একজন দক্ষ টিউটর ও আমার অভিভাবক

ফুজিয়ান এগ্রিকালচার এবং ফরেস্ট্রি ইউনিভার্সিটিতে চাইনিজ গভর্নমেন্ট স্কলারশিপ (CSC Scholarship) হয়ে যাওয়ায় উচ্চতর ডিগ্রী (পিএইচডি) অর্জনের উদ্দেশ্যে চীনে আসা। তবে ওটা ছিল আমার চীনের দ্বিতীয় সফর। এর আগে ২ মাসের একটা অফিসিয়াল প্রশিক্ষনে চীনের সিচুয়ান প্রদেশের ছেংদু শহরে কিছু সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছিলাম। বলতে গেলে সেখান থেকেই চীনের প্রতি একটু দুর্বল ছিলাম। কারন ওই দুই মাসে চীনের প্রযুক্তি, রাস্তাঘাট, চীনাদের সম্পর্কে ভালো ধারণা হওয়ার পাশাপাশি তাদের আতিথেয়তা আমাকে অনেক মুগ্ধ করেছিল। তাই প্রশিক্ষন শেষে দেশে ফিরে পিএইচডি এর সুযোগ আসায় সেটা আর মিস করিনি। চীনাদের সম্পর্কে অনেকের খারাপ ধারনা আছে। কিন্তু আমি বলব কারো সম্পর্কে মন্তব্য করার আগে তাদের সাথে মিশে এবং বুঝে মন্তব্য করতে হবে। সেটা শুধু চীনা জাতিগোষ্ঠী না বরং সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হওয়া উচিৎ বলে আমার মনে হয়। আজ আমার পিএইচডি টিউটর/সুপারভাইজার, আমার চীনের অভিভাবকের সম্পর্কে কিছুটা লেখার চেষ্টা করেছি।  

আমার সুপারভাইজার একজন চাইনিজ কানাডিয়ান, তাই ওনার সাথে আমার খুব কমই সাক্ষাত হয়। কানাডার একটি নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার পাশাপাশি একটা রিসার্চ ডিভিশনের প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন উনি। বেশিরভাগ সময়ই ইমেইল, ওভার ফোনে আমাদের যোগাযোগ হয়। চীনে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় সহ আরও কিছু স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে গবেষণা সংশ্লিষ্ট কাজে যুক্ত থাকায় ২/৩ মাস পরপর উনি কানাডা থেকে চীনে আসেন। ওনার সাথে আমার প্রথম সাক্ষাত হয়েছিল আমার এখানে আসার প্রায় ২ মাস পরে। সবার মুখে শুনে এসেছি পিএইচডি সুপারভাইজার ‘সেকেণ্ড গড’ অর্থাৎ অনেক ভয়ানক হয়। সেজন্য যেদিন প্রথম দেখা করতে গিয়েছিলাম সেদিন আমিও অনেক ভয়ে ছিলাম। না জানি আজ কপালে কি আছে। সেজন্য নিজের হৃদস্পন্দন নিঃসন্দেহে অনেক বেড়ে গিয়েছিল।

সুপারভাইজার গাড়ীতে করে আমাদের ইন্টারন্যাশনাল ছাত্রদের ডরমেটরির গেটে আসার মিনিট পাঁচেক আগে আমাকে কল দিয়ে জানালেন। সেদিন গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির সাথে ঠান্ডাটাও পড়েছিল বেশ। তারপরেও সুপারভাইজার দেখা করতে আসছে এই ভয়ে আমি যথাসম্ভব দ্রুত তৈরি হয়ে গেটে আসতেই দেখি ওনার গাড়ী এসে হাজির। গাড়ীর চালকের আসনে বসা ছিল আমার পূর্বপরিচিত আমাদের কলেজের একজন শিক্ষক এবং পেছনের আসনে সুপারভাইজার। আমি এসে চালকের পাশের আসনে বসতে বসতে সুপার ভাইজারের সাথে হাই হ্যালো হতে উনি আমার দিকে হ্যান্ডশেক করার জন্য ওনার বাম হাতটা এগিয়ে দিলেন। আমিও নিজের বাম হাতটা দিয়েই হ্যান্ডশেকের কাজটা সারলাম। পরে নিজের বাম হাত এগিয়ে দেওয়া নিয়ে চিন্তা করলাম হয়ত আমার প্রথম বুদ্ধির পরীক্ষা ছিল ওটা যে আমি ওনার দিকে কোন হাত দিই (আমার ধারণা ভুল ও হতে পারে)।

