শাহ আলম জাহাঙ্গীর,
ব্যুরো চিফ, কুমিল্লা-
মোহাম্মদ নৌশাদ আলী(৪৩)।কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামে যার জন্ম। যিনিজনকল্যাণমূলক কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে পছন্দ করেন মানবসেবাই যার একমাত্র লক্ষ্য।শৈশব লালিত সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে তরুণ বয়সেই পাড়ি দেন সুদূর অস্ট্রেলিয়া। সিডনীতে পরিবার -পরিজন, ব্যবসা বাণিজ্যে ব্যস্ত সময় কাটালেও দেশের প্রতি
মাটির টান বেশি।গভীর ভালোবাসায় সময় পেলেই চলে আসেন নিজ দেশে। মনোনিবেশ করেন সামাজিক, ধর্মীয় ও শিক্ষার কাজে। তিনি নিজ অর্থ ব্যয় করে কিছু প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। গড়ে তোলেন নৌশাদ আলী ফাউন্ডেশন। করোনার এই দুঃসময়ে প্রায় ৪৩৫ জন অসহায় দরিদ্রপরিবারের মাঝে সম্প্রতি ত্রাণ এবং নগদ অর্থ বিতরণ করেন। এতিমখানায়,মসজিদ,মাদ্রাসা,স্কুলেসাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন এই উদার তরুণ প্রবাসী নৌশাদ আলী।
যার জন্ম১৯৭৭ সালে।পিতা:মরহুম মোহাম্মদ চান মিয়া,দাদা:মরহুম বাদশা সেকান্দর আলী। তিনি রামচন্দ্রপুর আর,কে হাই স্কুল থেকে মানবিক বিভাগ এসএসসি,কুমিল্লা সরকারি কলেজ থেকে এইচ,এস,সি ও বি,এস,এস এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার ডিগ্রি অর্জন করেন। নৌশাদ আলীর স্রী আর্জিনা আক্তার ঢাকার ইডেন কলেজ থেকে রসায়ন বিজ্ঞানে অনার্স,মাস্টার্স।
দুই ছেলে দুই মেয়ে নৌশাদ আলীর। ওরা হলো-
১.সাবা নূরীয়া আলী(১০)
২.আলীফ ইসহাক আলী(৮ )
৩.হামীম সাইফ আলী(৪)
৪.ফাইজা নওরীন আলী(২)
৮ ভাই ৩ বোনের মধ্য সবার ছোট নৌশাদ আলী। তার ২ ভাই ও ১ চলে গেলেন না ফেরার দেশে ।
আলাপকালে নৌশাদ আলী বলেন,
"১৯৯২ সালে কলেজে ভর্তি হয়ে ছাএ রাজনীতি শুরু করি ১৯৯৫ সালে এলাকায় আর্দশ ও সুস্হ রাজনীতিতে নেতৃত্ব দেই এবং সমাজ কল্যাণমূলক কাজে নিজেকে জড়িত করে ৫০জন সদস্য নিয়ে হিলফুল ফুযুল সমাজ কল্যাণ পরিষদ নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করি,যার সরকারি রেজিঃ নং কু-৯০,এলাকা থেকে মাদক দ্রব্য নির্মূল করার লক্ষ্যে এলাকায় কাজ করি।বেওয়ারিশ লাশ দাফনে উদ্যোগ নেই।
কেরাত,গজল,নাত প্রতিযোগিতা আয়োজন করে পুরস্কার বিতরণ করি।গ্রামীণ হা ডু ডু খেলার আয়োজন করে পুরস্কার দেই,
অধ্যাপক আব্দুল মজিদ কলেজের প্রথম ব্যাচের'৯৭ সালের বোর্ডের মেধা তালিকা প্রায় ৭ জন কে কাচারী প্রাঙ্গনে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজন করে পুরস্কার দেই, রামচন্দ্রপুর ঐতিহাসিক সম্মেলনের স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব ভার গ্রহন করি,
নৌকা বাজারের ২১ তম মাহফিলের প্রতিষ্ঠা আমি নিজে ও মাওলানা মজিবুর রহমান(সোনা মিয়া মোল্লা মাদ্রাসা)মরহুম লিল মিয়া (কাঁচা বাজার) ও গিয়াস উদ্দিন।,
২০০১ সালে আমি যখন অস্ট্রেলিয়া চলে আসি ,আমাদের সংগঠন হিলফুল ফুযুল সমাজ কল্যাণ পরিষদ অকার্যকর হয়ে পড়ে,তখন থেকে আমি প্রতিষ্ঠা করি গোপনে (হাইড করে )পারিবারিক ও ব্যক্তিগত নৌশাদ আলীফাউন্ডেশন,শুরু হয় মানব কল্যাণের নবযাত্রা নতুন ধাপ,আমার বাবা বেঁচে থাকা অবস্হা আমাদের বাড়ি থেকে প্রথম ৪ শতক জায়গা দান করেন মসজিদের জন্য,আমার চাচা এ এলাকাবাসির সহযোগিতায় মসজিদটিতে নামাজ পড়া শুরু করে ,২৭ রমজানে রাতে আমার বাবা মসজিদের মুসল্লিদেরকে খাওয়ানের ব্যবস্হা করতেন,বাবা মারা যাওয়ার পর তা আর কেউ করেনি,আমার বাবার নীতিকে স্বরণ করে ২০০১ সাল হতে ২০১৯ সাল পর্যন্ত মসজিদের মুসল্লিদেরকে খাওয়ানের ব্যবস্হা করে যাচ্ছি ,২০০৪ সালের বন্যা কবলিত মানুয়ের পাশে থাকতে পেরে নিজে অনেক সৌভাগ্য মনে করেছিলাম,তারপর মসজিদে মিনার করা,বিভিন্ন জায়গা টিউব ওয়েল দেওয়া,মসজিদ,মাদ্রাসা,স্কুল,কবরস্থানে ও অসহায় মানুষদেরকে নগদ বড় অংকের অর্থ দেওয়া,নৌশাদ আলী হাইস্কুল (প্রস্তাবিত), প্রতিষ্ঠা ঢাকার নদীর দক্ষিনে বসুন্ধরা মাদ্রাসা ও মসজিদের জন্য জায়গা দান, অন কামিং কোম্পীনিগঞ্জ ইংলিশ ভার্সন স্কুল প্রতিষ্ঠার কাজ চলছে ও কলেজ করা ইত্যাদি আমার পরিকল্পনা আছে। তিনি বলেন "বাংলাদেশে আমার যা সম্পত্তি আছে বেশীর ভাগই ফাউন্ডেশনের কল্যাণে চলে যাবে,আমার বাচ্চারাদের বাংলাদেশের কোন সম্পত্তি তাদের দরকার নাই,তাদের জন্য বড় পুঁজি মানুষের মত মানুষ হওয়া,বিলাসিতা নয়,আমি আশা করি আমার মরার পর আমার বাচ্চারা আমার ফাউন্ডেশনের হাল ধরবে ইনশা আল্লাহ্"। নৌশাদ আলী র সামাজিক কর্মকান্ডে এলাকার উন্নয়ন হবে এমনটাই এলাকাবাসী আশাপোষন করেন।