সারা দেশের মত টাঙ্গাইলের নাগরপুরেও চলছে ঘুড়ি উৎসব। বসন্তের শেষে গ্রীষ্মের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দখিণা হাওয়ায় গ্রামের ঘুড়িপ্রেমীরা বিকেল হলেই রঙিন ঘুড়ি নিয়ে চলে যেতো ফসলের ক্ষেতের পাশে ও বড় বড় মাঠে,ছাদে। এখন অফুরন্ত অবসরে শুরু হয়েছে আবারো সেই ঘুড়ি উৎসব। উপজেলার প্রতিটা ইউনিয়নে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত আকাশে ঘুড়ির মেলা বসেছে।
সময়ের বিবর্তনে গ্রামে এমনকি শহর থেকেও হারিয়ে গেছে সেই ঘুড়ি উৎসব। আধুনিকতা আর যান্ত্রিকতার ছোঁয়ায় গ্রামীণ যুবক-কিশোরদের মাঝে এখন আর দেখা মেলেনা আগেরকার সেই ঘুড়ি উৎসব। সারাদিন মোবাইল ফোনে নেট চালু করে গেম,ফেজবুক নিয়ে বিজি থাকা। এখন অনেক বছর পর ফিরে আসা করোনা নামক মহামারী থেকে বাঁচতে সরকারী নির্দেশনার কারণে অনেকটাই ঘরবন্দি সবাই। যুবক-কিশোরদের পাশাপাশি বয়স্করাও রয়েছে হোম কোয়ারেন্টাইনে। তাই যান্ত্রিক জীবনকে ছুটি দিয়ে গ্রীষ্মের বিকেলকে উপভোগ করতে ছোট-বড় সবাই ঘুড়ি নিয়ে ছুটে চলেছেন গ্রামীণ ফসলের মাঠ কিংবা খোলা আকাশে। করোনায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বন্ধু হিসেবে তারা বেছে নিয়েছে বিভিন্ন রঙ বেরঙের রঙয়ের ঘুড়ি। এই সুবাদে করোনা আতঙ্কেরে প্রতিটা বিকেল একটু হলেও আনন্দে পার করছেন গ্রামীণ ঐতিহ্য ঘুড়িপ্রেমীরা। ফলে ঘুড়ি বানানোর ধুম পড়েছে। আকাশে চোখ মেললেই ঘুড়ির লড়াইয়ের দৃশ্য!
নাগরপুর উপজেলার সহবতপুরের ঘুড়িপ্রেমীক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, মেধাবী ছাত্রনেতা মো.তোফায়েল আহম্মেদ বলেন, স্কুল কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদের পড়াশোনার চাপ না থাকায় তারা বেশিরভাগই ঘুড়ি কিনে উড়িয়ে থাকে। গ্রামে ঘুড়ি তৈরিতে যুবকরা ব্যস্ত সময় পার করছে। তাদের কাছেই এখন মিলছে ঘুড়ি। সাধারণত যেকোনো ডিজাইনের একটি ঘুড়ির দাম ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত।
ঘুড়ি বানানো কারিগর শুকুর আলী জানান, প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে ঘুড়ি বিক্রি হচ্ছে। কারণ করোনাভাইরাসে সব স্কুল, কলেজ, প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সবাই অলসতা হয়ে পড়ছে। তাই বিকেলে একটু আনন্দ পেতেই সবাই ঘুড়ি উড়াতে মেতে উঠছে। বাশঁ, বেত এবং বিভিন্ন রঙের প্লাস্টিক-কাগজের মোড়কে ঘুড়ি বানানো হয়। আবার কেউ ঘুড়িতে লাইট লাগিয়ে নিয়ে রাতের আকাশে উড়িয়ে থাকে। ঘুড়ি বিক্রি করে সংসারের জন্য কিছু আয় হচ্ছে বলেও জানান।