পটিয়ার পাইকপাড়ায় মাতৃসদন সার্জিক্যাল হাসপাতালের যাত্রা শুরু

সেলিম চৌধুরী স্টাফ রিপোর্টারঃ স্বাস্থ্য সেবা বঞ্চিত মা-শিশুদের জন্য চট্টগ্রামের পটিয়া পৌর সদরে বেসরকারি সেবা প্রতিষ্ঠান মুছা-নুর ছেমন স্বাস্থ্য সেবা কমপ্লেক্স মাতৃসদন হাসপাতালের উদ্বোধন করা হয়েছে। ২০ শয্যার এই ক্লিনিকের উদ্যোক্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. তাসলিম চৌধুরী। শনিবার দুপুরে পটিয়া সদরের পাইকপাড়া এলাকায় হাসপাতাল ভবনে ৩য় তলায় এ উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আায়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন হাসপাতালের হাসপাতালটির প্রতিষ্ঠাতা ডা: তাসলিম চৌধুরী বাবা ও সাবেক ১৪ নং পটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (বর্তমানে পটিয়া পৌরসভা) চেয়ারম্যান আবু মুছা চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ছিলেন পটিয়া পৌরসভার মেয়র আইয়ুব বাবুল, বিশেষ অতিথির ছিলেন চট্টগ্রাম চারুকলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আবদুল আলীম, হৃদরোগ চিকিৎসক এ কে এম নাছির উদ্দিন, সার্জন ডা: জাহাঙ্গীর উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনী বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা: রোকেয়া চৌধুরী, চমেক হাসপাতালের ইউরোলজিষ্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা: কাজী মোহাম্মদ মনোয়ারুল করিম বাবর, আবৃত্তিকার গৌতম চৌধুরীর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আ ক ম সামশুজ্জামান, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ডা: তিমির বরণ চৌধুরী, কাউন্সিলর শফিউল আলম, নারী কাউন্সিলর ইয়াছমিন আকতার চৌধুরী, ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি প্রনব দাশ, ডা: আইয়ুব নবী, ডা: জয় দত্ত বড়–য়া সুমন, ডা: সাইফুদ্দিন সুজা, ডা: এ কে এম মাইন উদ্দিন রনি, ডা: সাকিব, ডা: সানাম, সাবেক ইউপি সদস্য পুলক দেব প্রমুখ।

পটিয়া পৌরসভার মেয়র আইয়ুব বাবুল বলেন, 'পাইকপাড়া, দক্ষিনঘাটা, মাঝেরঘাটা, ভাটিখাইন, ছনহরা, শোভনদন্ডীসহ দক্ষিন চট্টগ্রামের মা এবং শিশুস্বাস্থ্যের চিকিৎসায় কষ্ট এবং ভোগান্তির শেষ ছিল না। আমার মনে হয় সেবাকেন্দ্রটি চালু হওয়ায় মানুষের ভোগান্তি কমবে। দোরগোড়ায় বসে মানুষ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ভালো চিকিৎসা পাবে।'

অধ্যাপক আবদুল আলীম বলেন, 'তৃণমূল পর্যায়ে গরিব-দুস্থ মানুষের সেবা করার লোক পাওয়া যায় না। সেদিক থেকে চিন্তা করলে ডা: তাসলিম চৌধুরী অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এ সেবাকেন্দ্র সাধারণ মানুষের সেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি।'

ডা: তাসলিম চৌধুরী বলেন, 'এই অঞ্চলের নারীরা অনেক বেশি রক্ষণশীল, তাই আমরা সম্পূর্ণ নারী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও সেবিকাদের দ্বারা অস্ত্রোপচার, পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ মানসম্পন্ন চিকিৎসা প্রদান, গর্ভকালীন জরুরি, সময়োপযোগী চিকিৎসার প্রয়োজনে গর্ভবতী মায়েদের তালিকা তৈরি করে সেবাকেন্দ্রের মাধ্যমে অগ্রসর ভূমিকা রাখতে চাই। এমনকি গর্ভবতী মায়েদের সন্তান প্রসবের সময় প্রয়োজনে আমরা তাৎক্ষণিক নিরাপদ রক্তদানের ব্যবস্থাও নিশ্চিত করব।' তিনি আরও বলেন, জরায়ুতে বাচ্চার আড়াআড়ি অবস্থান, গর্ভকালীন খিঁচুনি, উচ্চ রক্তচাপ, বাচ্চার গর্ভকালীন সঠিক অবস্থান নির্ণয়, গর্ভকালীন বাচ্চার অপুষ্টি ইত্যাদি চিহ্নিত করে, মাতৃমৃত্যুর হার কমিয়ে আনার লক্ষ্যে এ সেবাকেন্দ্র ভূমিকা রাখবে।

গত ৪ বছর আগে তিনি নিজের গ্রামের বাড়িতে বাবা মায়ের নামে প্রতিষ্ঠা করেন মুছা-নুর ছেমন স্বাস্থ্য সেবা কমপ্লেক্স।তারপর থেকেই এখানে নিয়মিত চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। করোনাকালেও বন্ধ করেননি চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম। রোগীদের জন্য সব সময় খোলা রেখেছেন তার প্রতিষ্ঠানের আউটডোর ও ইনডোর সেবা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে রোগী দেখে চলেছেন নিয়মিত। সেই সঙ্গে নরমাল ডেলিভারি করিয়েছেন। অপারেশনও করছেন নিয়মিত। করোনাকালীন সময়ে তিনি গর্ভবতী নারী, প্রসূতি মা ও শিশুসহ সব ধরনের রোগীদের সেবা দিয়েছেন। পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতির পরামর্শও দিয়ে যাচ্ছেন। ১৯৯৭ সালে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করে প্রসূতি ও ধাত্রীবিদ্যায় তিনি নিয়েছেন উচ্চতর ডিগ্রি। চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি ডা. তাসলিম চৌধুরী নিজেকে সম্পৃক্ত করেছেন বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে।

সংবাদটি শেয়ার করুন
পূর্ববর্তী সংবাদ
পরবর্তী সংবাদ