কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃকুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার রমনা খামার কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠ জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন মোঃ জহুরুল হক (৬০) মুরুব্বি কে কুপিয়ে হত্যা করার চেষ্টা চালায় উক্ত এলাকার মোঃ মহুবর, বয়স আনুমানিক (৫০) বছর ,, গত মঙ্গলবার ১৪ ই সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে সকাল ৭ ঘটিকায় মসজিদ থেকে বাড়ি ফেরার পথে মসজিদের পাশেই পেছন দিক থেকে এসে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালানো হয় । উক্ত এলাকার কয়েকজন লোক দেখে তাকে উদ্ধার করে ,চিলমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গিয়ে জরুরী বিভাগে ভর্তি করে। উক্ত মসজিদে দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে মুয়াজ্জিনের দায়িত্ব পালন করে আসছে।এরকম করে একজন ভালো মানুষ ও মসজিদের মুয়াজ্জিন কে বিনা শত্রুতা ছাড়ায় ষরযন্ত্র মূলক হত্যার চেষ্টা চিলমারী বাসী মেনে নিতে পারছেন না ।তাই এর একটা ন্যায় বিচার চাই । যদি সঠিক বিচার না করা হয় আইনের আওতায় আনা হবে।
কুড়িগ্রামে প্রবাসীদের টাকায় নির্মাণ হলো ভাসমান বাঁশের সাঁকো
কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামে ধরলার চর নামা জয়কুমর ও সারডোবের দুই হাজার মানুষের ভোগান্তি দূর করতে নামা জয়কুমর গ্রামের খালে ড্রাম ও বাঁশ দিয়ে তৈরী একটি ভাসমান সাঁকো স্থাপন করেছে গ্রামবাসী। প্রবাসীদের আর্থিক সহায়তা ছাড়াও গ্রামবাসী বাঁশ ও শ্রম দিয়ে ৫দিনেই তৈরী করে ৫০ ফুট দীর্ঘ সাঁকোটি। রবিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে সাঁকোটি উদ্বোধন করেন সাংবাদিক ও লেখক আব্দুল খালেক ফারুক।
জানা গেছে, ধরলা নদী তীরবর্তী নামা জয়কুমার ও সারডোব গ্রামের গ্রামের ৪ শতাধিক পরিবার একটি সেতুর অভাবে যাতায়াতের ভোগান্তিতে পড়েন বছরের প্রায় ৬ মাস। চর থেকে একতা বাজার হয়ে মূল ভূখন্ডে আসতে একটি খাল পার হতে হয়। মে মাসে যখন বৃষ্টি হয় তখন খালে পানি ওঠে। আস্তে আস্তে নদীর পানি বাড়লে এই খাল দিয়ে প্রবাহিত হয় বন্যার পানি। অক্টোবর পর্যন্ত পানি থাকে খালে। ফলে খালের উপর চলাচলকারী জনগন পড়েন ভোগান্তিতে। ছোট খাল বলে নৌকা বা খেয়ার ব্যবস্থাও নেই। তাই গ্রামবাসীরা কয়েকটি বাঁশ সংগ্রহ করে সাঁকো তৈরী করে যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু রেখেছিলেন।
কিন্তু এই সাঁকো দিয়ে নারী ও শিশুরা পার হতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হন। জরুরি রোগী পরিবহন ও পণ্য পারাপারে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। এই অবস্থা নিরসনে নামা জয়কুমর গ্রামের মানুষ অনেক দিন ধরে একটি কংক্রিট বা কাঠের ব্রিজের দাবী জানালেও কর্তৃপক্ষ সায় দেয়নি
এ অবস্থায় প্রবাসীদের সহায়তায় ড্রাম দিয়ে তৈরী ভাসমান সাঁকো চালু হবার পর গ্রামবাসী আছেন স্বস্তিতে। নামা জয়কুমর গ্রামের বাসিন্দা ইনসাফুল মিয়া জানান, লোকজন পারাপার ছাড়াও চরে উৎপাদিত ধান, ভুট্রা, পাট, আলুসহ ফসল ও অন্যান্য পণ্য পার করতে এখন আর কোন সমস্যা হবে না।
গুলবাগপুর বেলেদাড়ীর রাস্তাটির বেহাল দশা!
