তিস্তা নদীর বেড়িবাঁধ ও বালুবাঁধে ভাঙ্গন, আতঙ্কে এলাকাবাসী

লাতিফুল আজম, নীলফামারী প্রতিনিধি:নীলফামারীর ডিমলায় তিস্তা নদীর বেড়িবাঁধে ও বালুরবাঁধে ভাঙ্গনে তিস্তার চরের এলাকাবাসীর আতঙ্কে বসবাস। ডিমলা  উপজেলার খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের পুর্ব দোহল পাড়ার তিস্তা নদীর গ্রাম রক্ষা বেড়িবাঁধ ও টেপাখড়িবাাড়ী ইউনিয়নের চড়খড়িবাড়ী ও পূর্বখড়িবাড়ী এলাকার বালুরবাঁধ  ভাঙনের কবলে পরায় এলাকাবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে যে কোনো মুহূর্তে তিস্তার চড়ের  প্রায় ২ হাজার পরিবারসহ শত শত হেক্টর  আবাদি জমি পানিবন্দি হয়ে পড়বে, পাশা-পাশি বেশকিছু বসত ভিটা ও আবাদি জমি নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। 

 সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,  বেড়িবাঁধটির বিভিন্ন স্থানে ছোট-খাটো ভাঙন দেখা দিলেও একটি স্থানে প্রায় ৬০-৭০ মিটার বাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় এলাকাজুড়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।  এলাকাবাসীরা জানান, সপ্তাহ খানেক আগে উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আকস্মিক ভাবে ওই বেড়িবাঁধটিতে ভাঙন শুরু হয়।
দু-একদিন পর পানি কিছুটা কমতে থাকার সাথে সাথে বাঁধে ভাঙনের তীব্রতা আরও বাড়তে থাকে। প্রতিদিন যুক্ত হচ্ছে নতুন করে ভাঙন। খুব দ্রুত বেড়িবাঁধটি সংস্কার ও পুনঃনির্মাণ কার্যক্রম শুরু না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।আমরা ভয়াবহ ঝুঁকিতে আছি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ভাইরাল হলে রোববার ভাঙন স্থান পরিদর্শন করেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধিরা। বাপাউবো'র বিভাগীয় উপ প্রকৌশলী রাশেদীন জানান, দুই স্পারের মাঝে বাঁধের তিন চারশ মিটার ভিতরে বেড়িবাঁধ কাম রাস্তাটি ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে। আমরা পরিদর্শন করেছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।  
এদিকে সোমবার ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়শ্রী রানী রায় ও খগাখড়িবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম লিথন। তাহারাও দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন মর্মে জানিয়েছেন। 
অপরদিকে টেপাখড়িবাাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ময়নুল হক জানান, আমার ইউনিয়নে  ভারত-বাংলাদেশের যৌথ বাঁধটির পূর্বদিকে প্রায় ১ কিঃ মিঃ  বালুর বাঁধটি অবস্থিত। এই বালুর বাঁধটি বিগত কয়েক মাস পূর্বে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় আমি নির্মাণ করছি।  বর্তমানে উজানের ঢলে তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় বালুর বাঁধটি ভাঙ্গনের মুখে পরেছে। উজানের ঢেউ মোকাবেলায় যে কোন সময় বালুর বাঁধটি নদী গর্ভে বিলিন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই পুনঃরায় বাঁধ নির্মাণে প্লাস্টিকের বস্তা কিনে এলাকাবাসী নিয়ে বালু ও সিমেন্ট একত্রিত করে বাঁধে ফেলতেছি। এই বাঁধ না থাকলে বাঁধ সংলগ্ন পূর্বখড়িবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ প্রায় ২ হাজার পরিবার পানিবন্দি ও হাজার-হাজার  একর জমি চলমান বর্ষার মৌসুমে আমন ধান, পুকুরের মাছ সহ শাক সবজি ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা আছে। 
 এদিকে এলাকাবাসী দাবি করেছে আমরা সরকারের কাছে ত্রাণ চাইনা দ্রুত টেকসই বাঁধ নির্মাণ চাই। ২২শত মিটার বালুর বাঁধটি ব্লক দ্বারা নির্মানের  জন্য  ইউপি চেয়ারম্যান ও   এলাকাবাসী  গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনার কাছে  জোর  দাবি  জানান।
কেননা নদীর পানি যদি আরও বৃদ্ধি পায় তাহলে যে কোনো মুহূর্তে প্রায় ২ হাজার  পরিবার বন্যা কবলিত হয়ে পড়ার পাশা-পাশি অনেক আবাদি জমি নষ্ট হয়ে যাবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন
পূর্ববর্তী সংবাদ
পরবর্তী সংবাদ