সড়কে ১২ দিনে ৬৮১ জনের ১৯০-ই মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত

 সড়কে  ১২ দিনে ৬৮১ জনের ১৯০-ই মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত

নিউজ ডেস্কঃ ২০২২ সালের ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ২৮ এপ্রিল ঈদযাত্রা  ও  ৪ মে থেকে ১০ মে পর্যন্ত ঈদফেরার সড়কপথে দুর্ঘটনা ঘটেছে  ৩ হাজার ১৭৮ টি, আহত হয়েছেন ২ হাজার ৭৭ জন এবং নিহত হয়েছে ৬৮১ জন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায়। ‘সেভ দ্য রোড-এর অঙ্গীকার পথ দূর্ঘটনা থাকবে না আর শ্লোগান নিয়ে আকাশ-সড়ক-রেল ও নৌপথ দুর্ঘটনামুক্ত করার লক্ষ্যে দেশের একমাত্র স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন সেভ দ্য রোড ২০০৭ থেকে কাজ করে যাওয়ার ধারাবাহিকতায় ২০২২ থেকে নিয়মিত মাসিক প্রতিবেদন দেয়ার পাশাপাশি ২ ঈদকে ঘিরে আগে ও পরে প্রতিবেদন দিচ্ছে সেভ দ্য রোড-এর গবেষণা সেল। 

বাংলাদেশের ২৮ টি জাতীয় দৈনিক, বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা ও ইলেকট্রনিক্স চ্যানেলে প্রকাশিত-প্রচারিত তথ্যর পাশাপাশি সারাদেশে সেভ দ্য রোড-এর স্বেচ্ছাসেবিদের তথ্যানুসারে ২০২২ সালের ঈদুল  ফিতর উপলক্ষে ২৮ এপ্রিল থেকে ঈদযাত্রা ও  ৪ মে থেকে ১০ মে পর্যন্ত ঈদফেরার সড়কপথে প্রায় ২৬ লক্ষ মোটর সাইকেল চালানোর সময় নিয়ম না মানা এবং হেলমেট ব্যবহারে অনীহার কারণে ১ হাজার ৬১৮ টি দুর্ঘটনায় আহত ৯৬৮ এবং নিহত হয়েছেন ১৯০ জন; অসাবধানতা ও ঘুমন্ত চোখে-ক্লান্তিসহ দ্রæত চালানোর কারণে ৪০৭ টি ট্রাক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৩২১ এবং নিহত হয়েছে ১৬৮ জন; খানা খন্দক, অচল রাস্তা-ঘাট আর সড়কপথ নৈরাজ্যের কারণে ৪৬৭ টি বাস দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে ৩১০ এবং নিহত হয়েছে ১৫৪ জন; পাড়া-মহল্লা-মহাসড়কে অসাবধানতার সাথে চলাচলের কারণে লড়ি-পিকআপ-নসিমন-করিমন-ব্যাটারি চালিত রিক্সা-সাইকেল ও সিএনজি দুর্ঘটনা ঘটেছে ৬৮৬ টি আহত হয়েছে ৪৭৮ জন এবং ১৬৯ জন নিহত হয়েছে। সেভ দ্য রোড-এর চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জনাব জেড এম কামরুল আনাম, প্রতিষ্ঠাতা মোমিন মেহেদী, মহাসচিব শান্তা ফারজানা, ভাইস চেয়ারম্যান বিকাশ রায়, জিয়াউর রহমান জিয়া ও ঢাকা সাব এডিটরস কাউন্সিলের সহ-সভাপতি আনজুমান আরা শিল্পী, আইয়ুব রানাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ২০২২ সালের ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ২৮ এপ্রিল থেকে ঈদযাত্রা  ও  ৪ মে থেকে ১০ মে পর্যন্ত ঈদফেরার সড়কপথে দুর্ঘটনা ঘটেছে এই প্রতিবেদনে সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টি আলোচ্য তা হলো- ঈদযাত্রাকে কেন্দ্র করে কৃতিম টিকেট সংকট তৈরি করে ২ থেকে ৩ গুণ ভাড়া বাড়ানোর অপচেষ্টা করে যাচ্ছে একটি কুচক্রি মহল। আর এই মহলে সম্পৃক্ত সরকারি দলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি পুলিশ-প্রশাসনের একটি বড় অংশ। তারা ঈদযাত্র ও ফেরাকে কেন্দ্র করে ১০ হাজার কোটি টাকারও বেশি চাঁদাবাজি করে জনগনের ভোগান্তি তৈরি করলেও পুলিশ-প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করেছে; যার উত্তরণে সেভ দ্য রোড মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছে।২০২২ সালের ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ২৮ এপ্রিল থেকে ঈদযাত্রা  ও  ৪ মে থেকে ১০ মে পর্যন্ত ঈদফেরার সড়কপথে দুর্ঘটনা ঘটেছে।