এরপর কাছাকাছি একটা হোটেলের লবিতে গিয়ে আমরা বসলাম এবং নিজেদের মধ্যে প্রয়োজনীয় কিছু কথাবার্তা সেরে নিলাম। সুপারভাইজার প্রথমে আমার স্কলারশিপের পরিমান কত এটাতে আমি চলতে পারব কিনা, ফ্যামিলি নিয়ে আসলে চলতে কোন সমস্যা হবে কিনা এসব বিষয়ে জানতে চাইলেন। আমি সব কিছুতেই হ্যাঁ সূচক উত্তর দিলাম। প্রাসঙ্গিক আরও কিছু কথা শেষে আমার কাছে জানতে চাইলেন ওনার কাছে আমার কোনকিছু বলার বা চাওয়ার আছে কিনা। সেসময় অনেক ভয় কাজ করছিল আমার মাঝে। সেজন্য কোনকিছুই না ভেবে আমি উত্তর দিলাম ‘না’। পরে আমাকে ওনারা গাড়িতে করে আমার ডরমেটরিরর গেটে পৌঁছে দিয়ে চলে গেলেন। যাওয়ার আগে বলে গেলেন পরদিন সকালে আমাকে ক্যাম্পাসে নিয়ে যাবেন। 

সকাল ৭.১৫ মিনিটে আমাকে সময় দিলেন তৈরি থাকার জন্য। আমি আগেভাগেই তৈরি হয়ে ওনার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। ঠিক ৭.১৩ মিনিটে উনি গাড়ীর গ্লাস নামিয়ে আমাকে ডাকছেন। আমি গিয়ে দেখলাম ওনার সাথে অন্য একজন শিক্ষক আছেন। খুব অল্প সময়ের ভিতরেই আমরা ক্যাম্পাসে পৌঁছে গেলাম। ক্যাম্পাসে এসে আমার সুপার ভাইজার ওনার রিসার্চ গ্রুপের চারজন শিক্ষকের সাথে একের পর এক পরিচয় করিয়ে দিলেন। উনি যেহেতু কানাডায় থাকেন, তাই এখানে আমার গবেষণার কাজ তত্ত্বাবধায়নের জন্য একজন কো-সুপারভাইজার বাছাই করতে হবে সেটায় স্বাভাবিক। সেই উদ্দেশ্যে, শিক্ষক মহাশয়রা অল্প সময়ের ভিতর খুবই ভালোভাবে তাদের কাজ সম্পর্কে আমাকে ব্রিফিং করলেন। নিজের গবেষণা কাজের সাথে মিল না থাকায় সবার কাজই একটু অন্যরকম লাগছিল। তারপরেও মনযোগের সাথে সবার কাজ নিয়ে চিন্তা করছিলাম। সবশেষে আসছিলেন বর্তমানে যিনি আমার কো-সুপারভাইজার তিনি। 

প্রথমে ওনার হাস্যজ্জ্বল মুখ, অসাধারন বাচন ভঙ্গী, সুন্দর ব্যবহার আমাকে অনেক আকর্ষণ করেছিল। এরপর সৌভাগ্যক্রমে ওনার গবেষণা কাজও আমার সাথে মিলে গেল। আমি মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেললাম ওনার সাথেই আমি কাজ করব। তবে আমি কাকে পছন্দ করব সে সিদ্ধান্তটা নেওয়ার ব্যাপারে ও আমার সুপারভাইজার আমাকে ভাববার জন্য সময় নিতে বলেছিলেন। কিন্তু আমি কালক্ষেপণ না করেই ওই দিনই সন্ধ্যায় আমার সুপারভাইজারকে জানিয়ে দিলাম আমার পছন্দের কো-সুপারভাইজারের নাম। সাথে অন্য যে তিনজন শিক্ষক ছিলেন ওনাদেরকেও জানালাম কেন বর্তমান কো-সুপারভাইজারের সাথে কাজ করতে আগ্রহী। 

