আশাশুনিতে দপ্তরির চাকুরি পেতে ছোট ভাই ও স্ত্রীর চেয়েও কম বয়স দেখানোর অভিযোগ





আহসান  উল্লাহ  বাবলু  উপজেলা প্রতিনিধি ঃ আশাশুনিতে দপ্তরী কাম প্রহরী পদে চাকুরি পেতে নিজের বয়স ছোট ভাই ও স্ত্রীর বয়সের চেয়ে কমিয়ে সনদ নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটিয়েছেন উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়নের কুঁন্দুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম প্রহরী পদে নিয়োগ প্রাপ্ত শিব প্রসাদ সরকার। 

লিখিত অভিযোগ ও কাগজপত্র দৃষ্টে জানাগেছে, স্কুলটিতে দপ্তরী কাম প্রহরী নিয়োগের জন্য আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে জনবল নিয়োগের নীতিমালা ২০১২ অনুযায়ী কুঁন্দুড়িয়া গ্রামের মৃত সুধাংশু শেখর সরকারের পুত্র শিব প্রসাদ সরকারকে ২৮/০৩/১৩ তাং নিয়োগ প্রদান করা হয়। প্রার্থীর বয়স ০১/১২/২০১২ তাং ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে থাকার কথা থাকলেও শিব প্রসাদ তার জন্ম তারিখ ৩০ বছরের কমে রাখতে নানা ভাবে ছলচাতুরি করেছেন মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কাগজপত্রে দেখাগেছে শিব প্রসাদ তার জন্ম তাং ৪ বার পরিবর্তন করেছেন। আইডি বা ভোটার তালিকা অনুযায়ী ১৯৯১ সালে ভোটার নং ০১৭৫, জন্ম তাং ১৫/০২/১৯৬৮, ১৯৯৬ সালে আইডি নং ২২৬০১০৮০৩০১১০১৭৫, জন্ম তাং ১৬/০৭/১৯৭১, ২০০৮ সালে আইডি নং ৮৭০৭৫৫৮০৭২০০, জন্ম তাং ১৫/০২/১৯৬৮, ২০১৩ সালে আইডি নং ৮৭০৭৫৫৮০৭২০০, জন্ম তাং ০৫/০১/১৯৮৩ এবং একই বছর খসড়া ভোটার তালিকায় জন্ম তাং ১৬/০৭/১৯৭৯ দেখানো হয়েছে। তাহলে আসলে তার জন্ম তারিখ কত? এমন প্রশ্ন এলাকাবাসীর মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদে জন্ম নিবন্ধন ভলুমে তার জন্ম তারিখের স্থানে ফ্লুইড দিয়ে মুছে ওভার রাইট করা আছে বলে অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। যেখানে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানের প্রত্যায়িত স্বাক্ষর বা অনুস্বাক্ষর করা হয়নি। তবে শিবপদ সরকার চাকুরী পেতে তার জন্ম তারিখ দেখিয়েছেন ০৫/০১/১৯৮৩। যাতে তার বয়স ৩০ পুরতে মাত্র ৪ দিন বাকী ছিল। অথচ উপরোক্ত ভোটার তালিকাগুলোতে তার ছোট ভাই উত্তম কুমার সরকারের জন্ম তারিখ রয়েছে ১৯/১১/১৯৭৫। অর্থাৎ তার ছোট ভাইয়ের থেকে তিনি প্রায় ৭ বছর বয়সে ছোট। যা রীতিমত হাস্যকর। অপরদিকে একই ভোটার তালিকায় তার স্ত্রী চায়না রানীর জন্ম তারিখ ১২/০২/১৯৮০। অর্থাৎ তার স্ত্রী তার থেকে বয়সে প্রায় ৩ বছরের বড়। আবার তার পুত্র লিটন সরকারের জন্ম তাং ১৮/১১/৯৯। অর্থাৎ ১৬ বছর বয়সে তার সন্তানের জন্ম, তখন তাদের বিয়ে হয়েছে কিনা তা জানা সম্ভব হয়নি। এমন তঞ্চকীকতায় ভরা জন্ম তারিখ সম্বলিত কাগজ দাখিল করে ০৪/০৪/২০১৩ তারিখ হতে শিব প্রসাদ বহাল তবিয়তে কুঁন্দুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম প্রহরী পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়ে চাকরি করে আসছেন। ছোট ভাইয়ের চেয়ে বয়সে ছোট হওয়ার অসম্ভব কাজটি কিভাবে করা হলো, কেন তঞ্চকী পূর্ণ জন্ম সনদ দেখিয়ে চাকুরী পেয়ে গেলো? এমন অভিযোগ এনে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়ে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। 

এব্যাপারে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি গণেশ চন্দ্র মন্ডল বলেন, মৃত সুধাংশু শেকর সরকারের দু’পুত্রের মধ্যে শিব প্রসাদ সরকার বড় পুত্র এবং ছোট পুত্র উত্তম কুমার সরকার। কিন্তু শিব বড় হয়েও চাকুরিতে বয়স কম প্রয়োজন হওয়ায় নিজের জন্ম তারিখ ছোট ভাইয়ের জন্ম তারিখের থেকে কম দেখিয়ে জাল জন্ম সনদ তৈরি করেছে। এটি আমরা তখন জানতে পারিনি। এখন গ্রামের সকল মানুষ জন্ম সনদ জালের বিষয়টি জেনে গেছে। বিষয়টি তদন্ত হলে সব বেরিয়ে আসবে। এব্যাপারে অভিযুক্ত শিব প্রসাদের সাথে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি।


সংবাদটি শেয়ার করুন
পূর্ববর্তী সংবাদ
পরবর্তী সংবাদ