রিখ মোটরবাইক দূর্ঘটনা/আহত/নিহত ট্রাক দূর্ঘটনা/আহত/নিহত র্ঘটনা/আহত/নিহত অন্যান্য

দূর্ঘটনা/আহত/নিহত

২৮ এপ্রিল ২০২২ ২০৪/১১১//১৮ ৩৪/২৯/১৪ ৪২/৩১/১৫ ৯৪/৫০/১৩

২৯ এপ্রিল ২০২২ ১৪৭/৮৫/২২ ২৮/২১/১২ ৩৮/২৮/১১ ৭৬/৭২/১৬

৩০ এপ্রিল ২০২২ ১২৪/৯৪/১৭ ৪৪/৩৪/১৩ ২৬/২০/০৯ ৫৯/৫৩/১১

১  মে ২০২২ ১৩৩/১২২/১৪ ২৫/২০/১২ ২৮/২১/০৮ ৪৩/২৭/২০

২ মে ২০২২ ১০৯/৬৬/১১ ১৯/১৬/১৪ ২৯/২৪/১৪ ৭১/৫২/১৮

৩ মে ২০২২ ১২০/৫৭/১০ ৩৪/২৮/১৬ ১৭/১৭/১৩ ২৮/১৯/১৩

৪ মে ২০২২ ১২৩/৭৭/১৭ ৪১/৩৯/১৩ ২৮/২৪/১১ ৪৪/৩৪/১৭

৫ মে

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ২৮ এপ্রিল থেকে ঈদযাত্রা  ও  ৪ মে থেকে ১০ মে পর্যন্ত ঈদফেরার সড়কপথে দুর্ঘটনা ঘটেছে পর্যন্ত নৌপথ দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৩৭ টি। আহত ৫৬১ জন, নিহত হয়েছে ২৮ জন। ২৮ এপ্রিল থেকে ঈদযাত্রা  ও  ৪ মে থেকে ১০ মে পর্যন্ত রেলপথ দুর্ঘটনা ঘটেছে ২২৮ টি। আহত হয়েছে ২৫৬ জন, নিহত হয়েছে ১৭ জন। ২৮ এপ্রিল থেকে ঈদযাত্রা  ও  ৪ মে থেকে ১০ মে পর্যন্ত আকাশপথে কোন দুর্ঘটনা না ঘটলেও বিমানবন্দরের অব্যবস্থাপনার কারণে অসুস্থ্য হয়েছেন অর্ধশতর বেশি মানুষ। এছাড়াও সহজ-এর টিকিট জালিয়াতি, দূরপাল্লার পরিবহনে কৃতিম টিকিট সংকট ও পুলিশ প্রশাসনের চরম অবহেলায় এবার ঈদযাত্রা ও ঈদফেরায় অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। যার উত্তরণে পদক্ষেপ না নিলে আসন্ন ঈদুল আযহাতেও চরম ভোগান্তির মুখোমুখি হতে হবে সাধারণ মানুষকে; বাড়বে আরো ২ গুণেরও বেশি সড়কপথ দুর্ঘটনা।