স্বাভাবিক ভাবেই পিএইচডি অধ্যায়নের প্রথম বছরে ল্যাবে তেমন সময় দেওয়া হয়ে ওঠে না। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই ক্লাস পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত থাকা লাগে। আমার ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম নয় সেজন্য প্রথম বছরে কো-সুপারভাইজারের সাথে আমার খুব কমই সাক্ষাত হত। কো-সুপারভাইজারের সাথে যখনই দেখা করতাম তখনই মনে হত ভালো মানুষ পৃথিবীতে এখনো অনেক আছে। বর্তমানে প্রায় প্রিতিদিনই আমাদের সরাসরি সাক্ষাতে বা মোবাইলের মেসেজ আদান প্রদানের মাধ্যমে কথা হয়। এককথায় বলতে গেলে আমার চীনে সবচেয়ে সেরা উপহার আমার কো-সুপারভাইজার। সুপারভাইজার এবং কো-সুপারভাইজার দ্বয়ের মত স্বনামধন্য সায়েন্টিস্টের সুপারভিশনে কাজ করতে পেরে সত্যি নিজেকে ভাগ্যবান মনে হয়। আমার ডিগ্রীর এই অর্ধ পর্যায়ে এসে ওনাদের থেকে যেসব সুযোগ সুবিধা আমি পেয়েছি সেটা লিখে শেষ করতে পারবনা, তার মধ্য থেকে আজ সামান্য কিছু স্মৃতিচারন।

চীনে করোনার ভয়াবহতার মাঝামাঝি পর্যায়ে একদিন কো-সুপারভাইজার আমাকে আমাদের কমিউনিটির (আমরা যে বাসায় থাকি) গেটে আসতে বললেন। আমি আসতেই আমাকে নিয়ে সুপারশপে (আমাদের ফ্লাটের গ্রাউন্ড ফ্লোরে) ঢুকে বাজার করে দেওয়ার জন্য পিড়াপিড়ি করতে লাগলেন। বলে রাখা ভালো চাইনিজ গভর্নমেন্ট স্কলারশিপের পাশাপাশি সুপারভাইজার আমাকে মাসিক আরো কিছু আর্থিক সুবিধা দিয়ে থাকেন। করোনার কারনে ক্যাম্পাসের হিসাব শাখা বন্ধ থাকায় সেটা কিছুদিন বিলম্বিত হওয়ায় উনি ভাবছেন আমি হয়ত অনেক আর্থিক সংকটের ভিতর আছি। সেজন্য ওনার এই জোরাজুরি। অনেক অনুরোধ করেও সুপারভাইজারকে বোঝাতে পারিনি যে আমার কিছু লাগবেনা। পরে বাচ্চার জন্য বেশ কিছু খাবার-দাবার কিনে দিয়ে চলে গেলেন।

রিসার্চের আলোচনার পাশাপাশি প্রতি মাসেই আমার কাছে উনি কয়েকবার জিজ্ঞাস করেন আমি বেতন পেয়েছি কিনা, কোন সমস্যা আছে কিনা, আমার বাচ্চা কেমন আছে, ফ্যামিলি কেমন আছে, আমার দেশে এখন কি অবস্থা এবং আরও নানান বিষয়ে খোঁজ খবর নেন। আমি সবকিছুর সঠিক উত্তর দিই এবং বরাবরই বলি আমার টাকার সমস্যা নেই, লাগলে আপনাকে জানাব। করোনা পরবর্তী সময়ে এত কয়বার জিজ্ঞাসা করেছিলেন আমার দরকার না থাকার সত্ত্বেও বলেছিলাম হ্যাঁ আমার কিছু টাকা লাগবে। তখনই উনি আমার উই-চ্যাটে (চীনাদের সর্বাধিক ব্যবহৃত সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম) ২০০০ ইউয়ান (২৫০০০ টাকার মত) ট্রান্সফার করেছিলেন। পরে টাকা পেয়ে সেটা শোধ দিই। এছাড়া উনি আমার কাছে সবসময়ই বলেন যেকোন কোন সমস্যা হলে যেন আমি নিঃসঙ্কোচে উনাকে জানাই তাই সেটা রিসার্চ সংশ্লিষ্ট বা ব্যক্তিগত হোক না কেন।  

