মোঃ সবুজ মিয়া, বগুড়া: ডিজিটাল বিশ্ব যেভাবে রেসের লাগামহীন ঘোড়ার মতো দৌড়াচ্ছে। তাতে পরিবর্তন এসেছে জীবনযাত্রার মানে এবং কর্মক্ষেত্রে। অদক্ষ মানুষজন একদিকে হারিয়েছেন বেঁচে থাকার অবলম্বন চাকরি, অপরদিকে ডিজিটাল স্কিল নির্ভর তরুণরা পথ বের করেছেন সম্ভাবনার। এই সংকটময় পরিস্থিতিতে দেশে বেড়েছে ই-কমার্স এবং এফ-কমার্সের ক্ষেত্র। তেমনি একজন বগুড়ার অতি পরিচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর আনিকা তাবাসসুম জেসি।আনিকা মূলত বগুড়ার খাবার নিয়ে সবচেয়ে বেশি কনটেন্ট বানিয়ে থাকেন। চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে যাত্রা হলেও বর্তমানে আনিকার ফেসবুকে ফলোয়ারের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে।
বগুড়া সদর উপজেলার ব্যাংক পাড়ায় বসবাস করলেও আনিকার জন্মস্থান এবং বেড়ে ওঠা মূলত ঢাকায়। বগুড়ায় ফেরার পর করতোয়া মাল্টিমিডিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পাশ করেছেন। এরপর বগুড়া পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে বর্তমানে পুন্ড্র ইউনিভার্সিটিতে কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টে পড়াশোনা করছেন।ছোটবেলা থেকে খেলাধুলা অনেক পছন্দ করতেন। ঢাকায় থাকাকালীন বিভাগীয় পর্যায়ে হ্যান্ডবল এবং ফুটবল খেলায় কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছে তিনি। তবে ঢাকায় খেলাধুলার সুযোগ থাকলেও বগুড়ায় ফেরার পর মেয়েদের খেলাধুলার তেমন পরিবেশ না থাকায় খেলাধুলায় নিয়মিত হতে পারেনি আনিকা।
বগুড়ায় খেলাধুলার তেমন সুযোগ না থাকায় নতুন যাত্রা হয় ফুড ব্লগিংয়ের মাধ্যমে। বন্ধুদের অনুপ্রেরণা এবং সহযোগিতায় ফুড ব্লোগিং শুরু করে আনিকা। তার সুন্দর উপস্থাপনার মাধ্যমে বগুড়ার নামিদামি রেস্টুরেন্ট থেকে শুরু করে স্ট্রিট ফুড গুলোর রিভিউ করে বগুড়ার খাবার এবং ঐতিহ্যকে সকলের সামনে তুলে ধরছেন তিনি। তার এই ফুড রিভিউগুলো সানন্দে গ্রহণ করছেন বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ।
ফুড ব্লগিং নিয়ে আনিকা তাবাসসুম জেসি বলেন, শিক্ষাজীবনের একটা বড় সময় আমাদের বাইরে থাকতে হয়। এই সময়ে আমরা বাইরের খাবার বেশি খেয়ে থাকি। যেহেতু প্রায় প্রতিদিনই বাইরে খেতে হয়, সেখান থেকেই ফুড ব্লগিংয়ের চিন্তা মাথায় আসে। ভিডিও তৈরিতে আমাকে আমার বন্ধু বুশান, আলভি, আরিয়ান এবং মুশফিক সহযোগিতা করে থাকে। এখন মূলত বগুড়ার খাবার এবং ইতিহাস নিয়ে কাজ করছি। তবে আমার ইচ্ছে আছে পুরো বাংলাদেশের খাবার এবং ঐতিহ্যকে তুলে ধরার।
আনিকা আরও জানান, আমি মানুষের জন্য যা করেছি তার থেকে বেশি মানুষ আমাকে দিয়েছে। মানুষ আমাকে যে ভালোবাসা ও সম্মান দিয়েছে এইটাই আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। বগুড়ার যে স্ট্রিট ফুড গুলোর রিভিউ করি এতে তাদের বিক্রি বাড়ে। এর মাধমে তারা ভালোভাবে পরিবার চালাতে পারে এবং আমার জন্য দোয়া করেন। এইটাই আমার কাছে সবচেয়ে বেশি। তাদের এভাবে সাপোর্ট দিতে আমার ভালো লাগে।
বগুড়ার আকবরিয়া হোটেলের মালিক হাসান আলি আলাল বলেন, আনিকা খুব ভালো ফুড ব্লগার। আনিকার ব্লগের মাধ্যমে আমার হোটেলসহ বগুড়ার বিভিন্ন হোটেলের খাবার সম্পর্কে জানতে পারছে দেশ ও দেশের বাহিরের মানুষ।