![]() |
চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে রাস্তাটি |
নিউজ ডেস্কঃ যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলাধীন গঙ্গানন্দপুর ইউনিয়নের গুলবাগপুর (বেলেদাড়ী) গ্রামের এক মাত্র চলাচলের রাস্তাটির বেহাল দশা। জনগনের এই দুর্দশা যেন দেখার কেউ নেই। কাবিলপুর ব্রিজ হতে ধুলিয়ানী ব্রিজ পর্যন্ত কপোতক্ষের ধার ঘেষে বয়ে চলা এই জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি এই অঞ্চলের মানুষের ইউনিয়ন, উপজেলা, এবং জেলা শহরের ওঠার একমাত্র রাস্তা। এছাড়া চৌগাছা - ঝিকরগাছা উপজেলার সুনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধুলিয়ানী মাধ্যমিক বিদ্যালয় অগণিত ছাত্র ছাত্রীর চলাচলের একমাত্র রাস্তা এটি। বর্ষার মৌসুমে এই সকল স্কুলগামী ছাত্র ছাত্রীরা প্রায় মারাত্মক দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়। বর্ষার মৌসুমে এই রাস্তাটি মানুষের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে ওঠে,আজ সকালে এই রাস্তাঘটে যায় মারাত্মক দুর্ঘটানা। এই রাস্তার বিষয় স্থানীয় জনপ্রতিনীধিদের কাছে বার বার জানানো হলেও কোন ব্যাবস্থা নেয়া হয়নি। দ্রুত রাস্তাটি সংস্কার করে জনগনের দুর্দশা লাঘব করা হোক যা এই অঞ্চলের সাধারণ মানুষের একমাত্র প্রাত্যাশা।
পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে গলায় ফাঁস লাগানো যুবতীর ভাসমান মরদেহ উদ্ধারঃ
![]() |
পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে গলায় ফাঁস লাগানো যুবতীর ভাসমান মরদেহ উদ্ধারঃ |
মিঠুন কুমার রাজ, স্টাফ রিপোর্টারঃপিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে গলায় ওড়না পেচানো ভাসমান অবস্থায় অজ্ঞাত এক যুবতীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার দুপুরে (১৪ সেপ্টেম্বার) উপজেলার ঢেপসাবুনিয়া গ্রামের কচা নদী সংলগ্ন বেড়িবাঁধের পাশে ডোবা থেকে ভাসমান অবস্থায় গলায় ওড়না দ্বারা ফাঁস লাগানো অজ্ঞাত এক যুবতীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ইন্দুরকানী থানার মোঃ হুমায়ুন কবির সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন। নিহত ঐ যুবতীর বয়স আনুমানিক ২৫/২৬ বছর বলে ধারনা করছে পুলিশ।
থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার বালিপাড়া ইউনিয়নের ঢেপসাবুনিয়া গ্রামের কচা নদী সংলগ্ন বেড়িবাধেঁর পাশে একটি ডোবায় ভাসমান অবস্থায় অজ্ঞাত ঐ যুবতীর মরদেহ দেখতে পায় স্থানীয়রা। এরপর বিষয়টি স্থানীয় চৌকিদারের মাধ্যমে থানা পুলিশকে অবহিত করার পর ঘটনাস্থলে এসে গঁলায় ওড়না পেচানো অজ্ঞাত এক যুবতীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। হয়ত ধর্ষণ কিংবা শ্বাসরোধ করে হত্যা করে গতকাল রাতে দুর্বৃত্তরা মরদেহটি এখানে ফেলে রেখেছে বলে প্রাথমিক ভাবে এমনটাই ধারনা করছে পুলিশ। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মরদেহটির কোন পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।
ইন্দুরকানী থানার ওসি মোঃ হুমায়ুন কবির সাংবাকিদের জানান, স্থানীয়দের কাছ থেকে আমরা খবর পেয়ে ঢেপসাবুনিয়া গ্রামের কচা নদী সংলগ্ন বেড়িবাঁধের পাশে ডোবার মধ্যে গলায় লাল ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগানো আনুমানিক ২৫ বছর বয়সী ছেলোয়ার কামিজ পরিহিত এক যুবতীর মরদেহ উদ্ধার করি। লাশের ময়না তদন্তের জন্য পিরোজপুর মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। পোষ্ট মর্টেম রিপোর্ট পাওয়ার পর কিভাবে তার মৃত্যু হয়েছে তা নির্দিষ্ট ভাবে জানা যাবে।