একবার আমার ল্যাপটপে ত্রুটি ধরা পড়েছিল, সারাইয়ের জন্য সুপারভাইজার কে বলেছিলাম কারন ত্রুটি মিস্ত্রিকে বোঝানো আমার পক্ষে কষ্টকর ছিল। তখন উনি আমাকে ড্রাইভ করে শো-রুমে নিয়ে ল্যাপটপ সারিয়ে দিলেন। ৩৫০ ইউয়ান বিল হয়েছিল উনি পরিশোধ করলেন এবং বললেন এটা নাকি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রিফান্ড করবেন। 

কিছুদিন পরে ল্যাবে একটা ডেস্কটপ দেওয়ার জন্য রিকুয়েস্ট করেছিলাম কারন সবসময় ল্যাপটপ বহন করা একটা ঝামেলা মনে হত। স্টুডেন্ট দের ডেস্কটপ দেয়ার নিয়ম নেই থাকলে নিশ্চই দিতেন এমনটায় বললেন এবং  আমাকে ল্যাবের একটা কমন ডেস্কটপ ব্যবহার করতে বললেন। তখন আমি বলেছিলাম ওটাতেই হবে। পরে কো-সুপারভাইজার একটা নতুন ডেস্কটপ নিজের টাকায় কিনে আমার ডেস্কে সেট করে দিয়ে গেছেন। সেদিন আমার ল্যাবে যেতে একটু দেরি হচ্ছিল। উনি আমাকে আগে থেকে কিছু না জানিয়ে, হয়ত আমাকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য আমার ডেস্কে এসে ডেস্কটপ সেট করে সেটার ছবি তুলে আমাকে পাঠিয়েছিলেন। প্রথমে আমি বুঝতে পারিনি উনি কিসের ছবি পাঠিয়েছেন। পরে বুঝলাম এটা আমার ডেস্কের ছবি সাথে ডেস্কটপ। 

আমি যে রুমে বসি সেখানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক এবং পোস্ট-ডক্টারল ফেলোরা বসেন। রুমের সবার ব্যবহারের জন্য একটা ওয়াইফাই মোডেম আছে, সেটাতে মাঝেমধ্যে কিছু সমস্যা দেখা দেয়। আমি একদিন কো-সুপারভাইজার কে এ ব্যাপারে বলেছিলাম, কিন্তু এটা বলিনি যে আমাকে একটা নতুন মডেম দিলে ভালো হয়। কেন জানিনা দুইদিন পরেই একটা নতুন মডেম কিনে সেটা আমার ডেস্কে সেট করে দিয়ে গেছেন।  

একদিন সারাক্ষন খুব বৃষ্টি। আমরা সবাই দুপুরের খাবার খেয়ে মোবাইল সাইলেন্স করে ভাত ঘুমে বিভোর। কো-সুপারভাইজার আমাকে না পেয়ে আমার স্ত্রীর উই-চ্যাটে অনেকবার মেসেজ দিয়েছেন নিচে নামার জন্য। আমরা কেউ বুঝতে পারিনি। পরে আমার মোবাইলে কল দিয়ে নিচে নামতে বললেন। উনি গেটে এসে অনেকক্ষন অপেক্ষা করছিলেন। আমি গিয়ে সরি বলে বললাম ‘আমরা সবাই ঘুমাচ্ছিলাম’ উনি মুচকি হাসি দিয়ে আমাকে একটা ব্যাগ দিয়ে বললেন ‘এখানে তোমার বাচ্চার জন্য কিছু নতুন কাপড় আছে’। আমি বললাম ‘স্যার এগুলো কি জন্য? ওরতো এগুলো অনেক আছে’। উনি জোর করে দিয়ে গেলেন। বাসায় নিয়ে দেখলাম অনেকগুলো ব্র্যান্ডের কাপড় দিয়ে গেছেন। এখানে আসার পরে বাচ্চার বাসায় খেলার জন্য অনেক রকমের খেলনা কেনা হয়েছে। বাসায় ওর মা খেলনা গোছাতে একরকম  হিমশিম খায়। এতগুলোর পরেও সুপারভাইজার বাচ্চার জন্য অত্যাধুনিক কিছু দামি খেলনা কিনে দিয়েছেন। প্রায় প্রতি মাসেই বাচ্চার জন্য খেলনা নিয়ে এসে আমাকে জানান এবং ওনার থেকে নিয়ে আসতে বলেন। 

