তুল চাষে খরচের তুলনায় লাভ বেশী হওয়া এবং অনাবাদি পতিত জমিতে চাষ করার সুবিধা থাকায় দিনে দিনে এ উপজেলার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষীরা তুলা চাষের প্রতি ঝুকে পড়ছে। তুলা চাষে কৃষকদের আরো বেশীে আগ্রহী করে তুলতে চলতি বছরে তুলা উন্নয়ন বোর্ড ১৫ জন কৃষককে প্রদর্শনী প্লট ও ২২০ জন প্রনোদনা প্যাকেজের আওতায় এনেছে।আর এই প্রণোদনা আওতায় এসব চাষীর মাঝে তুলা বীজ, সার, কীটনাশক সহ অন্যান্য সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া বিনা সুদে আগ্রহী চাষীদেরকে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেছেন। যার ফলে কেশবপুরে ব্যাপকহারে তুলার চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কেশবপুর ও যশোর জেলা তুলা উন্নয়ন বোর্ড অফিস সুত্রে জানাগেছে, সরকারি ভাবে তুলা চাষের কোন লক্ষ্যমাত্র না থাকলেও জেলা ও উপজেলা ব্যাপী তুলার আবাদ বৃদ্ধি করতে তুলা উন্নয়ন বোর্ড নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। যার ফলে প্রতি বছরই কেশবপুরে তুলার আবাদ বাড়ছে। অফিস সুত্রে জানাগেছে, এ উপজেলায় ২০২৩ সালে ২৩৩ হেক্টর জমিতে তুলার আবাদ হয়। ২০২৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৪০হেক্টরে। চলতি বছরে ২০২৫ সালে চাষের পরিমাণ বেড়ে ২৮০ হেক্টর জমিতে তুলার আবাদ হয়েছে। যা গত তিন বচরের তুলনায় ৪৭ হেক্টর জমিতে আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে।
তুলা লাভজনক ফসল হওয়ায় এর আবাদ বাড়ছে ।জাহানপুর তুলা চাষী শামসুদ্দিন দফাদার বলেন, তুলা চাষে লাভ বেশি বিক্রি হয় নগদ টাকায় তাই তিনি এবার দুই বিঘা জমিতে তুলা চাষ করেছেন বিগত ১০ বছর যাবত তিনি তোলা চাষ করে আসছেন। সাতবাড়িয়া গ্রামের তুলা চাষী অশোক বাবু বলেন প্রতিবছর আমি তুলা চাষ করে থাকি এবছরও ৫বিঘা জমিতে চাষকরেছি। আশা করছি ৪ লক্ষ টাকার তুল বিক্রি করতে পারব।তুলা অফিস কেশবপুর সার্বিক সহযোগিতা ও সার্বক্ষণিক তদারকি করছে। মির্জানগর গ্রামের চাষী তছির উদ্দিন বলেন তুলার ফলন অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার অনেক ভাল হওয়ার আশা করছি। কেশবপুর তুলা অফিসের মাধ্যমে আমাদের বীজ, সার ও কীটনাশক দেওয়া হয়েছে। ১০ বছর তুলার চাষ করছি অন্যান্ন ফসলের চেয়ে বেশী লাভ পেয়েছি, সে জন্য এবার আমি ৮৪ শতাংশ জমিতে তুলা আবাদ করেছি। গাছ ভাল হয়েছে, আবহায়া ভাল থাকলে ভাল ফলনে আশা করছি।
উপজেলা তুলা উন্নয়ন কর্মকর্তা কোহিনুর রহমান বলেন, ১বিঘা জমিতে তুলা চাষ করতে সব মিলিয়ে চাষীর খরচ হয় ১৫ হাজার থেকে ১৮হাজার টাকা। বিঘা প্রতি ফলন হয় ১৮ থেকে ২০ মণ। প্রতি মণ তুলা বিক্রি হয় ৩৯০০টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা। খরচ বাদে ১বিঘা জমিতে তুলা চাষ করে কৃষকের লাভ হয় ৫০ থেকে ৬০হাজার টাকা।আবহাওয় অনুকুলে থাকায় এবার তুলার ফলন অন্যান্ন বছরের তুলনায় ভাল হবেবলে আশাদী।
এবিষয়ে যশোর জেলা প্রধান তুলা উন্নয়ন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, তুলার আবাদ বৃদ্ধিতে আমরা কয়েকটি জেলার ১৮টি ইউনিনট নিয়ে কাজ করছি। তার মধ্যে কেশবপুর উপজেলা অন্যতম। অন্যান্য ফসলের চেয়ে তুলা চাষে খরচ কম ও লাভ বেশী পাওয়া যায়। তাছাড়া পতিত জমিতে তুলার আবাদ ভাল হয় এসব বিষয় গুলো কৃষকদের বোঝানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি এবং ভাল ফলাফল পাচ্ছি।