নওগাঁয় ঢাকাগামী পরিবহন হতে ৯২ বোতল ফেনসিডিল সহ আটক -১
পোরশা প্রতিনিধিঃ নওগাঁর মহাদেবপুরে ঢাকাগামী আলনাফি পরিবহনের যাত্রীবাহী বাস থেকে ৯২ বোতল ফেনসিডিলসহ মামুন রেজা (২৮) নামে এক মাদক ব্যক্তিকে আটক করেছে র্যাব-৫।সোমবার দিবাগত রাতে মহাদেবপুর-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়কের আখেড়া মোড় এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। মামুন জেলার ধামইরহাট উপজেলার রাঙ্গামাটি বাজারের মোল্লাপাড়া গ্রামের আব্দুল গফফারের ছেলে।
র্যাব-৫ জয়পুরহাট ক্যাম্প এর কোম্পানী অধিনায়ক লেঃ কমান্ডার তৌকির বলেন, ‘ঢাকার উদ্দেশে মাদক যাচ্ছে এমন সংবাদে উপজেলার আখেড়া মোড় এলাকার মেসার্স বিসমিল্লাহ অটো রাইসমিলের সামনের রাস্তায় চেকপোষ্ট পরিচালনা করে র্যাব।’জেলার পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর থেকে ছেড়ে আশা ঢাকাগামী আলনাফি পরিবহনে তল্লাসি করে বক্সের মধ্যে থাকা চাউলের বস্তা থেকে ফেনসিডিলগুলো উদ্ধার করা হয়। আটককৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মহাদেবপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আশাশুনিতে অনুদানের চেক হস্তান্তর করেন উপজেলা চেয়ারম্যান
আহসান উল্লাহ বাবলু আশাশুনি সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃআশাশুনি উপজেলা সমাজসেবা অফিসের অনুদানের চেক হস্তান্তর করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ অনুদানের চেক হস্তান্তর এর শুভ উদ্বোধন করেন আশাশুনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মোস্তাকিম। আশাশুনি উপজেলার দরিদ্র অসহায় মানুষ ক্যান্সার, কিডনী, লিভার সিরোসিস, জন্মগত হৃদরোগ, স্ট্রোকে প্যারালাইজড, থ্যালাসেমিয়ার মতো কঠিন রোগে আক্রান্ত অর্থাভাবে ভুগছেন এমন ২২ জন রোগী প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা হিসাবে সর্বমোট ১১ লক্ষ টাকার চেক সরকারিভাবে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে প্রদান করা হয়। এছাড়া সমাজসেবা অফিসের রেজিস্ট্রেশন ভুক্ত উপজেলার ৮ সমাজসেবা মূলক প্রতিষ্ঠানকে ২০ হাজার টাকা করে সর্বমোট ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল হুসেইন খাঁনের সভাপতিত্বে এবং উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলাম এর সঞ্চালনায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন আরডিও বিশ্বজিৎ ঘোষ, সদর ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক স,ম সেলিম রেজা মিলন প্রমুখ।
বগুড়ায় সালমা ডায়াগনস্টিক ক্লিনিকের ২ মালিক কে হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন
এ সময় বক্তব্য দেন মোঃ জুলফিকার আলী শ্যামল মেম্বার, মোঃ তোজাম্মেল হক আওয়ামীলীগের ওয়ার্ড সাবেক সভাপতি, মোঃ বাবু মিয়া স্থানীয় আওয়ামিলীগ, মোঃ সুমন ইসলাম যুবলীগ নেতা, মোঃ সাজু মিয়া যুবলীগ, নেতাসহ আরো অনেক সমাজসেবক ও স্থানীয় এলাকাবাসি। তারা ঘাতক নার্স ও সালমা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের শেয়ার সূত্রে মালিক আটক ঘাতক সাদ্দাম হোসেন সহ হত্যার সহযোগিতা কারিদের গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার ( ৯ সেপ্টেম্বর ) রাত ৮টার দিকে সেলিম হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে প্রথমে সালমা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এতে তিনি সুস্থ না হলে রাতেই তাকে শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই কৌশলে বিষাক্ত ইনজেকশন পুশ করেন ঘাতক সাদ্দাম হোসেন। এর ১০ মিনিট পর মারা যান মোঃ সেলিম মিয়া। এদিকে গত ২ আড়াই মাস আগে মোঃ শাহিন আলমকেও একই কায়দায় বিষাক্ত ইনজেকশন পুশ করে হত্যার অভিযোগ উঠে ঘাতক সাদ্দাম হোসেনর বিরুদ্ধে। সেই ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যাওয়ায় সেই একই পন্থা অনুসরণ করে মোঃ শাহিন আলম ছামদালীর ছোট ভাই মোঃ সেলিম মিয়াকে ও হত্যা করেন ঘাতক সাদ্দাম হোসেন।