বরাদ্দের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

বরাদ্দের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

পরিতোষ কুমার বৈদ্য,শ্যামনগর প্রতিনিধি,  সাতক্ষীরাঃআজ মঙ্গলবার সকাল ১১:০০ টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘লিডার্স’ এবং নাগরিক সংগঠন ‘সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন।সংবাদ সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দূর্যোগ কবলিত দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলকে দুর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করে ওই ঝুঁকি মোকাবেলায় জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধি ও নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ। তারা উপকূলের টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সুপেয় পানি সরবরাহে সরকারের নেওয়া প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন ও প্রয়োজনীয় নতুন প্রকল্প গ্রহণের সুপারিশ করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উত্থাপন করেন লিডার্সের নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার মণ্ডল। সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্রের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করেন এডাব পরিচালক জসীম উদ্দীন, উন্নয়ন ধারা ট্রাস্টের সদস্য সচিব আমিনুর রসুল বাবুল, ডিআরইউ’র সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ, নৌ সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে, বিএমএ দপ্তর সম্পাদক ডা. মো. শহীদুল্লাহ, স্ক্যান সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মুকুল, সমাজ কল্যাণ উন্নয়ন সংস্থা (স্কাস) চেয়ারম্যান জেসমিন প্রেমা, ফেইথ ইন একশন’র কর্মসূচী সমন্বয়কারী তীমন বাড়ই, সচেতন সংস্থার সাকিলা পারভীন, মৃত্তিকা সমাজ উন্নয়ন সংগঠনের খাদিজা খাতুন, ঢাকাস্থ পাইকগাছা সমিতির জাহাঙ্গীর আলম প্রমূখ।

সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত সুপারিশে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগকে মাথায় রেখে সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাটসহ উপকূলীয় অঞ্চলে স্থায়ী ও টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে হবে। ওই এলাকায় পর্যাপ্ত সাইক্লোন শেল্টারসহ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। উপকূলবাসীর সুপেয় পানির টেকসই ও স্থায়ী সমাধান করতে হবে। একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের আদলে উপকুলীয় এলাকায় একটি বাড়ি একটি সেল্টার কার্যক্রম শুরু করতে হবে। নদীভাঙ্গন ও ভূমিক্ষয় ঠেকাতে উপকূলে ব্যাপকহারে বৃক্ষরোপন কর্মসূচি গ্রহণ ও সবুজ বেষ্টনী গড়ে তুলতে হবে। উপকুলের রক্ষাকবচ সুন্দরবন রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সর্বোপরি উপকূল উন্নয়ন বোর্ড গঠন করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ভৌগলিক অবস্থান, ঘন ঘন প্রাকৃতিক দূর্যোগ, ভঙ্গুর অবকাঠামো, দারিদ্রতা, দীর্ঘমেয়াদী লবণাক্ততা, সংকটাপন্ন কৃষি, প্রভৃতির কারণে উপকূলীয় এলাকার মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট জেলা।তাই ওই এলাকাকে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করে দীর্ঘমেয়াদী মহাপরিকল্পনা নেওয়া দরকার। কারণ করোনা পরিস্থিতি এবং সুপার সাইক্লোন আম্ফান ও ইয়াসের পর এখনো জনজীবনে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসেনি। বরং স্বাভাবিক জোয়ারের পানিতেই উপকূলের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। তাই নতুন করে ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’র খবরে ওই অঞ্চলের মানুষ চরম আতংকিত হয়ে পড়েছে।

লিডার্সের গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০০৪ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ১৬ বছরে প্রাকৃতিক দুর্যোগে সাতক্ষীরা ও খুলনার উপকুলীয় এলাকায় প্রতিবছর পরিবার প্রতি গড়ে এক লক্ষ দুই হাজার ৪৮৯ টাকার ক্ষতি হয়।এরমধ্যে একটি পরিবারে সর্বোচ্চ ৫০ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা এবং সর্বনিম্ন ৪৫ হাজার ২০০ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আরো বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ১৯৯১ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ১৯৭টি বড় প্রাকৃতিক দূর্যোগের মুখোমুখি হয়েছে। যা এদেশের মানুষের জীবন-জীবিকা, সম্পদ, খাদ্য, পানি, বাসস্থানসহ অন্যান্য সংকট সৃষ্টি করেছে। এ সংকট দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলে সব থেকে বেশি। এই সংকট থেকে উত্তোরণে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে অদূর ভবিষ্যতে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চল জনশূণ্য হয়ে পড়বে।