জানা গেছে, উপজেলার ত্রিমোহিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম আনিছুর রহমান আওয়ামী লীগের সমর্থক। ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনি আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে বিজয়ী হয়ে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এর আগে ২০১৬ সালের ২৮ মে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরেও তিনি স্বাভাবিকভাবে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন। শনিবার স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা ত্রিমোহিনী ইউনিয়ন পরিষদে এসে ইউপি চেয়ারম্যান আনিছুর রহমানের অপসারণের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কক্ষের নামফলক ও তালা ভেঙ্গে নতুন তালা ঝুলিয়ে দেয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও সাতবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক শামছুল আলম বুলবুল, ত্রিমোহিনী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আকরাম হোসেন, উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক অহিদুর রহমানসহ এলাকার বিএনপি'র নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।
ত্রিমোহিনী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আকরাম হোসেন বলেন, বিএনপি এবং সকল অঙ্গ সংগঠনের পক্ষ থেকে সাধারণ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ত্রিমোহিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা এই চাবি এখন উপজেলা প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপিসহ হস্তান্তর করবো। আমরা চাই আওয়ামী লীগের দোসর ইউপি চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান আর না থাকুক। এখানে সরকারি প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হোক। উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও সাতবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা বলেন, সরকারি স্থাপনায় যেন কোন ক্ষতি না হয়। এ ছাড়া এখানে যেন কোন বিশৃঙ্খলা না হয়, সে কারণে পাশের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে আমি সেখানে গিয়েছিলেন।
ত্রিমোহিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম আনিছুর রহমান বলেন, 'শনিবার ইউনিয়ন পরিষদ বন্ধ ছিল। এ সুযোগে বিএনপির কতিপয় নেতাকর্মীরা পরিষদে এসে আমার নামীয় সাইনবোর্ড ও কক্ষের তালা ভেঙ্গে দিয়েছে। আমি ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে সর্বস্তরের জনগণের ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হই। মূলত আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে তারা এ কাজটি করছে।' তিনি বলেন নেতৃত্বে দিয়েছেন উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও সাতবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা বাবু এবং ত্রিমোহিনী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আকরাম হোসেন। তিনি আরও জানান, বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।
কেশবপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খান শরিফুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পায় ইউনিয়নে পরিষদের চেয়ারম্যানের কক্ষের তালা ভেঙ্গে নতুন তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘটনার সময় ইউপি চেয়ারম্যানের কোন লোকজন সেখানে ছিল না। বর্তমানে পরিবেশ শান্ত রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোকসানা খাতুন বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।