পুলিশ সূত্রে জানায়, নিহত মোঃ শাহিন আলম ছামদলী ও নিহত মোঃ সেলিম মিয়ার বড় ভাই মোঃ আব্দুস সামাদ বাদী হয়ে ঘাতক নার্স সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে গাবতলী ও সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘাতক সাদ্দাম হোসেন আটক করা হলেও এর পিছনে হত্যার ইন্ধন দাতাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানানায়
বেনাপোলে আর্থিক সম্পদ বিবরণী প্রকাশ বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত
নওয়াপাড়া পৌরসভা নির্বাচনের আগে বোমা তৈরি : বিস্ফোরণে উড়ে গেল ঘরের টিন : কাউন্সিলর প্রার্থীর দেহরক্ষী আহত
যশোর প্রতিনিধি: আগামী ২০ সেপ্টম্বর নওয়াপাড়া পৌরসভার নির্বাচন। নির্বাচনকে সামনে রেখে পৌর এলাকার আট নং ওয়ার্ড সাবেক কাউন্সিলর ও বর্তমান কাউন্সিলর প্রার্থী আসাদ বিশ্বাসের দেহরক্ষী শপ্পা (৩৫) বোমা তৈরি করছিল। নিজ ঘরে বোমা বানাতে গিয়ে বিস্ফোরণে শপ্পা জখম হয়েছেন। এ সময় বোমা বিস্ফোরণে ওই ঘরের টিনের চালা উড়ে যায় এবং দেয়ালে ফাটলের সৃষ্টি হয়। সোমবার রাত একটার দিকে পৌর শহরের রাজঘাট কার্পেটিং বাজার নামক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
কলারোয়ার খলসি গ্ৰামের চার খুন মামলায় রায়হানুরের ফাঁসির রায় ঘোষণা
মোঃ আল-আমিন হোসেন, উপজেলা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার কলারোয়ার হেলাতলা ইউনিয়নের খলসী গ্রামে একই পরিবারের স্বামী স্ত্রী ও তাদের দু’ সন্তানকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার একমাত্র আসামী রায়হানুর রহমানকে দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।মঙ্গলবার সাতক্ষীরার জ্যেষ্ট দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান এক জনাকীর্ণ আদালতে এ আদেশ দেন। একই আদেশে আসামীকে সাত দিনের মধ্যে উচ্চ আদালতে আপিলের জন্য সময় দেওয়া হয়েছে। ফাঁসির দন্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামীর নাম রায়হানুর রহমান (৩৬) সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলসি গ্রামের প্রয়াত ডাঃ শাহাজাহান আলীর ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলসি গ্রামের শাহজাহান ডাক্তারের বড় ছেলে শাহীনুর রহমান আট বিঘা জমিতে পাঙ্গাস মাছ চাষ করেন। মেঝ ছেলে আশরাফ আলী মালয়েশিয়ায় থাকেন। ছোট ছেলে রায়হানুর রহমান বেকার। বেকারত্বের কারণে বড় ভাই শাহীনুরের সংসারে সে খাওয়া দাওয়া করতো। শারীরিক অসুস্থতার কারণে কোন কাজ না করায় গত বছরের ১০ জানুয়ারি স্ত্রী তালাক দেয় রায়হানুর রহমানকে। সংসারে টাকা দিতে না পারায় শাহীনুৃরের স্ত্রী দেবর রায়হানুরকে মাঝে মাঝে গালমন্দ করতো। এরই জের ধরে গত বছরের ১৪ অক্টোবর রাতে ভাই মোঃ শাহীনুর রহমান(৪০) ভাবী সাবিনা খাতুন(৩০), তাদের ছেলে ব্রজবক্স সরকারি প্রাথমিক বিদ্যূালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র সিয়াম হোসেন মাহী (১০) ও মেয়ে একই বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী তাসমিন সুলতানাকে (৮) কোমল পানীয় এর সাথে বিশেষ চেতনানাশক বড়ি খাওয়ায় রায়হানুল। পরদিন ১৫ অক্টোবর ভোর চারটার দিকে হাত ও পা বেঁধে তাদেরকে একে একে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। হত্যাকারী ওই পরিবারের ৪ মাসের শিশু মারিয়াকে হত্যা না করে লাশের পাশে ফেলে রেখে যায়।