এখানে আসার পরে সুপারভাইজারের পরিবার সহ আমার রিসার্চ গ্রুপের অন্যান্য বন্ধুরা মিলে আমাদের বাসায় আমরা কয়েকবার একসাথে হয়েছি। এছাড়া ওনার নিজের বাসায় খাওয়া এবং রেস্টুরেন্টে খাওয়ার পাশাপাশি অনেক সুন্দর পারিবারিক সময় কাটিয়েছি। ওনার স্ত্রী আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। পাশাপাশি খুব ভালো মানের একজন শেফ হওয়ায় বাসায় বানানো বিভিন্ন রকমের ব্রেড, কেক, কুকিজ এগুলো আমাদের বাসার জন্য প্রতিনিয়ত পাঠিয়ে দেন। 

চীনে করোনা ভাইরাসের যখন পিক টাইম চলছিল তখন আমরা (আমি, আমার স্ত্রী ও বাচ্চা) মানসিকভাবে খুবই ভেঙে পড়েছিলাম। সারাক্ষণই ভাবতাম হয়ত আর বেঁচে দেশে ফেরা সম্ভব না। সেই মুহূর্তগুলো আমার কো-সুপারভাইজার আমাদেরকে একজন দক্ষ অভিভাবকের মত সার্বক্ষণিক মানসিক সাপোর্ট দিয়ে, সঠিক তথ্য দিয়ে এবং আমাদের ভবিষ্যৎ করনীয় বিষয় নিয়ে প্রতিদিন দিকনির্দেশনা দিতেন। যেটার মূল্য আমরা কোনদিন শোধ দিতে পারবনা।  

এরকম অনেক দৃষ্টান্ত আছে, খুব সংক্ষেপে সামান্য কিছু এখানে তুলে ধরলাম। সবসময় শুনে এসেছি পিএইচডি সুপারভাইজার অনেক ভয়ানক হয়। আমি আমার সুপারভাইজার দ্বয় থেকে এখনো ভয়াবহতার কিছুই পাইনি বরং আমার গবেষণার পাশাপাশি ব্যক্তিগত কাজেও উনাদের থেকে প্রতিটা পদে পদে যে সাহায্য পেয়ে আসছি সেটা একজন কাছের বন্ধুর থেকে ও ঢের বেশি। 

পিএইচডি ডিগ্রী অর্জনে পাহাড় সমান সুউচ্চ কঠিন পথ পেরিয়ে তারপরেই চূড়ার নাগাল পেতে হয় এই চরম সত্যটুকু আমি অনেক আগে থেকেই জানি। হয়ত সামনে অনেক ভয়াবহতার কিছু আছে এবং সেটাকে মনে ধরেই প্রতিটা পদক্ষেপ ফেলছি। সুপারভাইজার এবং কো-সুপাভাইজার দ্বয়ের অপরিমেয় জ্ঞ্যান, ধৈর্য, উদ্যম ও প্রেরণায় আমার ডিগ্রীর প্রথম অর্ধেক শেষে আমি ফার্স্ট অথর হিসাবে ৪ টি এবং কো-অথর হিসেবে ২ টি মোট ৬ টি মানসম্মত গবেষণা পত্র প্রকাশে সমর্থ হয়েছি। এখানে আমার সবকিছুই অনেক সহজ করে দিয়েছেন আমার সুপারভাইজার দ্বয়। এখন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটুকুই প্রত্যাশা যেন ওনাদের প্রিয় হয়ে এভাবেই আমার কাঙ্ক্ষিত লক্ষে পৌছাতে পারি। 


লেখকঃ অজয় কান্তি মন্ডল

গবেষক

ফুজিয়ান এগ্রিকালচার এবং ফরেস্ট্রি ইউনিভার্সিটি

ফুজিয়ান, চীন।


সংবাদটি শেয়ার করুন
পূর্ববর্তী সংবাদ
পরবর্তী সংবাদ