বিশেষ প্রতিনিধি, গাজীপুরঃগাজীপুরের শ্রীপুরে পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ-বিএনপি'র কর্মী-সমর্থদের মধ্যে দফায় দফায় হামলা ও পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বিএনপি'র মনোনিত মেয়র প্রার্থী এড. কাজী খানের নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা ও ভাংচুর করার অভিযোগ উঠেছে নৌকার সমর্থকদের বিরেুদ্ধে।এতে হামলাকারীদের ধারালো দায়ের কোপে বিএনপি'র মেয়র প্রার্থীসহ উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে শ্রীপুর থানার সার্কেল এএসপি ও অফিসার ইনচার্জ ঘটনাস্থল গুলো পরিদর্শন করেন।
রোববার (১০ জানুয়ারী) পৌর শহরের রেল স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা দা, লাঠি সহ মোটরসাইকেল নিয়ে পৌর শহরে মিছিলসহ মহড়া দেয়। এতে স্থানীয় লোকজন আতংকিত হয়ে পড়ে। হামলার সময় সাধারণ মানুষ ভয়ে ছুটটে থাকে এবং আশপাশের দোকানীরা ভয়ে দোকানপাট বন্ধ করতে দেখা গেছে।
কালিয়াকৈর সার্কেল এএসপি আব্দুল আল মামুন বিএনপি'র নির্বাচনী কার্যালয়ে এসে তাদেরকে শান্ত থাকতে বলেন এবং হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান।
প্রথম দফা হামলার পরপরই দুপুরে আরও দু'দফা হামলায় ধারালো দায়ের কোপে বিএনপি'র মেয়র প্রার্থী এড. কাজী খান ও পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি আবুল মন্ডল, পৌর ছাত্র দলের সাবেক সভাপতি ওবায়দুর রহমান সোহেল মন্ডল, শ্রমিকদল নেতা খোরশেদ আলম, যুবদল নেতা আনোয়ার বেপারী, স্বেচ্ছাসবক দল নেতা রাজিবুল বেপারী,ইঞ্জি; উজ্জল মাহমুদ, ছাত্রদল নেতা আরাফাত বেপারী,আমিনুল ইসলাম, যুবদল নেতা সবুজ প্রধান,শ্রমিকদল নেতা সেলিম, রাহাত হাসান জুয়েলসহ অন্তত ২০ জন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়। ওই সময় হামলাকারীরা বিএনপি'র নির্বাচনী কার্যালয়ের সামনে থাকা বেশ কয়েকটি মোটর সাইকেল ভাংচুর করে।
বিএনপি'র মেয়র প্রার্থী এড.কাজী খান জানান, সকাল ১১টার দিকে আওয়ামীলীগের লোকজন প্রথমে মোটরসাইকেল নিয়ে পৌর এলাকার শ্রীপুর সদরে বিএনপি'র কার্যালয়ের ভিতর বসে থাকা নেতাকর্মীদের উপর উঠিয়ে দেয়। ওই সময় তার ৫ সমর্থক আহত হয়। এসময় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা অফিসে ঢুকে এলোপাতারি চেয়ার, টেবিল, গ্লাস, নির্বাচনী সামগ্রী ভাংচুর করে। এর আগে দক্ষিন ভাংনাহাটি গ্রামের পাগলাবাড়ি এলাকায় বিএনপি'র নির্বাচনী ক্যাম্পেও তারা হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। একই সাথে তারা সবুজবাগ এলাকায় আমার বসতবাড়িতে হামলা করে। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী পরাজয় নিশ্চিত জেনে আমার অফিসে হামলা চালিয়েছে এবং আমাকে নির্বাচনী প্রচারনা করতে না দেওয়ার ভয়ভীতি ও হুমকি ধমকি দিচ্ছে। তারা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার শ্বশুর বাড়ীসহ আমার নিজ বাড়ীতেও হামলা চালানোর চেষ্টা করেছে।
বিএনপি'র কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু জানান, বিএনপি'র গণজোয়ার দেখে আওয়ামীলীগ সংকিত হয়ে পড়েছে। তা না হলে অহেতুক বিএনপি'র নির্বাচনী কার্যালয় ভাংচুর করত না।
এ বিষয়ে শ্রীপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরে আলম মোল্লা জানান, জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের মিছিলে বিএনপির কার্যালয় থেকে অতর্কিত ইটপাটকেল ছুঁড়া হয়। এসময় যুবলীগ নেতা আলিম মোস্তাফা, রাসেল, হুমায়ুন, হামিদুল, ছাত্রলীগ নেতা মাছুম মন্ডলহ ১০-১২ জন আহত হয়েছেন। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়। এদিকে, উজিলাব এলাকায় আওয়ামী লীগের এক কর্মীর মোটরসাইকেলে আগুন লাগিয়ে দেয় বিএনপি। সুষ্ঠু ও শান্তিপুর্ণ মিছিলে বিএনপির এমন হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানান তিনি।
পৌরসভা রিটার্নিং কর্মকর্তা কাজী ইস্তাফিজুল হক আকন্দ জানান, হামলার ঘটনায় মৌখিকভাবে অবগত হয়ে সাথে সাথেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাহায্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়েছে। এছাড়াও বিএনপির প্রার্থীর উপর হামলার ঘটনায় আরেকটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্তের পর যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।