হাসান সাদী,নাগরপুর(টাংগাইল)প্রতিনিধি:যমুনা নদীতে পানি বাড়ায় টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে।
আজ সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেল-দুয়াজানী কলেজ পাড়া, বাবনাপাড়া,ঘিওরকোল, নাগরপুর সরকারি কলেজ,উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স,নাগরপুর-চৌহালী সড়ক গুরুত্বপূর্ণ স্থান সহ সমগ্র নাগরপুর জুড়ে বন্যার পানিতে ছেড়ে গেছে ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষের পাশাপাশি গৃহপালিত পশু ও।
ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় গবাদি পশু নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে ছুটছেন শত শত মানুষ। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ সহায়তা দিলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।
বন্যার পানিতে কোন কোন এলাকার কাঁচা-পাকা রাস্তা ডুবে গেছে।
জানা গেছে, গত ৩ দিন ধরে যমুনায় পানি বাড়ায় ভারড়া, গয়হাটা, সলিমাবাদ ও দপ্তিয়র এলাকার হাজার হাজার মানুষের ঘরে পানি উঠেছে। বসতঘরের পাশাপাশি ডুবে গেছে টয়লেট, নলকূপ, রান্নাঘর, গোয়ালঘর। ফলে রান্না করা দুরূহ হয়ে পড়েছে। সংকট দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির। অনেকে ঘরের ভেতর মাচা পেতে হাঁস-মুরগি ও গবাদিপশু নিয়ে থাকছেন। আবার অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে ছুটছেন নিরাপদ স্থানে।
বন্যার পানির স্রোতে নাগরপুর উপজেলার সলিমাবাদ ইউনিয়নের তেবাড়িয়ায় বেইলী ব্রিজ ভেঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
এছাড়া, নাগরপুর শাহাজানী সড়কের বনগ্রামে পাকা রাস্তায় পানি উঠে পার্শ্ববর্তী চৌহালী উপজেলার সঙ্গে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসনের সূত্রে জানা গেছে, গত দুই দিনে জেলার নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
বন্যা পরিস্থিতি দেখতে উপজেলা প্রশাসনের টিম শনিবার সারা দিন উপজেলার বন্যা কবলিত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে পানিবন্দি মানুষদের নিকটবর্তী আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
নাগরপুর ইউনিয়নের দুয়াজানী কলেজ পাড়া ও ঘিওরকোল এলাকার একাধিক বাসিন্দা জানান, গত দুই দিনে প্রচুর পানি বেড়েছে।আজ ও পানি বাড়ছে।বাড়ির ওঠান সহ পানিতে ভর্তি। এলাকার অনেকেই ঘরবাড়ি ফেলে আশ্রয়কেন্দ্র ও নিরাপদ স্থানে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। এতো পানি গতবারেও হয়নি। গরু-ছাগল নিয়ে চরম দুর্ভোগে দিন কাটছে তাদের।
বাবনা পাড়ার এক ভায়াতে বলেন, 'পানি বাড়ায় আমাদের কাজ কাম বন্ধ হয়ে গেছে। এতোদিন করোনায় কাজ বন্ধ ছিল এখন আবার বন্যায় বন্ধ করে দিল।
আরেক মৎস্য ব্যবসায়ি ও দুয়াজানী কলেজ পাড়ার বাসিন্দা মো. সোহেল রানা বলেন, এবারের বন্যায় আমার ৩টি পুকুর ভেসে গেছে। এতে প্রায় ৮ লক্ষাধিক টাকার মাছ বের হয়ে গেছে।'
নার্সারির মালিক মো. তারা মিয়া বলেন, বন্যার পানি আমার নার্সারিতে ঢুকে পরায় আমার প্রায় ২ লক্ষাধিক টাকার বিভিন্ন প্রজাতির গাছ তলিয়ে গেছে। বন্যার পানি দীর্ঘস্থায়ী হলে গাছের চারাগুলো মরে যাবে।