এ ঘটনায় নিহত শাহীনুরের শ্বাশুড়ি কলারোয়া উপজেলার উফাপুর গ্রামের রাশেদ গাজীর স্ত্রী ময়না খাতুন বাদি হয়ে কারো নাম উল্লেখ না করে থানায় ১৫ অক্টোবর একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তে নেমে পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত শাখার (সিআইডি) সাতক্ষীরা অফিসের পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম সন্দিগ্ধ আসামী হিসেবে শাহীনুরের ভাই রায়হানুর রহমান, একই গ্রামের রাজ্জাক দালাল, আব্দুল মালেক ও ধানঘরা গ্রামের আসাদুল সরদারকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত রায়হানুরকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে ২১ অক্টোবর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম বিলাস মন্ডলের কাছে একাই হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। একই দিনে অপরাধ ও তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) খুলনা রেঞ্জের উপমহাপুলিশ পরিদর্শক শেখ ওমর ফারুক তার সাতক্ষীরা অফিসে এক সংবাদ সম্মেলন করে হত্যার মোটিভ সম্পর্কে ব্যাখ্যা দেন। পরবর্তীতে আসামীপক্ষের আইনজীবী এড. ফরহাদ হোসেন রায়হানুর রহমানের ১৬৪ ধারার জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন জানালে আদালত তা নথিভুক্ত করে।
তদন্তভার গ্রহণের এক মাস আট দিন পর ২৮ জনের সাক্ষী ও রায়হানুলের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি পর্যালোচনা শেষে ২৪ নভেম্বর মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা রায়হানুর রহমানকে একমাত্র আসামী করে ৩২৮ ও ৩০২ ধারায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আসাদুল, রাজ্জাক ও আব্দুল মালেককে মামলা থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়। গত ১৪ জানুয়ারি আসামী রায়হানুর রহমানের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠণ করা হয়। মামলায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলার ১৭ জন সাক্ষী ও আসামীপক্ষে একজন সাফাই সাক্ষী দেন। নিহত পরিবারে বেঁচে থাকা একমাত্র শিশু মারিয়া বর্তমানে হেলাতলা ইউপি সদস্য নাছিমা খাতুনের কাছে বড় হচ্ছে।
২২ আগষ্ট মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে প্রথমে ২৯ আগষ্ট ও পরে পহেলা সেপ্টেম্বর রায় এর জন্য দিন ধার্য করা হয়। মামলার ১৮জন সাক্ষীর জবানবন্দি ও নথি পর্যালোচনা শেষে আসামী রায়হানুর রহমানের বিরুদ্ধে চারজনকে হত্যার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার নির্দেশ দেন।এ
দিকে মামলার রায় শোনার পর রায়হানুলের স্বজনরা আদালতের বারান্দায় কান্নায় ভেঙে পড়েন। সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পিপি এড. আব্দুল লতিফ রায় চাঞ্চল্যকরা এ মামলার রায় ঘোষণার পর সাংবাদিকদের বলেন, হত্যাকান্ডের ১০ মাস ১৬ দিন পর এ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। এ মামলার যে রায় হয়েছে তাতে আগামিতে কোন ব্যক্তি যাতে এ ধরণের নৃশংস হত্যাকান্ড ঘটাতে সাহস না পায় তার দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে। উচ্চ আদালতের এ রায় বহাল থাকবে বলে তিনি আশাবাদী। আসামীপক্ষের আইনজীবী এড. এসএম হায়দার আলী বলেন, এ বিচারে তিনি খুশী হতে পারেননি। মামলার পূর্ণাঙ্গ আদেশ পাওয়ার পর পর্যালোচনা শেষে এ রায় এর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।