে খাজার বাজারে মসিজিদের মুয়াজ্জিন নুর হোসেন সেহরির আগ মুহূর্তে মসজিদে বসে যিকির করেছেন। এই যিকির করার ফলে স্থানীয় আবদুল হক মোল্লার ছোট ছেলে মনির হোসেনের ঘুমে খুব ব্যাঘাত ঘটে, তাই মনির নুর হোসেন কে মসজিদে জিকির করতে নিষেধ করেন। নুর হোসেনকে বিভিন্ন ভাবে ভয় ভীতি প্রদর্শন করে অভিযুক্ত মনির হোসেন। এরপরে নুর হোসেন বিষয়টি উক্ত মসজিদের সভাপতি আক্কাস শিকদার কে জানান। পরের দিন দুপুরে আক্কাস শিকদার নুর হোসেন ও মনির হোসেনকে এই বিষয় নিয়ে ঝগড়া না করতে বলেন। এক পর্যায়ে নুর হোসেন ও মনিরের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হলে দুই জনকেই চর থাপ্পড় দিয়ে আলাদা করে দেন। এই ঘটনার সুত্র ধরে মনিরের বাবা বাদশা মোল্লাকে বিষয়টা জানান। ২২ মে রোজ শুক্রবার বিকাল ৪ টায় বাদশা মোল্লা বিলাসপুরের বিভিন্ন বয়সী প্রায় দুই শতাধিক মানুষ জড়ো করেন খাজার বাজারের মসজিদে হামলা করার জন্য। সেখানে উপস্থিতিত ছিলেন বিলাসপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আলাউদ্দীন মোল্লা। ঐ দিন সমাবেশে আলাউদ্দিন মোল্লা আজ ২৯ মে শুক্রবার একটি সামাজিক সালিশ আহবান করেন। তার আহবানেই সরকারের লক ডাউন উপেক্ষা করে এই মানুষ জন এখন জড়ো হয়েছেন।
উল্লেখ্য, মে মাসের ২২ তারিখ শুক্রবার বিকাল ৪ টায় এরা উপস্থিত ছিল। এখানে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত লাভলু শিকদার ও উপস্থিত ছিলেন। মে মাসের ২৪ তারিখে লাভলু শিকদারের কোভিড ১৯ টেস্টে পজিটিভ রেজাল্ট আসছে। এখান থেকে করোনা ভাইরাস পুরো বিলাশপুরে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আতংকে দিন কাটছে বিলাসপুর বাসীর।