নিজস্ব প্রতিবেদক:বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ মনির হোসাইন বলেন, গত বছরের মার্চে বাংলাদেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ প্রায় দেড় বছর হয়ে গেছে এখনো খোলার কোনো সম্ভাবনাই দেখা যাচ্ছে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুললে নাকি করোনা ছড়াবে। অথচ দেশের সকল ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান,গার্মেন্টস, গণপরিবহন, নির্বাচনী প্রচারণা,অফিস-আদালত, সরকারি-বেসরকারি, খেলাধুলা ইত্যাদি সব আগের মতোই চলছে, সেখানে করোনা ছড়াচ্ছে না।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম হতাশা দেখা দিয়েছে। ফলে তাদের মধ্যে নানা রকম দুশ্চিন্তা ও মানসিক সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা এমনিতেই প্রশ্নবিদ্ধ। আর এই পরিস্থিতির কারণে, শিক্ষার গুণগত মান ও শিক্ষার হার কমে যাচ্ছে। দেশের সমাজ ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীরা এমনিতেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে চায় না। আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলে তো কথাই নেই।
স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসাসমূহ বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে পারছে না। পক্ষান্তরে বয়স বেড়ে যাচ্ছে কিন্তু চাকরির বয়স বাড়ছে না। ফলে দেশে বেকার সমস্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। শিশু-কিশোরদেরকে জোর করে যা শেখানো হয়েছে, তারা সব ভুলে যাচ্ছে এবং তারা নানা অপকর্মে (কিশোর গ্যাং) লিপ্ত হচ্ছে। শিশু শ্রম বৃদ্ধি পাচ্ছে। সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ছাত্রদেরকে সোপর্দ করানো হচ্ছে। এই অবস্থায় তাদের পরিবার ও তাদের ভবিষ্যত হুমকির মুখে পড়ছে। অনেক পরিবার তাদের একমাত্র সন্তানের পাঠানো টিউশনের টাকায় চলত। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার ফলে আজ ওই পরিবার ও সন্তানটি ধ্বংসের পথে।
তিনি আরো বলেন, অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের পক্ষ থেকে জোর দাবী উঠেছে। তাদের দাবি যৌক্তিক এবং এ দাবী শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ারের সাথে জড়িত। এ ব্যাপারে বিবেকবান সকলেই একমত। শিক্ষার্থীরা আগে থেকেই বার বার এ দাবী জানিয়ে আসছে। কিন্তু সরকার কোনভাবেই তাদের দাবীর প্রতি কর্ণপাত করেনি। ফলে তারা রাস্তায়ও নেমে এসেছিলো। এ অবস্থায় আমরা সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়ে বলতে চাই, সরকারকে অবিলম্বে স্বাস্থ্য সুরক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যথায় শিক্ষার্থীদের প্রতি এমন দায়িত্বহীন আচরণ অব্যাহত রাখলে সারাদেশে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের বিষ্ফোরণ ঘটবে। আর তখন কোন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে তার দায়ভার সরকারকেই বহন করতে হবে।
আজ ২৭ মে-২০২১ বৃহস্পতিবার বিকাল ৫ঃ৩০ টায় বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইটে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ সভাপতি কে এম ইমরান হুসাইন এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরিউক্ত কথাগুলো বলেন।
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ সেক্রেটারি আহসান আহমদ খান ও উত্তর সেক্রেটারি মুহাম্মদ আবু সালেহ এর যৌথ পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা আজিজুল হক, কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তর সভাপতি মুহাম্মদ ইসমাঈল খন্দকার, শ্রমিক মজলিসের কেন্দ্রীয় অফিস ও দপ্তর সম্পাদক খালেদ সানোয়ার।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের বায়তুলমাল সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাসেল, খেলাফত মজলিস পল্টন থানা সেক্রেটারি নাঈম আহমদ, হাসান শাহরিয়ার রুমী, মুসফিকুস সালেহীন প্রমুখ।
